নাজিরপুর (পিরোজপুর) প্রতিনিধি:
জুন ২৯, ২০২৫, ১১:০৯ এএম
বর্ষা শুরু হতেই খাল-বিল, নদ-নদীতে নামে দেশি মাছের ঢল। আর এই মাছ ধরতে ঘরে ঘরে তৈরি হচ্ছে শত শত ‘চাই’। ফলে জমে উঠেছে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠী ও দিঘিরজান বাজারের মাছ ধরার যন্ত্রের হাট।
প্রতি রবিবার ও বুধবার শ্রীরামকাঠী এবং মঙ্গলবার ও শনিবার দিঘিরজান বাজারে বসে এসব যন্ত্রপাতির জমজমাট বাজার। একেক হাটে হাজার হাজার ‘চাই’ বিক্রি হয় খুচরা ও পাইকারি দামে।
চাই তৈরিতে ব্যবহৃত হয় তল্লা ও কালিজিরা বাঁশ। একটি বাঁশ দিয়ে বানানো যায় সাত থেকে আটটি চাই। তবে একজন কারিগর দিনে সর্বোচ্চ ছয়টি চাই তৈরি করতে পারেন। এক কুড়ি চাই বিক্রি হয় ৩,০০০ থেকে ৪,০০০ টাকা দরে। আর একেকটি চাইয়ের দাম ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা।
এই হাট ঘিরে নাজিরপুরের অসংখ্য পরিবার বর্ষা মৌসুমজুড়ে ব্যস্ত থাকেন চাই ও দুয়ারি তৈরির কাজে। এদেরই একজন কারিগর সুদেব ঘরামী বলেন, ‘চাই বানাতে খরচ বেশি, কষ্টও কম না। দাম যা পাই, তা দিয়ে তেমন লাভ হয় না।’
শিল্পটি এখন হারিয়ে যাওয়ার পথে। নদী-খাল শুকিয়ে যাওয়া, মাছ শিকারের চাহিদা কমে যাওয়া, এবং উচ্চমূল্যের কাঁচামালের কারণে অনেকেই পেশা ছেড়ে দিচ্ছেন।
তবে চাই নির্মাণশিল্পে ঋণ সহায়তা পেলে আবার প্রাণ ফিরে পেতে পারে এ লোকজ শিল্প। কারিগরদের দাবি, সরকার স্বল্প সুদে ঋণ ও প্রশিক্ষণ দিলে এ শিল্পে ফিরতে পারে গতি।
এদিকে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, মে থেকে জুলাই পর্যন্ত মাছের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় এই সময়ে মা মাছ ধরা নিষিদ্ধ। তাই জেলেদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। নিষিদ্ধ যন্ত্র ব্যবহারে ভ্রাম্যমাণ আদালতও পরিচালিত হচ্ছে প্রশাসনের সহযোগিতায়।
বিআরইউ