Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪,

‘ভাইয়ের কিছু হলে মা-বাবাকে বাঁচানো যাবে না’

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

মার্চ ১৩, ২০২৪, ০৩:০৪ পিএম


‘ভাইয়ের কিছু হলে মা-বাবাকে বাঁচানো যাবে না’

আমার একমাত্র ভাইয়ের কিছু হলে মা-বাবাকে বাঁচানো যাবে না। আমার ভাই গত সোমবার বিকেলে ফেসবুকে আপলোড দিয়েছে, ‘যে বিষুবরেখা অতিক্রম করলাম।’ মাথা ন্যাড়া করে ছবি আপলোড করেছে। এক মাস আগে সে বাড়ি এসেছিল। 

একদিন থেকেই সে চলে গেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে- কথাগুলো বলছিলেন ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়া এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের মার্চেন্ট কর্মকর্তা সাব্বির হোসেনের বোন মিতু আক্তার।  

তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুরে এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর পেয়ে সবাই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। বাবা-মা খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তারা শুধু কেঁদেই চলছে আর বলছে আমার ছেলেকে এনে দাও। অতিদ্রুত আমার ভাইকে মুক্ত করে আনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ জন নাবিকের মধ্যে রয়েছেন সাব্বির।

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের ডাঙা ধলাপাড়া গ্রামের হারুনুর রশিদের ছেলে সাব্বির। ২০১৪ সালে নাগরপুরের সহবতপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। টাঙ্গাইলের কাগমারী এমএম আলী কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিতে। সেখান থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করে ২০২২ সালের জুন মাসে পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ-তে মার্চেন্ট কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি নেন।

বুধবার (১৩ মার্চ) তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একমাত্র ছেলের জিম্মির খবর শুনে বাবা হারুন অর রশিদ হাউমাউ করে কাঁদছেন। মা সালেহা বেগম বুক চাপড়িয়ে কাঁদছেন আর বিলাপ করছেন। একমাত্র বোন মিতু ভাইয়ের জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করছেন। তার ভাই যেন জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হয়ে তাদের কাছে আবার ফেরত আসে।

সাব্বিরের চাচাতো ভাই আহম্মেদ হোসেন রানা বলেন, ‘সাব্বিররা এক ভাই এক বোন। সে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছে। তার বাবা কৃষিকাজ করে সংসার চালাতেন। বোনের বিয়ে হয়েছে। সাব্বিরের বাবা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে প্যারাইলাইজড হয়ে শয্যাশায়ী।

পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সাব্বির। তার কিছু হয়ে গেলে তাদের আর চলার উপায় থাকবে না। সরকারের কাছে দাবি জানাই, সাব্বিরসহ সবাইকে যেন জিম্মিদশা থেকে দ্রুত মুক্ত করে।

এইচআর

Link copied!