Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪,

চৌগাছায় মিষ্টি কুমড়া চাষ করে লাভবান কৃষক সিরাজুল

এম.এ. মান্নান, চৌগাছা (যশোর)

এম.এ. মান্নান, চৌগাছা (যশোর)

অক্টোবর ১৯, ২০২৩, ০৫:৫৯ পিএম


চৌগাছায় মিষ্টি কুমড়া চাষ করে লাভবান কৃষক সিরাজুল

যশোরের চৌগাছায় হাইব্রিড জাতের মিষ্টি কুমড়া চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কৃষক সিরাজুল ইসলাম। ভালো দাম পেয়ে বেজায় খুশি তিনি। ৫ বিঘা জমিতে পিয়ারা আবাদের মধ্যে সাথী ফসল হিসেবে খরিপ-২ হাইব্রিড সুইটি জাতের মিষ্টি কুমড়া চাষ করেন তিনি।

কৃষক সিরাজুল উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের স্বরুপপুর গ্রামের আবেদ আলীর ছেলে। তিনি পেশায় মুলত রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। অল্প আয়ে সংসারের হাল যেন আর চল না। তাই বাড়তি আয় করতেই ধরতে রাজমিস্ত্রীর কাগের পাশা-পাশি কৃষিতে মনোযোগ দেন। তিনি এলাকায় ফলের চাষ দেখে ফল চাষে মনোযোগ দেন। তিনি গত বছর এক বিঘা জমিতে পেঁয়ারা আবাদের পাশা-পাশি সাথী ফসল হিসেবে হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করেন। এ আবাদে তিনি লাভবান হন। এ বছর ৫ বিঘা জমিতে পিয়ারা আবাদের মধ্যে সাথী ফসল হিসেবে খরিপ-২ হাইব্রিড সুইটি জাতের মিষ্টি কুমড়া চাষ করেন।

কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ বছর ৫ বিঘা জমিতে পিয়ারা আবাদের মধ্যে সাথী ফসল হিসেবে খরিপ-২ হাইব্রিড সুইটি জাতের মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছি। এতে খরচ হয়েছে বীজ ৫ হাজার টাকা, বীজতলা (খোলা) প্রস্তুত বাবদ ১ হাজার ২শ টাকা, লাগানো বাবদ ১ হাজার ৬শ টাকা, সার ওষুধ ও পরিচর্যা বাবদ ৪ হাজার টাকা খরচ হয়। এ ৫ বিঘা জমি থেকে ইইত মধ্যে ৪ বারে মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করেছি প্রায় ৬০ হাজার টাকার। কম খরচে বেশী লাভ। এ মৌসুমে খরচ বাদ দিয়ে লাভ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। এ জমিতেই আবাদ রয়েছে পিয়ারা। পিয়ারার চারার বয়স ৪ মাস। গতানুগতিক চাষের বিকল্প হিসেবে তিনি পিয়ারা বাগানে মিষ্টি কুমড়া চাষের চিন্তা করেন বলে জানান।

মিষ্টি কুমড়া ক্ষেতে বসে সিরাজুল ইসলাম জানান, আমি পেশায় একজন রাজ মিস্ত্রী প্রতিবেশীদের দেখে জমি বর্গা নিয়ে ফল চাষের প্রতি আকৃষ্ট হন তিনি। গতানুগতিক ধারা পরিবর্তনের আগ্রহ থেকেই এক ফসলের মধ্যে সাথী ফসলের চাষ শুরু করেন। এখন তার ১৩ বিঘা জমিতে বিভিন্ন ফলের বাগান রয়েছে।

তিনি জানান,পাশের গ্রামের কৃষকদের এমন চাষ দেখে আকৃষ্ট হওয়ার পরে ২০২২ সালের মার্চ মাসে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার আলামপুর গ্রামের আব্দুর রশিদ মিয়ার নিকট থেকে হাইব্রিড চায়না জাতের মিষ্টি কুমড়ার বীজ সংগ্রহ করি। পরে তা পিয়ারা বাগানের জমিতে রোপন করি। কিছু দিনের মধ্যেই গাছে ফুল-জালি  আসতে শুরু করে। মিষ্টি কুমড়া ভরে যায় ক্ষেত। লাগানো শুরু থেকে এ পর্যন্ত পরিচর্চাসহ খরচ হয়েছে প্রায় ১২ হাজার টাকা। বর্তমান ক্ষেতে ৩৫ থেকে ৪০ মন মিষ্টি কুমড়া রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২০ হাজার টাকা। ইতি মধ্যে অনেক পাইকারি ব্যবসায়ী ক্ষেত ধরে ক্রয় করতে আগ্রহী হচ্ছেন বলে তিনি জানান।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) জরেজমিনে বিকেলে কৃষক সিরাজুলের ক্ষেতে গেলে তিনি জানান, ৫ বিঘা জমিতে প্রথম চাষ তাই বুঝে উঠতে পারিনি। অন্যথায় ফলন আরো বেশি হতো। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দা কৃষক তুহিন হোসেন  ও মাহাবুর রহমান নামের এক প্রবাসি জানান, সিরাজুল ইসলামের কাছ থেকে নতুন চাষ পদ্ধতি শুনেছি। আমিও মিষ্টি কুমড়া চাষ শুরু করবো।

চৌগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসাব্বির হুসাইন বলেন, এ বছর উপজেলায় সুপ্রিমা ও খরিপ-২ হাইব্রিড সুইটি জাতের মিষ্টি কুমড়া চাষ হয়েছে প্রায় ৬০ হেক্টর জমিতে। এ ধরনের নতুন পদ্ধতিতে চাষ কৃষকদের উৎসাহী করতে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত কৃষি বিভাগ। সব ধরনের সবজি চাষে উৎসাহী কৃষকদের সবধরনের সহযোগিতা দিতে কৃষি বিভাগ প্রস্তুত।

আরএস

 

Link copied!