ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

পুষ্টি ও অর্থনীতিতে রঙিন চালে নতুন সম্ভাবনা

সাঈদা জাহান খুকী, বাকৃবি

সাঈদা জাহান খুকী, বাকৃবি

জানুয়ারি ২৫, ২০২৫, ০৭:০৭ পিএম

পুষ্টি ও অর্থনীতিতে রঙিন চালে নতুন সম্ভাবনা

বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে ধান চাষের সম্পর্ক ঐতিহ্যের মূলে গাঁথা। ভাত যেন বাঙালির হৃদয়ের কাছে এক চিরচেনা প্রশান্তি। সময় বদলেছে, বদলেছে খাদ্যাভ্যাস, তবু ভাতে তৃপ্তি খোঁজা বাঙালির চিরন্তন অভ্যাস। এ ধানের গল্পে নতুন মাত্রা যোগ করেছে রