Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ০৩ মে, ২০২৫,

মসজিদের টাকা আত্মসাৎ: সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিচার দাবি

মশিউর কাজী, শিবচর

মশিউর কাজী, শিবচর

মে ২, ২০২৫, ০৭:২৯ পিএম


মসজিদের টাকা আত্মসাৎ: সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিচার দাবি

মাদারীপুরের শিবচরের চাঁন্দেরচর হাট জামে মসজিদের প্রায় দুই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উমেদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আব্দুল লতিফ মুন্সির বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় মুসল্লিরা।

শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে শিবচর উপজেলার উমেদপুর ইউনিয়নের চাঁন্দেরচর বাজার জামে মসজিদের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

স্থানীয় মুসল্লিদের অভিযোগ, মসজিদের পাকা ভবন নির্মাণের শুরু থেকেই লতিফ মুন্সি সভাপতি এবং মজিদ মৃধা সেক্রেটারি হিসেবে রয়েছেন। লতিফ মুন্সি ভবন নির্মাণের ঠিকাদারও ছিলেন। ১২ বছর আগে জেলা পরিষদ থেকে এই কাজে ৮২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও তিনি দাবি করেন, তা দিয়ে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন সম্ভব নয়। পরে তৎকালীন সংসদ সদস্য লিটন চৌধুরীর নির্দেশে মসজিদের নিচের ২২টি দোকান ৫ থেকে ৯ লাখ টাকায় বিক্রি করে অতিরিক্ত অর্থ সংগ্রহ করা হয়।

মুসল্লিরা জানান, ১২/১৩ বছর আগে এই ধরনের ভবন নির্মাণে ৬০ লাখ টাকার বেশি লাগার কথা নয়। অথচ লতিফ মুন্সি প্রায় ২ কোটি টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘ এক যুগেও এই টাকার কোনো হিসাব কাউকে দেননি। বরং কেউ হিসাব চাইলে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হতো। আওয়ামী লীগের ক্ষমতা কমার পর হিসাব চাওয়ার পরও তিনি নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করছেন।

এছাড়া, হাট থেকে প্রতিবছর ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা মসজিদ কমিটির অনুদান দেওয়া হলেও গত ১২ বছরের সেই অর্থও মসজিদ ফান্ডে জমা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। দোকান বিক্রির কোনো চুক্তিনামা দেওয়া হয়নি, ফলে মালিকেরা উচ্ছেদের শঙ্কায় আছেন। অভিযোগ রয়েছে, লতিফ মুন্সি ও তার ভাই চারটি দোকান দখল করে রেখেছেন।

মসজিদ পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি মজিদ মৃধা বলেন, "সব হিসাব লতিফ মুন্সির কাছে। আমি কিছু জানি না।" তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তার বক্তব্যে অসামঞ্জস্য দেখা যায়, যা উভয়ের বিরুদ্ধে অনিয়মে জড়িত থাকার সন্দেহ জাগায়।

এ বিষয়ে উমেদপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জামান মুন্সি বলেন, “লতিফ মুন্সি কোনো হিসাব দেয়নি। তার বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়ম রয়েছে। তিনি এমপির প্রভাব দেখিয়ে হাটের ইজারা নিজের এবং স্ত্রীর নামে নিয়েছেন, যা সরকারি চাকরির নিয়মবিরোধী।”

স্থানীয় মুসল্লি ও এলাকাবাসীরা জানান, “আমরা মসজিদের সম্পদের স্বচ্ছ হিসাব চাই এবং কোনো দুর্নীতিবাজকে মসজিদের দায়িত্বে দেখতে চাই না।” তারা এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বিচার দাবি করেন।

ইএইচ

Link copied!