কুমিল্লা প্রতিনিধি:
জুলাই ২৪, ২০২৫, ০৭:৪৪ পিএম
রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়িতে ভয়াবহ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মাহতাব রহমান ভূঁইয়া (১৩)।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মাহতাবের শরীরের প্রায় ৮৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। শুরুতে তাকে আইসিইউ এবং পরে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান বলেন, ‘শরীরের অধিকাংশ অংশ পুড়ে যাওয়ায় শুরু থেকেই তার অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। সব চেষ্টা করেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি।’
মাহতাবের মরদেহ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার চুলাশ ভূঁইয়া বাড়িতে আনা হচ্ছে। বাদ এশা স্থানীয় শাহী ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন মাহতাবের জেঠা মো. মিজানুর রহমান এবং মামা মো. রকিবুল হাসান রাকিব।
মাহতাব ছিলেন দেবিদ্বারের রাজামেহার ইউনিয়নের চুলাশ ভূঁইয়া বাড়ির মো. মিনহাজুর রহমান ভূঁইয়ার একমাত্র সন্তান। তার বাবা ঢাকায় একটি সিরামিক কোম্পানির (গ্রেটওয়াল সিরামিক) এজিএম এবং মা একজন গৃহিণী। তারা উত্তরার একটি বাসায় বসবাস করতেন।
বিমান বিধ্বস্তের পর ঘটনাস্থল থেকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় বেরিয়ে আসা মাহতাবের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। অনেকেই তখন তার সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করেছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না।
তার মামা রকিবুল বলেন, চিকিৎসকরা অনেক চেষ্টা করেছেন। ভাগিনাকে আর ফিরিয়ে আনতে পারলেন না। তার মা-বাবা এখনও বাকরুদ্ধ, কিছু বলতেও পারছেন না। ঘটনার পর থেকে তারা হাসপাতালে একরকম নির্ঘুম ছিলেন। এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না।
গত সোমবার দুপুরে রাজধানীর দিয়াবাড়ীতে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। বিস্ফোরণ ও আগুনে ওই এলাকায় ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩০ জনে। এদের মধ্যে ২২ জনের পরিচয় শনাক্ত করে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এখনও শনাক্ত হয়নি ৭ জনের মরদেহ।
দেবিদ্বারের চুলাশ ভূঁইয়া বাড়ি এবং আশপাশের গ্রামে মাহতাবের মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। জানাজায় অংশ নিতে এলাকার বহু মানুষ প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রতিবেশীরা বলছেন, ‘এত ছোট একটা ছেলেকে আগুন কেড়ে নিল, এটা আমাদের কেউ মেনে নিতে পারছি না।’
বিআরইউ