ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

রাবিতে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের নামিয়ে আবাসিকদের হলে তুলে দিলো প্রশাসন

রাবি প্রতিনিধি 

রাবি প্রতিনিধি 

জুলাই ২, ২০২২, ১১:০১ এএম

রাবিতে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের নামিয়ে আবাসিকদের হলে তুলে দিলো প্রশাসন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে অবৈধভাবে থাকা অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের আসন থেকে নামিয়ে সেখানে বৈধ শিক্ষার্থীদের তুলে দিয়েছে হল প্রশাসন। 

শুক্রবার (১ জুলাই) বিকেলে হলটিতে প্রশাসনের অভিযান চালানোর কথা থাকলেও রাত ৯টার দিকে অভিযান চালায় তারা। এসময় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে প্রাধ্যক্ষ পরিষদসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত হলে অবৈধভাবে থাকা অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের নামিয়ে এগারোজন জন বৈধ বা আবাসিক শিক্ষার্থীকে তাদের সিটে তুলে দেওয়া হয়েছে। আজরাতেই এখনো সাতজনকে তাদের সিটে তুলে দেওয়া হবে। যদিও চোয়াল্লিশ জনকে আজ তাদের সিটে তুলে দেওয়ার কথা ছিলো।

এবিষয়ে হোসেন সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, হলের শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সব রকমের কাজ করতে চাই। বর্তমানে হলে সিট কেন্দ্রিক সমস্যা জটিল আকার ধারণ করেছে৷ অবৈধভাবে হলে অবস্থা, সিট দখল ও বৈধ শিক্ষার্থী নামিয়ে দেয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। তারই প্রেক্ষিতে বৈধ শিক্ষার্থীদের হলে উঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, যাতে হলে সকল শিক্ষার্থী বৈধভাবে অবস্থান করে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখে। 

আঠারো জন শিক্ষার্থীকেই হলে উঠানোর কথা জানিয়ে প্রাধ্যক্ষ বলেন, আজ আঠারো জন শিক্ষার্থীকেই সিটে উঠানো হবে। অবৈধভাবে থাকা অনেকে কক্ষে তালা দিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। আমরা তাদের ডেকেছি, তারা যদি না আসে, তবে তালা ভেঙে বৈধ শিক্ষার্থীদের সিটে তোলা হবে। সারা রাত লাগলেও আমরা তাদের সিটে উঠিয়ে দিয়ে যাবো।

এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ফেরদৌস মহল বলেন, হলগুলোতে বৈধভাবে শিক্ষার্থীদের উঠানোর বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছি। যাতে হলে অবৈধ কোন শিক্ষার্থী অবস্থান করতে না পারে। তাছাড়া হলের সিটে অবস্থান করা নিয়ে কোন ধরণের জটিলতা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য এসব অভিযান চালানো হচ্ছে। কেননা, হলগুলোতে বিভিন্ন মহলের প্রভাব খাটিয়ে অনেক শিক্ষার্থী অবৈধভাবে অবস্থা করতে দেখা গেছে। ফলে হলের বৈধ শিক্ষার্থীরা সিট না পেয়ে ভোগান্তিতে রয়েছে। আমরা চাই, সকলে বৈধভাবে নিজ নিজ সিটে অবস্থান করুক। হলের শৃঙ্খলা রক্ষার্থে এমন অভিযান চলমান থাকবে।

এর আগে আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল ছাত্রলীগের সভাপতি নেওয়াজ মোর্শেদ বলেছিলেন, 'আমার সামনে কোনো ছাত্রলীগ এই হল থেকে নামবেনা।'

তিনি বলেছিলেন,' কয়েকদিন আগে ছাত্রলীগের এক ছেলেকে নামিয়ে দিয়েছে। উনি বিএনপি, জামায়াত-শিবিরের এজেন্ডাকে এই হলে প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছেন। কিন্তু আমরা তো এটা করতে দিবোনা। আমার সামনে কোনো ছাত্রলীগ এই হল থেকে নামবেনা। যদি ছাত্রলীগ নামাতে হয়, আমাকে এই হল থেকে বহিষ্কার করে, হল ত্যাগ করিয়ে, তারপর ছত্রলীগকে নামাতে হবে। আমি এখানে সভাপতি থাকাবস্থায়, আমার সামনে আমার কোনো ছোটো বা বড়ভাই এই হল থেকে নামবেনা।'

এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, 'প্রভোস্ট আমাদের ছাত্রলীগের ছোটো ভাইদের কাছে সরাসরি এটা বলেছে যে, ছাত্রলীগ এই হলের মেইন শত্রু। সে একজন প্রভোস্ট হিসেবে এধরণের কথা কিভাবে বলে? তবে পরে ওনাকে আমি এবিষয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তখন উনি বলেছিলেন 'আমি বলি নাই'। উনি নিজেই ৪৪৮ নাম্বার রুমে দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে উঠিয়ে রেখেছেন, আমার কাছে তথ্য আছে। আমি কাল রাতে ওই রুমে গিয়ে ওই ছেলেকে পায়নি। উনি তাকে মেসে পাঠিয়ে দিয়েছেন।'

