Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫,

আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্র

মাগুরায় বছরে লাখ টাকার বরাদ্দ, নেই মসলার চাষ

মাগুরা প্রতিনিধি:

মাগুরা প্রতিনিধি:

জুন ১১, ২০২৫, ০৪:৪৮ পিএম


মাগুরায় বছরে লাখ টাকার বরাদ্দ, নেই মসলার চাষ

মাগুরার আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্রের মূল উদ্দেশ্য ছিল মসলাজাতীয় ফসলের উন্নত জাত উদ্ভাবন ও তা কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু বাস্তবে প্রতিষ্ঠানটি যেন রূপ নিয়েছে কেবল এক প্রশাসনিক কার্যালয়ে—নেই মাঠ পর্যায়ে কার্যকর কোনো গবেষণা বা কৃষকের সঙ্গে সম্পৃক্ততা।

গবেষণা মাঠ প্রায় অনাবাদি। স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, এখানে কী ধরনের চাষাবাদ হয়, সেটি তাঁদের জানা নেই।

আলোকদিয়া এলাকার কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, শুধু দেখি ভবন আছে, ভেতরে কী হয় জানি না। কোনোদিন কোনো সেবা বা পরামর্শ পাইনি।

সরকারি নথি অনুযায়ী, ১ জুন থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত ছয়জন শ্রমিককে তিন শিফটে গবেষণা মাঠ, গেট, গুদাম, গ্যারেজ ও অফিসসহ বিভিন্ন স্থানে পাহারার দায়িত্বে রাখা হয়েছে। তবে স্থানীয় সূত্র বলছে, অধিকাংশ সময়ই ওই শ্রমিকেরা দায়িত্বে অনুপস্থিত থাকেন।

কেন্দ্রে নেই ডিজিটাল হাজিরা, সিসিটিভি ক্যামেরা বা গেটপাস রেকর্ড। ফলে দায়িত্ব পালনের কার্যকারিতাও প্রশ্নের মুখে।

মাঠে দেখা যায়, কোথাও নেই জিরা, ধনিয়া, মেথি কিংবা কালোজিরার চাষ। নামমাত্র কয়েকটি প্লটে কিছু চারা দেখা গেলেও সেগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে সন্দিহান স্থানীয়রা। প্রতিবছর লক্ষাধিক টাকা বরাদ্দ হলেও এর ফল মাঠে নেই।

একজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘অনেক সময় পরিকল্পনা হয়, কিন্তু বাস্তবায়ন হয় না। তদারকির অভাবও একটা বড় কারণ।’

কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (হিসাব বিভাগ) অগ্নি কুমার সিকদার, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. ইকবাল হক এবং বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. রিয়াজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ভুয়া বিল ভাউচারে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। তারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ড. মো. আশরাফুল আলম, নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। কিছু বিষয় নজরে এসেছে, তদন্ত করে দেখা হবে।’

স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, এই গবেষণা কেন্দ্র তাদের কোনো উপকারে আসছে না। বরং চোখের সামনেই সরকারি অর্থ অপচয় হচ্ছে।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তোজাম্মেল হক বলেন, ‘গবেষণা কেন্দ্র কেবল কাগজে থাকলে চলবে না। স্থানীয় কৃষকদের সাথে মেলবন্ধন জরুরি। মাঠ পর্যায়ে উৎপাদন না থাকলে এর কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন উঠবে।’

বাংলাদেশে মসলার চাহিদা দিনে দিনে বাড়ছে। অথচ এই গবেষণা কেন্দ্র থেকে এখনো জাত উন্নয়ন বা উৎপাদন বাড়াতে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।

বিএআরআই গাজীপুরের পরিচালক ড. এম এম কামরুজ্জামান বলেন, ‘যদি কেউ সামান্য গাছের ফল বা খাতের টাকা আত্মসাৎ করে, সেটা দুঃখজনক। আপনারা উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেন এ বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে পারব না।’

বিআরইউ

Link copied!