Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪,

প্রাইভেটের টাকা না দেয়ায় পরীক্ষা কেন্দ্রে দুই ছাত্রীকে মারধর

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

নভেম্বর ২৯, ২০২২, ০৬:৪২ পিএম


প্রাইভেটের টাকা না দেয়ায় পরীক্ষা কেন্দ্রে দুই ছাত্রীকে মারধর

লক্ষ্মীপুরে দারুলউলুম কামিল (এম.এ) মাদ্রাসায় বার্ষিক পরীক্ষা চলাকালীন ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী ফাতেমা জোহরা মীম ও ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী নুহাকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসাটির সহকারী (বাংলা) শিক্ষক সালমা আক্তারের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে সুবিচার পেতে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই শিক্ষার্থীর মা মর্জিনা বেগম।

এর আগে সকালে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভেতরে দায়িত্বরত অবস্থায় শিক্ষক সালমা আক্তার ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী মীম ও ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী নূহাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। একপর্যায়ে খামছি দিয়ে ছাত্রী মীমের মুখ-মন্ডলে মারাত্মকভাবে জখম করে। পরে মীম ও নূহাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।

ভিকটিম শিক্ষার্থী ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী মীম বাংলা শিক্ষক সালমার কাছে প্রাইভেট পড়তো। ১০দিন প্রাইভেট পড়ার পর হঠাৎ মীম প্রাইভেট পড়া বন্ধ করে দেয়। তখন মীম তার ১০দিনের প্রাইভেট পড়ার টাকা দিতে চাইলেও শিক্ষক সালমা সেই টাকা নেননি।

(আজ) মীমের হাদিস পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার হলের দায়িত্বে পড়েন, সালমা আক্তার ও শিক্ষক জলিলের। দায়িত্বরত অবস্থায় সালমা ও জলিল শিক্ষকের মধ্যে যে কোন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। হঠাৎ ছাত্রী মীমের দিকে দৃষ্টি পড়ে সালমা শিক্ষকের। এসময় সালমা শিক্ষক মীমের ওপর রাগান্বিত হয়ে বলে তুই তো আমার টাকা দিলি না। এ বলে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে মীমকে একাধিক চড়থাপ্পড় মারতে থাকে তিনি। মীমের পাশে বসা নুহাকেও মারধর করা হয়।

পরে খবর পেয়ে তাদের স্বজনরা এসে তাদেরকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

কান্নাজড়িত কন্ঠে শিক্ষার্থী মীম মাদ্রাসার মাঠে চিৎকার করে বলতে থাকে, আমার কি অপরাধ? সবার সামনে সালমা ম্যাডাম আমাকে অন্যায়ভাবে মারছে। 
আমার মুখের হিজাব টানাহেঁচড়া করে খুলে ফেলছে। আমার তো কোন দোষ ছিল না।

অভিযুক্ত শিক্ষক সালমা আক্তার বলেন, আমার কাছে মীম ৫ মাস প্রাইভেট পড়েছে। হঠাৎ সেই আর প্রাইভেটে আসছে না, আমার টাকাও দিচ্ছে না।

মীমের মা মর্জিনা বেগম জানান, আমি এর সঠিক বিচার না পেলে মামলা করবো।

লক্ষ্মীপুর দারুলউলুম কামিল (এম.এ) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নেছার উদ্দিন আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, সত্যিই আমরা লজ্জিত। একজন শিক্ষক এভাবে পরীক্ষা কেন্দ্রে রাগান্বিত হয়ে ছাত্রীদের মারধর করবে কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। আমাদের মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে জরুরি মিটিং করে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ জানান, ঘটনাটি খুব দুঃখজনক। বিস্তারিত জেনে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এআই

Link copied!