Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪,

নীলফামারীতে ধর্ষণ না ষড়যন্ত্র: বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি ভুক্তভোগীদের

আল-আমিন, নীলফামারী

আল-আমিন, নীলফামারী

মে ১৭, ২০২২, ০৩:০৫ পিএম


নীলফামারীতে ধর্ষণ না ষড়যন্ত্র: বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি ভুক্তভোগীদের

নীলফামারী কিশোরগঞ্জে উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়ন কাালিকাপুর সুই পাড়ায় এলাকায় এক কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগে চারজনের নামে মামলা হয়েছে।

এঘটনায় পুলিশ একজনকে আটক করেছে। তবে ঘটনাটি পরিকল্পিত এবং মামলায় ফাসানো হয়েছে বলে দাবি করেন অভিযুক্ত মানিক ও জীবনের পরিবারের। প্রশাসনের কাছে দাবি ধর্ষণ না ষড়যন্ত্র প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের।

জানা গেছে, অভিযুক্তদের তিনজনই বিবাহিত। তার মধ্যে একই এলাকার জীবন ও মানিক ট্রলিচালক এবং রশিদুল তার স্ত্রী সায়তারাকে নিয়ে কাকিলাপুর দাখিল মাদরাসার সামনে ঝালমুড়ি বিক্রি করে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলেন, মেয়েটি নিখোজ হওয়ার পর মেয়ের বাবা থানায় একটি জিডি করে। তারপরে বাড়িওয়ালা মাহাবুল ও ইউপি সদস্য খায়রুলের সহযোগিতায় রংপুর থেকে গত রোববার ৮ মে মেয়ে টি কে তাদের নিজ জিম্মায় চেয়ারম্যান বাড়িতে নিয়ে আসে। ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় সালিষের মধ্যেমে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মাধ্যমে মেয়ের পরিবারের কাছে  হস্তান্তর করা হয়। সে সময় মেয়ে এবং তার পরিবার ধর্ষণের বিষয়ে কোন অভিযোগ করেনি। পবর্তীতে মেয়ের বাবা কেন থানায় মামলা করল তা আমরা বলতে পাব না। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দারি করে স্থানীয়রা।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরনে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের কালিকাপুর সুরিপাড়া গ্রামের ওই তরুণীকে পার্শ্ববর্তী এলাকায় গত ( ২৩ এপ্রিল) খালার বাড়িতে ইফতার শেষে ফেরার পথে একটি দোকানের সামনে থেকে স্থানীয় যুবক জীবন, মানিক ও রশিদুল তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে চড়াইখোলা এলাকায় প্রথমে ভুট্টাক্ষেতে পালাক্রমে ধর্ষণের পর একটি গভীর নলকূপের ঘরে ৫ দিন আটকে রেখে আবারও পালাক্রমে ধর্ষণ করে তারা। তারপর ২৭ এপ্রিল আরেক জনের কাছে টাকার বিনিময়ে তুলে দেয় অভিযুক্তরা। মেয়ে নিখোজের পর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছিলেন তরুণীর বাবা।

এ ঘটনার বিষয়টি জানতে কিশোরী ও পরিবারের সাথে কথা বলার জন্য তার বাড়িতে গেলে কেউকে পাওয়া যায়নি। জানা যায়, মেয়েটি বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাস্পাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। এলাকাবাসিদের কাছে ধর্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিবেশিরা অনেক কথা বলতে রাজি হয় নাই। 

নাম প্রকাশের অনাইচ্ছুক অনেক জনে বলে, ২৩ এপ্রিল যে ঘটনা টি ঘটেছে আমরা কিছু জানি বা শুনি নাই। যখন টিভিতে নিউজ দেখছি তখন আমরা শুনছি। এর আগে আমরা ধর্ষণের বিষয় কিছু জানি না শুনি নাই।

মানিক হোসেনের মা রানী বেগম ছেলেকে নির্দোষ দাবী করে বলেন, আমার ছেলে কাজ করি খায়। স্কুলে এক সাথে পরছিল। হয়ত পরিচয় ছিল। ছেলের বিয়েও হয়েছে। ঐ মেয়েটি অন্য স্থানে বিয়ে হয়েছিল। কয়দিন আগে শুনি মেয়েটি নিখোজ। কিন্তু তখন তো আমার ছেলে বাড়িতে ছিল। সবাই দেখছে। পরে মেম্বার চেয়ারম্যান কোথায় থাকি মেয়েটা আনি ইউনিয়ন পরিষদে সালিশের মাধ্যমে তার বাবার কাছে তুলে দিলো। সালিশে মানিক ও জীবন জরিত নেই বলে জানিয়েছে মেয়েটি। আমার ছেলেকে ফাসানো হয়েছে বলে দাবী করেন তিনি। একই দাবি করে আপর আসামি স্বজনদেন। তার পরিবার প্রশাসনের কাছে দাবি করে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উৎঘাটনের আহবান জানান।

স্থানীয় বাদিন্দা মেসবাউল হকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন ইউনিয়ন পরিষদের  সালিশে ওই কিশোরী একা ঢাকায় গেছিল, কোন ছেলে সাথে ছিলনা বলেছে আমরা সবাই শুনেছি।

আনোয়ার বলেন, গত ২৩ এপ্রিল সারাদিন আমার সাথে মানিক ও জীবন ট্রলিতে মাটির কাজ করছে এবং রাত ৯ টা পর্যন্ত টাকার জন্য আমার সাথে ছিল সালটির হাটে তারা কিভাবে ধর্ষণ করে। একই কথা বলে ট্রলির মালিক আহাদ আলী।

ইউপি সদস্য খাইরুল ইসলাম বলেন, ওই মেয়ে হারিয়ে যাওয়ার পর তার বাবা থানায় অভিযোগ করে। থানার এসআই আমাকে ডেকে মেয়েটাকে উদ্ধারের বিষয় কথা বলে। পরে মেয়েটি নিজেই আমাকে কল করে বলে আমি ঢাকায় আছি। তবে পরে বলে আমি রংপুর শুটিবাড়িতে আছি। সেখান থেকে মাহাবুল আমি ও আরো কয়েকজন মিলে তাকে চেয়ারম্যানের বাড়িতে নিয়ে আসি। ইউনিয়ন পরিষদের সালিষের মাধ্যমে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ধর্ষনের কোন অভিযোগ তাদের ছিল না।

কালিকাপুর পুটিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সায়েম চৌধুরী বলেন, কয়েকদিন আগে মেয়েটা  নিখোজ হয়। থানায় অভিযোগও ছিল। পরবর্তীতে মেয়েটাকে রংপুরে পাওয়া যায়। ইউপি মেম্বারসহ কয়কজন মিলে তাকে উদ্ধার করে আমার বাড়িতে নিয়ে আসে। সেখান থেকে আমরা পরিষদে সালিশ করে, কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ অনুমতি ক্রমে মেয়ের বাবার হাতে তুলে দেই। মেয়েটি বলছিল একা ঢাকায়  গিয়েছিল। ধর্ষণের বিষয়ে কোন কিছুই অভিযোগ মেয়েটি ও তার পরিবার ছিল না। পরবর্তীতে কি ঘটনা ঘটছে আমি জানি না। না জেনে মন্তব্যও করা যাবে না, তদন্ত করলে সঠিক জিনিসটা বের হবে আশা করি।

জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ রাজিব কুমার দাস বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। একজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। কে দোষী আর নির্দোষ তদন্ত শেষে জানানো যাবে।

আমারসংবাদ/কেএস 

Link copied!