Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪,

তালতলীতে শুটকি উৎপাদনের কাজ শুরু

বরগুনা প্রতিনিধি

বরগুনা প্রতিনিধি

নভেম্বর ১২, ২০২২, ০৬:০২ পিএম


তালতলীতে শুটকি উৎপাদনের কাজ শুরু

বরগুনার তালতলীতে সাগর থেকে নৌকায় করে কেউ নিয়ে আসছে মাছ, কেউবা ঝুড়িতে করে মাছ নিয়ে আসছে বালুর চরে। আবার কেউ কেউ পলিথিন কিংবা তেরপালে ছিটিয়ে রোদে শুকাচ্ছে সেই মাছ। এভাবে চলছে বরগুনার তালতলী উপকূলের ডিসি পয়েন্ট সংলগ্ন এলাকায় গড়ে ওঠা বিষমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন শুটকি পল্লী। এভাবে উপকূলের অর্ধশত গ্রামের জেলেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সাধারণত বিভিন্ন সময় ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস ও বর্ষা মৌসুমে জোয়ার ভাটার ক্ষত এই গ্রামগুলোর এখনো মুছে যায়নি। এমনকি বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ের আঘাতে বেড়িবাঁধ ভাসিয়ে বাড়ি-ঘরও বিলীন হয়ে পড়ে। সর্বহারা উপকূলের এসব বাসিন্দারা আবার ও স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে। চেষ্টা করছে জীবন পরিবর্তনের। এখন তারা মাছ শিকার করে, সেই মাছ শুকিয়ে ও বিক্রি করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন। চেষ্টা করছেন ঘুরে দাঁড়ানোর। নভেম্বরের শুরুতে অবরোধ শেষে মাছ শিকার ও শুকানোর কাজ শুরু হয়েছে। আর তা চলবে আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত। এ কাজে জেলেদের পাশাপাশি উপকূলের শিশু ও মহিলারাও কাজ করে থাকেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাগরে পাতানো (ফেলা) ভাসমান ও টং জালে আহরিত সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রজাতির মাছ জেলেদের নৌকা থেকে উঠানো হচ্ছে। সেখানে জেলেদের কাছ থেকে পছন্দের মাছগুলো কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এসব মাছ প্রথমে মহলে সংরক্ষণ করা হয়। পরে পরিশুদ্ধ করার পর এসব কাঁচা মাছে আংশিক লবণ মেশানো হয়। তারপর গিট তৈরি করে এগুলো শুকানোর জন্য ওই মহলের একাধিক মাচায় কিংবা বাঁশের ঘুটি দ্বারা টাঙানো (ঝুলানো) হয়। চিংড়ি ও ফাইস্যা, বৈরাগী মাছগুলো বালু কিংবা মাটিতে বিছানো পলিথিনে ছিটিয়ে শুকানো হয়।

উৎপাদিত শুটকিগুলোর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হচ্ছে লইট্যা, ছুরি, ফাইস্যা, চইক্যা, পোয়া ও চিংড়িসহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ। এখন পর্যন্ত ৩-৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে শুটকি শুকানোর কাজ। এতে পুরুষের পাশাপাশি নারী ও শিশু শ্রমিকেরাও কাজ করছেন।

স্থানীয় জেলেরা বলেন, সমুদ্র থেকে মাছ ধরে বড় কিংবা মাঝারি আকারের নৌকায় করে উপকূলে নিয়ে আসি। তার মধ্যে চিংড়ি, লটিয়্যা, ছুরি ও কাটামাছ সহ বিভিন্ন জাতের মাছ এক সঙ্গে বিক্রি করি। এসব মাছ শুকিয়ে ব্যবসায়ীরা কেজি প্রতি ৩-৪ শত টাকা লাভ করে।

তালতলী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম জানান, সোনাকাটা শুটকি পল্লী ছাড়াও সোনাকাটার বিভিন্ন এলাকায় শুটকির ব্যবসায় স্থানীয় লোকেরা অনেকটা অভাব ঘুচিয়ে অর্থ সাবলম্ভি হচ্ছে। তালতলীতে বিষমুক্ত শুটকি উৎপাদনের লক্ষ্যে স্থানীয় জেলেদের মাঝে সচেতনতামূলক পরামর্শ দেয়া আছে। ডিডিটি পাউডার-কীটনাশক না মিশানোর জন্য বলা আছে। যাতে শুটকির আসল স্বাদ নষ্ট না হয়।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এসএম সাদিক তানভীর বলেন, তালতলী জেলে নির্ভর উপজেলা এ উপজেলার অধিকাংশ মানুষ জেলে। এখানে প্রতিবছর শুটকি উৎপাদন করা হয়। যদি কীটনাশক ব্যতীত বিশুদ্ধ শুটকি উৎপাদিত করা হয় এবং যদি ভাল কোনো উদ্যোক্তা থাকে সরকারের সহায়তা চায় তবে আমরা তার জন্য সরকারি ভাবে ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা করব।

এসএম

Link copied!