Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪,

ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে বাবাসহ পদ্মায় ডুবলেন ৩ জন

মুন্সিগঞ্জ

মুন্সিগঞ্জ

এপ্রিল ১৩, ২০২৪, ১০:২৫ এএম


ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে বাবাসহ পদ্মায় ডুবলেন ৩ জন

ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বেশনাল গ্রামে চাচা ইকবাল মোল্লার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন রিয়াদ আহমেদ (৪৫)। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে মোহাম্মদপুর থেকে রওনা হয়ে দুপুরে সেখানে পৌঁছান তারা। পরে খাওয়া-দাওয়া করে বিকেলের দিকে নৌকায় করে বের হয়েছিলেন পদ্মা নদীতে ঘুরতে। এরপর গোসলে নেমে স্রোতের তোরে ভেসে যাওয়া ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে তিনিসহ প্রাণ হারান তিনজন।

নিহতরা হলেন- ঢাকার মোহাম্মদপুরের সলিমুল্লাহ রোড এলাকার হারুনুর রশিদ মোল্লার ছেলে রিয়াদ আহমেদ (৪৫) ও তার ভায়রা জুয়েল রানা (৪০)। ইতোমধ্যে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনো নিখোঁজ রয়েছে রিয়াদ আহমেদের ছেলে আরিফ আহমেদ (১৬)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে রিয়াদ আহমেদসহ ৩০-৩৫ জন ইঞ্জিনচালিত একটি ট্রলারে করে পদ্মা নদীতে ঘুরতে বের হন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার দীঘিরপাড় ইউনিয়নের ধানকোড়া পদ্মার চরে আসেন তারা। পরে সেখানে ট্রলারের অধিকাংশ লোক গোসল করতে নামেন।

গোসলের একপর্যায়ে বিকেল পাঁচটার দিকে রিয়াদ আহমেদ, জুয়েল রানা, আরিফসহ অনেকেই নদীর গভীরে চলে যান। সে সময় নদীতে স্রোত ছিল। তবে রিয়াদ আহমেদ, তার ছেলে আরিফ ও ভায়রা জুয়েল রানা সাঁতার জানতেন না। একপর্যায়ে অন্যরা সাঁতরে তীরে আসতে পারলেও তারা তিনজন স্রোতে ভেসে যান।

পরে খবর পেয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর ও টঙ্গিবাড়ী উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ছাড়াও সদর উপজেলার চর আবদুল্লাহ নৌ পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে একজন রেলওয়ের কর্মকর্তা এবং অন্যজন ঢাকা ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী হাবিবুর রহমান বলেন, নিহতদের মধ্যে একজন আমার সম্বন্ধী, আরেকজন ভায়েরা। আমরা গোসল করছিলাম, ওই সময় একটি বাচ্চা ভেসে যায়। তাকে বাঁচানোর জন্য ছয়-সাত যায়। তারমধ্যে তিনজন আর উঠতে পারেনি, পানিতে ডুবে যায়। যখন চারজন উঠছে, তখনই আমরা বুঝতে পেরেছিলাম যে তিনজন উঠতে পারেনি।

রায়হান নামে নিহতদের আরেক স্বজন বলেন, আমরা দেখলাম বাচ্চাটা ভেসে যাচ্ছে। ওই সময় যে যার মতো বাঁচাতে গেছে। একই সময় অনেক স্রোত ছিল। সেই সময় আমার শ্যালক ও ভায়রাও তাদের বাচ্চাকে উদ্ধার করার জন্য দ্রুত পানিতে নামে। পরে তারা ডুবে যায়। সঙ্গে শ্যালকের বাচ্চাও পানিতে তলিয়ে যায়।

চর আবদুল্লাহ নৌ পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক আবুল হাসনাত জানিয়েছেন, বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে উদ্ধারকাজ শুরু হয়। রাত পৌনে ৯টার দিকে দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ অপরজনের সন্ধানে কাজ করছেন পুলিশসহ অন্য উদ্ধারকারীরা।

আরএস

Link copied!