Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ৩০ মে, ২০২৫,

জবির সাবেক অধ্যাপক আনোয়ারা বেগম গ্রেপ্তার

জবি প্রতিনিধি

জবি প্রতিনিধি

মে ২৮, ২০২৫, ০৮:৪২ পিএম


জবির সাবেক অধ্যাপক আনোয়ারা বেগম গ্রেপ্তার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাচেষ্টা মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম। 

মামলাটি করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা।

ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন,“তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা প্রচেষ্টার মামলা রয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিকেলে ক্যাম্পাসের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে আইনগত প্রক্রিয়া চলছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “তিনি আজ ক্যাম্পাসে আসবেন—এ বিষয়ে প্রশাসন অবগত ছিল না। পুলিশ তাকে ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে গ্রেপ্তার করেছে বলে শুনেছি।”

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আপগ্রেডেশন বোর্ডে অংশ নিতে অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।

এ বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান মো. মেজবাহ উল আজম সওদাগর বলেন,“বোর্ডে অংশগ্রহণের জন্য সদস্য মনোনয়ন দেন রাষ্ট্রপতি। তাঁকে বাদ দেওয়ার অনুরোধপত্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো হলেও এখনো তা কার্যকর হয়নি। বিভাগ থেকে নয়, রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকেই তাঁকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।"

তবে তার বিরুদ্ধে মামলা থাকা সত্ত্বেও কেন চিঠি পাঠানো হয়েছে, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে মামলার বাদী ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা বলেন,“এ ধরনের পক্ষপাতদুষ্ট শিক্ষকরা শিক্ষক সমাজকে কলঙ্কিত করেছেন। তিনি এক সময় বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের বিরোধিতা মানেই রাজাকার হওয়া। বিসিএস পরীক্ষায় ছাত্রলীগ ছাড়া কাউকে উত্তীর্ণ করতে চাইতেন না। এমন ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা জরুরি।”

ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য আবু বকর খান বলেন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি করেছেন। এদের সঙ্গে কোনো আপস হতে পারে না।

উল্লেখ্য, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্রদল নেতা সুজন মোল্লা গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় মোট ১৯৩ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এক নম্বর আসামি করা হয়। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন— সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক তথ্যমন্ত্রী আরাফাত রহমান এবং ঢাকার সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

এদিকে মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষক আসামি হিসেবে আছেন। 

তারা হলেন—রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার গোস্বামী ও ড. আনোয়ারা বেগম, জবি নীলদলের অধ্যাপক ড. জাকারিয়া মিয়া, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল, সহকারী প্রক্টর নিউটন হাওলাদার, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মিল্টন বিশ্বাস, ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কামাল হোসেন, আইইআর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারুক আহমেদ, অগাস্টিন পিউরিফিকেশন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু সালেহ সিকান্দার।

আসামি ৫ কর্মকর্তা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকতা সমিতির সভাপতি কাজী মনির, ডেপুটি রেজিস্ট্রার আলতাফ হোসেন ও ইমরান হোসেন ইমন, ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টোর কিপার পদে নিয়োজিত কর্মকর্তা টুটুল আহমেদ, জবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ও স্টোরকিপার সুমন হাসান সোহান।

ইএইচ

Link copied!