Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪,

সুপারি চুরি থেকে যেভাবে গড়ে উঠলো গরু চোরচক্রের সিন্ডিকেট

নীলফামারী প্রতিনিধি

নীলফামারী প্রতিনিধি

সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩, ০৬:০১ পিএম


সুপারি চুরি থেকে যেভাবে গড়ে উঠলো গরু চোরচক্রের সিন্ডিকেট

নীলফামারীতে দেড় বছরে ৪৮ গরু চুরি, গ্রেপ্তার ৫

নীলফামারীর জলঢাকায় গত দেড় বছরে ৪৮টি গরু চুরি হয়েছে। চুরির ঘটনায় সংঘবদ্ধ চোরচক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে জলঢাকা থানা পুলিশ। বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য জানান নীলফামারীর পুলিশ সুপার গোলাম সবুর।

পুলিশ সুপার বলেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে জলঢাকা থানার বালাগ্রাম ইউনিয়নের শালনগ্রাম বটতলী এলাকার জনৈক কমলকান্তী রায়ের বাড়ি থেকে ৬টি গরু চুরি হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর জলঢাকা থানা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গরু চোরচক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- জলঢাকা উপজেলার তরিকুল ইসলাম(২৩), মো. ছাদেকুল ইসলাম(২৩), মো. উমর ফারুক(২৫), আব্দুর রাজ্জাক(২৫) ও শ্রী শংকর চন্দ্র রায়(১৯)।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করেছে।

আসামি তরিকুল, শংকর এবং ছাদেকুল জানায়, তারা প্রথমে জলঢাকা থানা এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তির সুপারি বাগান থেকে সুপারি চুরি করে জলঢাকা বাজারে এক ব্যক্তির দোকানে বিক্রি করতো। বাজারে তাদের সঙ্গে আসামি উমর ফারুক, রাজ্জাকের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে তারা একত্রিত হয়ে জলঢাকা থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে দিনের বেলা ছাগল চুরি করে আসামি তরিকুলের ভ্যানে করে বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করতো। এভাবে তারা প্রায় ৪০ থেকে ৫০টি ছাগল চুরি করে। ধীরে ধীরে তাদের সঙ্গে আরও কিছু চোরের পরিচয় হয় এবং তারা গরু চুরি করার পরিকল্পনা করে।

আসামি শংকরের মামার বাড়ি বালাগ্রাম ইউনিয়নের শালনগ্রাম এলাকায় হওয়ায় সে সহযোগী আসামি ছাদেকুলসহ ভ্যানে করে তার মামার বাড়ি থেকে আশপাশ এলাকায় কোন বাড়িতে গরু আছে এটির সন্ধান করতো এবং সহযোগী অন্যান্য আসামিসহ সেই বাড়িগুলোতে গরু চুরির পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনা মাফিক  তারা গত দেড় বছরে সাইডনালা, শালনগ্রাম, বারোগোপাল এলাকায় মোট ৪৮টি গরু চুরি করে। আসামি তরিকুল, শংকর, ছাদেকুল, রাজ্জাক জানায়, তাদের আরও কয়েকজন সহযোগীসহ তারা বিভিন্ন বাড়ি থেকে গরু বাহির করে নির্জনস্থানে অপেক্ষা করতো। আসামি তরিকুল মোবাইল ফোনে আসামি উমর ফারুককে কল দিয়ে ডাকলে উমর ফারুক মিনি ট্রাক নিয়া কাছাকাছি রাস্তায় আসা মাত্রই তারা সকলে মিলে চোরাই গরুগুলো ট্রাকে তুলে দিতো।

এভাবে তারা বিভিন্ন রোড দিয়ে চোরাই গরু দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আসছিল। আসামি তরিকুল, শংকর, ছাদেকুলকে  ইতোমধ্যে বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় ফৌ. কা. বি. আইনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেয়। আসামিদের দেয়া তথ্য-উপাত্ত যাচাই বাছাই পূর্বক গরু ও গরু পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাক উদ্ধারসহ অন্যান্য আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার অব্যহত আছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মো. আমিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস্) মো. সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নীলফামারী-জলঢাকা সার্কেল মো. মোস্তফা মঞ্জুর, ডিআইও ওয়ান (ভারপ্রাপ্ত) আকরাম আলী, জলঢাকা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মুক্তারুল আলম, জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আল-আমিনসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রোনিক মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীরা।

এআরএস

Link copied!