Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪,

জমজমাট দুশো বছরের ঐতিহ্য ‘জোড়া ইলিশের মেলা’

নয়ন দাস, গোসাইরহাট (শরীয়তপুর)

নয়ন দাস, গোসাইরহাট (শরীয়তপুর)

জানুয়ারি ১৬, ২০২৪, ০১:৩০ পিএম


জমজমাট দুশো বছরের ঐতিহ্য ‘জোড়া ইলিশের মেলা’
ছবি: আমার সংবাদ

শরীয়তপুরে প্রতিবছর পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে জমজমাট মাছের মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এতে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিক্রি করা হয়। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল থেকে সদর উপজেলার মনোহর বাজারে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, মেলাটি কতো বছর আগে থেকে প্রচলন শুরু হয়েছে জানেননা অনেকেই। তবে ধারণা করা হয়, অন্তত ২০০ বছরের পুরোনো এ মেলা। প্রথম প্রথম মেলায় শুধু ইলিশ মাছ বিক্রি হলেও ধীরে ধীরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছও মেলায় বিক্রি হওয়া শুরু হয়। এরপর বিভিন্ন খাবারের দোকান ও খেলনার দোকান যুক্ত হয় মেলায়। পুরো বছরজুড়ে এই দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকেন এখানকার স্থানীয় হিন্দুধর্মের মানুষের পাশাপাশি মুসলিমরাও। মেলাটি ঘিরে আশপাশের বেশ কয়েকটি এলাকার মানুষের সমাগম ঘটে এ মেলায়। মেলা উপলক্ষে এখানকার মানুষেরা তাদের আত্মীয়দের বাড়িতে নিমন্ত্রণ জানায়। এ মেলাকে ঘিরে বড়দের চাইতে ছোটদের আগ্রহ থাকে আরো বেশি। তারা সকলে বয়জেষ্ঠ্যদের সাথে মেলায় গিয়ে মিষ্টি খাবার পাশাপাশি কিনে রঙবেরঙের বেলুন আর খেলনা। হাতে খেলনা হাতে আর বাঁশিতে ফুঁ দিতে দিতে খুশি মনে বাড়ি ফেরে তারা৷

জয় দত্ত নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, এই মেলায় ছোট বড় সবাই খুব আনন্দ সহকারে আসে। ছোটরা আমাদের সাথে মেলায় আসে, খেলনা কিনে মিষ্টি খেয়ে বাড়ি ফিরে। আমরা সকলেই আজ জোড় ইলিশ মাছ কিনে থাকি।

মেলায় টেরাকোটা বিক্রি করা মালেক সরদার বলেন, এই মেলা আমাদের বাপ দাদার আমলের আগে থেকে চলে আসছে। আমি ১২ বছর ধরে মেলায় মাটির মালামাল বিক্রি করি। এই মেলা আমাদের ঐতিহ্য, আমরা এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে চাই।

চন্দন ঘোষ নামের আরেক স্থানীয় বলেন, আমি আমার বাবার সাথে এই মেলায় আসতাম। আমার বাবার মুখে শুনেছি তিনিও নাকি তার বাবার সাথে এই মেলায় আসতেন। আমিও আজ আমার বাচ্চাদের নিয়ে মেলায় এসেছি। খেলনা কিনে দিলাম, এখন মাছ কিনে বাসায় ফিরবো।

মনোহর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মোল্লা বলেন, আমাদের অঞ্চলের দুইশো বছরের ঐতিহ্য এই জোড় মাছের মেলা। প্রতিবছর এই দিনে মনোহর বাজার মাঠে ভোরবেলা থেকেই ইলিশ মাছ বিক্রি করা হয়। হিন্দু মুসলিম সবাই মেলায় এসে মাছ কিনেন। এই মেলার মাধ্যমে আমাদের সম্প্রীতির বন্ধন আরো মজবুত হয়। এখানে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়।

এআরএস

Link copied!