Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪,

দৈনিক মজুরিতে চলে দাপ্তরিক ও গবেষণা কার্যক্রম

সাভারের বিএলআরআইতে ৩৫ শতাংশ পদ শূন্য

মোঃ শরিফ শেখ, সাভার

মোঃ শরিফ শেখ, সাভার

ডিসেম্বর ৫, ২০২২, ০৩:১৭ পিএম


সাভারের বিএলআরআইতে ৩৫ শতাংশ পদ শূন্য

অনুমোদিত জনবলের চেয়ে ৩৫ শতাংশ কম কর্মী নিয়ে চলছে বাংলাদেশ প্রানিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই)। ঘাটতি পোষাতে দীর্ঘদিন ধরে দৈনিক মজুরি ও আউটসোর্সিং ভিত্তিতে লোক নিয়োগ দিয়ে কাজ চালিয়ে আসছে গবেষণা ইনস্টিটিউটটি। আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে কর্মরত কর্মীরা ঠিকাদারের মাধ্যমে নিয়োগ প্রাপ্ত হওয়ায় রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় বাড়ছে। সেই সাথে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কর্মীর সংকটও গবেষণা কার্যক্রমে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

বিএলআরআই সূত্র থেকে জানা যায়, অনুমোদিত পদের সংখ্যা ৩৭৭ টির মধ্যে কর্মরত ২৪৫ টি এবং শূন্য পদের সংখ্যা ১৩২টি। ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কর্মরত জনবলের একটি বড় অংশ বিশেষ করে ১১-২০ গ্রেড ভূক্ত কর্মচারীরা পদোন্নতি ছাড়াই একই পদে কর্মরত আছেন দীর্ঘদিন ধরে। এমনকি হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার মত গুরুত্বপূর্ণ পদটিও কোন এক অজানা কারণে গত পাঁচ বছর যাবৎ শূন্য রয়েছে। যেখানে মোঃ এনামুল হক খন্দকার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

উল্লেখ্য যে, ১৩২ টি পদ শূন্য থাকলেও রাজস্ব খাত ভুক্ত আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে ৪৯ জন এবং দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে ১৩৬ জন বিভিন্ন বিভাগ ও শাখায় কর্মরত আছেন।এছাড়াও, বিএলআরআইতে চলমান চারটি প্রকল্পের মধ্যে ব্ল্যাকবেঙ্গল ছাগলের জাত সংরক্ষণ ও উন্নয়ন গবেষণা প্রকল্পে ২৮ জন, পোল্ট্রি গবেষণা ও উন্নয়ন জোরদারকরণ প্রকল্পে ৪৯ জন, জুনোসিস এবং আন্তঃসীমান্তীয় প্রাণিরোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ গবেষণা প্রকল্পে ১২ জন এবং মহিষ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পে ৩৮ জন সহ সর্বমোট ১২৭ জন কর্মরত আছেন। যাদের সকলে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ প্রাপ্ত এবং প্রকল্প সমাপনান্তে চলে যেতে হয় শূন্য হাতে। এমনকি প্রকল্পে কাজ করার মাধ্যমে এসকল ব্যক্তিবর্গ যথেষ্ট অভিজ্ঞতা অর্জন ও সরকারী চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা অতিক্রম করলেও ইনস্টিটিউটের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগও পায় না। আবার ইনস্টিটিউটে নতুন প্রকল্প অনুমোদন হলেও তাদের স্থান হয়না কোথাও। এমনকি কর্মরত প্রকল্পের পরবর্তী ফেজ অনুমোদন হলে উক্ত প্রকল্পেও তাদের অভিজ্ঞতার মূল্যায়ন না করে নিয়োগ দেয়া হয় নতুন ও অনভিজ্ঞ ব্যক্তিদের।

আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে কর্মরত জনাব সাইদুর রহমান বলেন, "আমি বিগত ২৪ বছর ধরে কর্মরত আছি। দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে কাজ করার পর ২০১২ সাল থেকে আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ প্রাপ্ত হই। বিগত সময়ে বছরে তিনটা উৎসব ভাতা থাকলেও এখন কিছুই পাইনা। ঈদ বা  পুজোর কোন ছুটি নাই এমনকি সাপ্তাহিক ছুটিও পাই অনিয়মিত। মাত্র ৫৩৪ টাকা দৈনিক হাজিরায় আমাদের জীবন-যৌবন পার করে দিলাম এখানে। বেতনও পাই মাসের ১৫ তারিখের পর। আমরা যদি কর্তৃপক্ষকে এবিষয়ে কিছু জিজ্ঞেস করি, স্যাররা বলেন তোমরা কনট্রাক্টরের লোক অথচ আমরা কনট্রাকটরকে চিনিই না। আমাদের না আছে কোন পেনশন না আছে কোন প্রভিডেন্ট ফান্ড। জীবনের অধিকাংশ সময় বিএলআরআইতে কাটিয়ে চাকরি শেষে শূন্য হাতে ঘরে ফিরে যেতে হয় অথচ নিয়োগের সময় বলেছিলো সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা পাবো"।

এ বিষয়ে কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি জনাব মোঃ মিজানুর রহমান এর মতামত চাইলে তিনি কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

এছাড়াও, বিধি বহির্ভূত ভাবে আউটসোর্সিং এ্যানিমেল এ্যাটেনডেন্ট ও পোল্ট্রি ওয়ার্কার এবং মাস্টাররোল ভিত্তিতে নিয়োগকৃত ব্যক্তি দ্বারা করানো হচ্ছে ড্রাইভিং ইলেকট্রিশিয়ান প্লাম্বার ও ল্যাব এটেনডেন্টের মত টেকনিক্যাল কাজগুলো।  

ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন "বেশ কিছু পদে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। আর কিছু পদের শর্ত পূরণ না হওয়ায় পদোন্নতি দেয়া যাচ্ছে না। এছাড়াও, দুই ধাপে মোট ৪৯ টি পদের নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বা ফার্মের মাধ্যমে আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ পাওয়ায় এদের সকল সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয় কোম্পানী আইন মোতাবেক। আউট সোর্সিং ও মাষ্টাররোল পদ্ধতিতে নিয়োগ প্রাপ্ত ব্যক্তিদের চাকরিতে স্থায়ী বা নিয়মিত করার কোন সুযোগ নেই"।

এআই

Link copied!