Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০৪ জুন, ২০২৫,

সাদুল্লাপুরে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট

সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি

সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি

জুন ২, ২০২৫, ০৬:০১ পিএম


সাদুল্লাপুরে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট

কোরবানির ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, ততই জমে উঠছে দেশের কোরবানির পশুর হাটগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বিভিন্ন হাটে প্রতিদিনই বাড়ছে ক্রেতা ও বিক্রেতার ভিড়। হাটজুড়ে চলছে গরু দেখা, দরদাম করা এবং পশু কিনে বাড়ি ফেরার আনন্দঘন দৃশ্য।

হাটে উঠেছে দেশি ও বিদেশি জাতের হাজার হাজার গরু ও ছাগল। ছোট-বড় নানা আকৃতির পশু থাকায় ক্রেতারা পাচ্ছেন পছন্দ অনুযায়ী বাছাই করার সুযোগ। কেউ খুঁজছেন মাঝারি আকারের সাশ্রয়ী গরু, কেউবা বড় আকৃতির পশুর দিকে ঝুঁকছেন। গরুর গায়ে আলপনা, রঙিন কাপড় ও ঘণ্টার শব্দে হাটে তৈরি হয়েছে এক উৎসবমুখর পরিবেশ।

ক্রেতারা বলছেন, এবার গরুর দাম গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি হলেও পশুর মান ভালো হওয়ায় দরদাম করে কিনে নিচ্ছেন। বিক্রেতাদের দাবি, পশুর খাবার, পরিবহন ও খামার খরচ বেড়েছে, কিন্তু সেই তুলনায় দাম কম।

বিক্রেতারা জানান, ছাগলের প্রচুর সরবরাহ থাকায় দাম কিছুটা কম। ২৫ কেজি ওজনের একটি খাসি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২১ হাজার টাকায়।

এ বছর প্রতি হাটে টোল নির্ধারিত থাকায় বিক্রেতাদের থেকে আলাদা করে টোল নেওয়া হচ্ছে না। তবে ক্রেতাদের কাছ থেকে গরুপ্রতি ৬০০ টাকা ও ছাগলপ্রতি ২৫০ টাকা হারে টোল নেওয়া হচ্ছে। এতে খুশি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই।

ধাপেরহাট ইউনিয়নের নিজপাড়া গ্রামের কৃষক মনসুর মিয়া জানান, “আমার গরু দেশি জাতের এবং সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবারে বড় করা। স্বাস্থ্য ভালো, তাই দাম একটু বেশি চাই। এখনো বিক্রি হয়নি, দরদাম চলছে। শেষদিকে ভালো দাম পেলে বিক্রি করব।”

গরু কিনতে আসা ইদিলপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বুলু মিয়া বলেন, “গবাদিপশুর দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই আছে।”

হাটের নিরাপত্তায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি। চলছে টহল, ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিমের সেবা, জাল নোট শনাক্তকরণ মেশিন, রোগমুক্ত সার্টিফিকেট যাচাই ও ওজন পরীক্ষা কার্যক্রম। প্রতারণা রোধে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি।

সাদুল্লাপুর উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাদেকুর রহমান বলেন, “আমার টিম হাটে কাজ করছে। আমি নিজেও তদারকি করছি। সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে আমরা প্রস্তুত।”

সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ অনিক ইসলাম বলেন, “হাটে অতিরিক্ত টোল আদায় রোধে প্রতিটি ইজারাদারকে চার্ট টানানো ও প্রচার-প্রচারণার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি ও এসিল্যান্ড জসিম উদ্দিন নিয়মিত হাট পরিদর্শন করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও মোতায়েন রয়েছে।”

হাটে ঘুরে দেখা যায়, ঈদের আমেজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। কোরবানির পশু কেনা শুধু প্রয়োজন নয়, বরং তা ঘিরে রয়েছে পরিবার-পরিজনের আনন্দ, উত্তেজনা ও ঈদের প্রস্তুতির বড় অংশ। সময় যত এগোচ্ছে, তত বাড়ছে কেনাবেচার গতি। শেষ সময়ে হাট আরও জমজমাট হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

ইএইচ

Link copied!