Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪,

জলাশয় পানিশূন্য হওয়ায় বিপাকে মৎস্যজীবীরা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

মে ৪, ২০২৩, ০২:০১ পিএম


জলাশয় পানিশূন্য হওয়ায় বিপাকে মৎস্যজীবীরা

ঠাকুরগাঁওয়ে তীব্র গরম ও অনাবৃষ্টিতে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। ফলে শুকিয়ে গেছে জেলার বেশিরভাগ নদী-নালা, খাল-বিল ও পুকুর। একই সঙ্গে পানির অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে মাছের হ্যাচারি। ফলে মৎস্য উৎপাদন অনিশ্চয়তায় মুখে রয়েছে। অধিকাংশ নদী-নালা, খাল-বিল ও পুকুর শুকিয়ে যাওয়ায় মাছ উৎপাদন সংকটের মুখে।

বৃহস্পতিবার (৪ মে) ঠাকুরগাঁওয়ে সরেজমিনে দেখা গেছে, চারদিকে পানির জন্য হাহাকার। নদী-নালায় পানি নেই। শুকিয়ে গেছে খাল-বিল, দীঘি ও পুকুর। শুষ্ক-রুক্ষ পুরো এলাকার প্রাণ-প্রকৃতি। জলাশয় পানিশূন্য হওয়ায় বিপাকে ঠাকুরগাঁওয়ের মৎস্যজীবীরা। মাছ না পাওয়ায় বেশিরভাগই এখন বেকার।

ডাক পেলেই মাছ ধরার জাল নিয়ে অন্যান্য জেলেদের সঙ্গে নিয়মিত ছুটে চলেন ঠাকুরগাঁও সদরের পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার সামসুল ইসলাম। পুকুরে জাল টানা আয়ে সামসুলের মতো অনেক জেলের সংসার ভালোভাবেই চলতো। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

প্রচন্ড তাপদাহ আর আবহাওয়া পরিবর্তনে দিন দিন পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন মাছ চাষি, জেলেসহ অন্যান্য শ্রমিকরা। উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় মৎস্য হ্যাচারিও বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

জেলে মুজিবুর রহমান বলেন, আবহাওয়ার জন্য পানির স্তর একেবারে নিচে নেমে গেছে। এর জন্য আমরা জেলেরা মাছ ধরতে পারছি না। এদিকে নদী নালা, খাল-বিলের পানি যেমন শুকিয়ে যাচ্ছে, তেমনি শুকিয়ে যাচ্ছে পুকুরের পানিও। শ্যালো মেশিনের পানি দিয়েও ধরে রাখা যাচ্ছে না।

এক মৎস্য হ্যাচারির মালিক বলেন, পুকুর শুকিয়ে যাওয়ার কারণে মাছ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এতে বাধ্য হয়ে হ্যাচারি বন্ধ করে দিচ্ছি। শ্যালো মেশিন দিয়েও কাজ হচ্ছে না।

ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার স্বপ্নীল মৎস্য খামারের স্বত্বাধিকারী খয়রুল বাসার বলেন, পুকুরের পানি ধরে রাখতে প্রতিদিন শ্যালো দিয়ে পানি দিতে হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ বাড়ছে। ফলে প্রতিবছরই লোকসান গুনতে হচ্ছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না পেলে এক সময় গিয়ে মাছ চাষ বন্ধ করে দিতে হবে। এ অবস্থায় অতিরিক্ত অর্থ গুণতে হচ্ছে মৎস্যচাষিদের।

সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পুকুর খননের পাশাপাশি স্বল্প সুদে ঋণ পেলে মাছ চাষ ধরে রাখা সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, এভাবে চলতে থাকলে মাছের সংকট দেখা দেবে। পাশাপাশি বেকার হয়ে পড়বে মাছ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িতরা। কাজেই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা জরুরি হয়ে পড়েছে। তা না হলে একে একে সবাই অচিরেই মাছ চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।

অবশ্য মৎস্য শিল্পের বিপর্যয় রোধে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন ঠাকুরগাঁও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা খালেদুজ্জামান। তিনি বলেছেন, এর আগে সরকার পুকুর খনন প্রকল্প দিয়েছিলেন। এবারও সে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। মাছ চাষিদের সহয়তায় দ্রুত প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। সেটি বাস্তবায়ন হলেই পুকুর খননের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেলা মৎস্য অফিসের তথ্যমতে, ঠাকুরগাঁওয়ে ১৩টি নদী ও প্রায় ২০ হাজার দীঘি-পুকুর-জলাশয় রয়েছে। এর বিপরীতে ১৩টি মৎস্য হ্যাচারি থাকলেও উৎপাদন ব্যহত হওয়ায় ক্রমান্বয়ে বন্ধ হয়ে গেছে পাঁচটি।

এইচআর
 

Link copied!