এই ছাত্রনেতা আরো বলেন, 'আর উনিতো বিএনপির রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত। শিক্ষার্থী থাকাকালীন উনি নবাব আব্দুল লতিফ হল ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। তারপরে ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী হয়। যখন সে ছাত্রদলের সভাপতি হতে পারে নাই, তখন সে বিরোধী দলের বা বিএনপির সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এখানে চাকরি পেয়েছে। সে এই হলে দায়িত্বে আসার আগে সব ভালোভাবেই চলেছে।'

তিনি আরো বলেন, 'কিছুদিন আগে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাংগঠনিক সম্পাদককে একটা সিঙ্গেল রুম দেওয়ার কথা ছিলো। আমি ওরজন্য সুপারিশ করেছিলাম। উনি যখন শুনেছেন যে এই ছেলে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটে আছে, তখন উনি ওকে আর ওই সিটটা দেয়নি। ওনার একটাই সমস্যা ছাত্রলীগ আর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে।'

এবিষয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, 'কে কোন আদর্শের সেটা বড় বিষয় না। আমি যখন এই হলের দায়িত্ব নিয়েছি, তখন আমি এই হলের প্রভোস্ট, আমার আর কোনো পরিচয় নাই। এই হলের ৬০০ শিক্ষার্থীর আমি অভিভাবক। আমি অন্য কিছুনা। আমি কি করি না করি, সেটা অন্য বিষয়।'

তিনি আরো বলেন, 'তারা বলছে আমরা এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছি। আর আমরা ছাত্রলীগের ১৫৭ জনকে সিট দিয়েছি। এর তালিকা আমার কাছে আছে। এর আগের প্রাধ্যক্ষ ৯০ জনকে দিয়েছেন, আমি বাকিদের দিয়েছি। ছাত্রলীগকে সিট দেওয়ার পরে যে ৯৪টা সিট খালি আছে, তার প্রেক্ষীতে আমরা ৬৩ জনকে সিট বরাদ্দ দিয়েছি ১৫-১৬ থেকে ১৮-১৯ সেশন পর্যন্ত। অনেকে অনেক কিছু বলতে পারে। কে কি বললো, তার প্রেক্ষীতে আমি কিছু বলতে পারবোনা। আমি সুষ্ঠুভাবে হল পরিচালনা করতে চাই।'

এরআগে, গত ২৩ জুন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত এক নোটিশের মাধ্যমে হলে অবস্থান করা অনাবাসিক, বহিরাগত ও অন্য হলের শিক্ষার্থীদের ২৯ জুনের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো। কোনো শিক্ষার্থী তাঁর সমস্যার বিষয়ে ব্যক্তিগতভাবে হল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ২৮ জুনের মধ্যে অভিভাবকসহ হল প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের নির্দেশও দেওয়া হয়েছিলো। তবে শর্ত অনুযায়ী কেউ দেখা করেননি। এমনকি অনাবাসিক কোনো শিক্ষার্থী নির্ধারিত সময়ের আগে নেমেও যাননি। ওই নোটিশে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হলে উঠতে বাধা দেওয়া হলে তাৎক্ষণিক আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল।

হল সূত্র ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ৯৪টি আসন খালি হয়। এরপর হল প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করে ভাইভা নিয়ে অ্যাকাডেমিক ফলাফল ও অন্যান্য বিবেচনায় ৬৬ জন শিক্ষার্থীকে হলে আসন বরাদ্দ দেয়। তবে এই ৬৬ জনের মধ্যে মাত্র ২২ জনকে তাদের আসনে তুলতে পেরেছিলো প্রশাসন। ৯৪টি আসনের বিপরীতে ৭২টি দখল হয়ে ছিলো। বৈধভাবে যাদের আসন দেওয়া হয়েছিলো, তাঁরাও অনাবাসিক দখলদারদের দ্বারা হুমকি পাচ্ছিলো। এমনকি হল থেকে নামিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছিলো।

হলে আবাসিকতা পাওয়া শিক্ষার্থীরা প্রায় প্রতিদিনই হলে গিয়ে নিজের সিটে ওঠার চেষ্টা করেছেন। কখনো কখনো হল প্রশাসন তাদের নিজ দায়িত্বে সিট খুঁজে নিয়ে উঠতেও বলেছিলেন। গত ১৬ জুন একজন অনাবাসিক শিক্ষার্থীর বিছানাপত্র হল প্রশাসন জব্দ করায় হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শামীম ওসমান হলের ফটকে তালা দেন। এই নেতাও অনাবাসিক শিক্ষার্থী। এরপর থেকে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কঠোর হয়েছে। প্রাধ্যক্ষ পরিষদও একাধিক সভা করেছে। সর্বশেষ, আজকে ১৮ জনকে সিটে তুলে দিলো তারা।

কেএস 

Link copied!