Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২০ মে, ২০২৪,

বরগুনার তালতলী

উপজেলা চেয়ারম্যানসহ দুই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ মামলা

বরগুনা প্রতিনিধি

বরগুনা প্রতিনিধি

মে ৮, ২০২৪, ০৪:৩৭ পিএম


উপজেলা চেয়ারম্যানসহ দুই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ মামলা

বরগুনার তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার, নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু, পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার ও উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠুর বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হয়েছে।

বুধবার বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষিতার বাবা বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

আদালতের বিচারক মো. মশিউর রহমান খাঁন মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্তপূর্বক সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। তিন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় উপজেলাব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্তদের শাস্তি দাবি করছেন এলাকাবাসী।

মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়ার সঙ্গে মামলার বাদী নারীর মোবাইল ফোনে প্রেম হয়। এক পর্যায় চেয়ারম্যান বাচ্চু মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলেন। কিন্তু চেয়ারম্যান তাকে বিয়ে না করে টালবাহানা করতে থাকে। পরে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে চেয়ারম্যান তাকে বিয়ে করবে বলে স্ট্যাম্পে লিখিত দেয় এবং বিভিন্ন স্থানে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ধর্ষণ করে এবং ধর্ষিতার অজান্তে গোপনে মোবাইলে নগ্ন ছবি ধারণ করে।

ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে মামলার ২নং আসামি পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করেন। চেয়ারম্যান রাজ্জাক তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন এবং তিনিও মোবাইলে নগ্ন ছবি ধারণ করে রাখেন।

পরে পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ওই নারীকে ব্ল্যাক মেইল করেন এবং তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রেজবি-উল কবির জোমাদ্দারের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে বাধ্য করেন। তার কথা না শুনলে তাকে জীবননাশের হুমকি দেন। নিরুপায় হয়ে ধর্ষিতা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজবি-উল কবির জোমাদ্দারের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য হয়।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানও ওই নারীকে বিভিন্ন হোটেল নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে দাবি করেন মামলার বাদী।

তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে ধর্ষণের শিকার ওই নারী তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করবে বলে হুমকি দেয়। এমন খবর পেয়ে তিন চেয়ারম্যান ও ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মিলে ওই ধর্ষিতার বিরুদ্ধে উল্টো পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দেয়। ওই মামলায় ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

বর্তমানে ওই নারী জেল হাজতে রয়েছে। এ ঘটনায় ধর্ষিতার বাবা বুধবার বরগুনা নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তালতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার, নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু ও পচাঁকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার ও ছাত্রলীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠুর বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেন।

পরে আদালতের বিচারক মো. মশিউর রহমান খাঁন মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্ত করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।

এদিকে অভিযুক্ত তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রেজবি উল কবির জোমাদ্দার বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার বিরুদ্ধে আমার প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে আমি ও অন্য দুই চেয়ারম্যানের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। আমি আইনগতভাবে মোকাবেলা করবো।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. আনিচুর রহমান মিলন বলেন, আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্ত করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

ইএইচ

Link copied!