ভোলা প্রতিনিধি
এপ্রিল ৩০, ২০২৫, ০৯:৩৭ পিএম
ভোলা প্রতিনিধি
এপ্রিল ৩০, ২০২৫, ০৯:৩৭ পিএম
ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে মার্চ ও এপ্রিল—এই দুই মাস ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। এই সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ বুধবার দিনগত রাত ১২টায়।
বুধবার সরেজমিনে ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা চৌধুরী ঘাট, ভোলারখাল, নাছির মাঝি মাছ ঘাট, দৌলতখানের চৌকিঘাট, বোরহানউদ্দিনের হাকিমুদ্দিন মাছ ঘাট, তজুমদ্দিনের বড় মাছঘাট, লালমোহনের মঙ্গল শিকদার মাছ ঘাট, চরফ্যাশনের সামরাজ মাছ ঘাট এবং মনপুরা উপজেলার রামনেওয়াজ মাছ ঘাটে ঘুরে দেখা যায়—নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার অপেক্ষায় জেলেরা এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
জেলেরা ট্রলার ও জাল মেরামতের কাজ শেষ করে নদীতে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কারও কারও ট্রলারে জাল তোলা চলছে, আবার কেউ মাঝিমাল্লা প্রস্তুত করছেন। সবমিলিয়ে জেলে পরিবারগুলোতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
জেলে মো. জাহাঙ্গীর মাঝি, মসলেউদ্দিন মাঝি, মনতাজ মাঝি ও আবু কালাম জানান, “আজ রাত ১২টায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে। গত দুই মাস আমরা নদীতে নামিনি, সরকারের নিয়ম মেনেছি। পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে সময় কেটেছে। সরকারি সহায়তায় কেবল চাল পাওয়া গেছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম ছিল। এখন নদীতে নামতে পারলে আবারও আয়-রোজগার শুরু হবে।”
তারা আরও বলেন, “অভিযানের সময় ট্রলারের জাল ও ইঞ্জিন নিরাপদ স্থানে রেখে দিয়েছিলাম। এখন আবার সেগুলো ট্রলারে তুলে নিয়েছি। আমরা আশা করছি, এবার বেশি পরিমাণে ইলিশ ধরতে পারব এবং আড়তের দেনা পরিশোধ করতে পারব। তবে মাছ না পেলে দেনা থেকেই যাবে।”
মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, অভিযানকালীন সময়ে আড়ৎ বন্ধ রাখা হয়েছিল। এখন আড়ত খুলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। জেলেরা নদীতে নামার পর মাছ নিয়ে আসবে এবং তা মোকামে পাঠিয়ে পূর্বের দেনা শোধ করা হবে।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, “আজ রাত ১২টায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে। নিষেধাজন সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। মা ইলিশ ডিম দিয়েছে, জাটকা বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আমরা আশা করছি এবার জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে। এছাড়া, জেলেদের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত খাদ্য সহায়তাও তাদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভোলায় ১ লাখ ৮৫ হাজার টন ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে মৎস্য বিভাগ, যা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করা হচ্ছে।
ইএইচ