অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি:
জুলাই ১, ২০২৫, ১২:১৯ পিএম
যশোরের অভয়নগরে শতকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভৈরব সেতু পড়ে আছে অভিভাবকহীন। রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকির অভাবে সেতুর যন্ত্রাংশ চুরি হচ্ছে, বাতি নিভে রয়েছে টানা ১৬ মাস ধরে। অন্ধকারে বাড়ছে চুরি, ছিনতাই ও দুর্ঘটনার আশঙ্কা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর পুরো এলাকায় সড়কবাতি নেই বললেই চলে। চুরি হয়ে গেছে বাতি, যন্ত্রাংশ ও বৈদ্যুতিক তার। কোথাও কোথাও তার কেটে নেওয়া হয়েছে। নেই কোনো নিরাপত্তা প্রহরী। ফলে রাত হলেই সেতু ডুবে যায় ঘোর অন্ধকারে। টর্চ জ্বালিয়ে চলতে হয় পথচারীদের।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, অভয়নগরের ভাঙ্গাগেট মশরহাটী গ্রাম থেকে শ্রীধরপুর ইউনিয়নের দেয়াপাড়া গ্রাম পর্যন্ত ৭০২.৫৫ মিটার দীর্ঘ এই সেতুতে রয়েছে ১৬টি পিলার ও ৬০টি সড়কবাতি। ব্যয় হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। সেতুটি নওয়াপাড়া পৌর এলাকা ছাড়াও শ্রীধরপুর, বাঘুটিয়া, শুভরাড়া, সিদ্ধিপাশা, প্রেমবাগ, সুন্দলী, চলিশিয়া ও পায়রা ইউনিয়নের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছে।
নির্মাণের পর কয়েক বছর এই সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকি এলজিইডি করলেও, গত এক বছর ধরে জনবল সংকট ও অর্থের অভাবে আর পারছে না প্রতিষ্ঠানটি।
যানবাহনের চালকদের অভিযোগ, ভৈরব সেতুর কারণে অভয়নগর থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত অনেক সহজ হয়েছে। কিন্তু সন্ধ্যার পর অন্ধকারে সেতু পেরোতে হয় ভয়ে ভয়ে। মাঝেমধ্যে যানবাহন থামিয়ে ছিনতাই হয়। চুরি হচ্ছে সেতুর বিভিন্ন মালামালও। অথচ এসব রোধে নেই কোনো কার্যকর ব্যবস্থা।
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২, নওয়াপাড়া জোনাল অফিসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (কম) মেহেদুল ইসলাম মেহেদি জানান, ‘২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত ১৬ মাসে সেতুর বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে ২ লাখ ৮২ হাজার ৬৯৪ টাকা। তবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়নি, বরং মিটার পুড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।’
ভবিষ্যতে সেতুর দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়ে নওয়াপাড়া পৌরসভার সচিব মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত আমরা সেতুর দায়িত্ব নিতে পারছি না। দুই পক্ষের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।
বিআরইউ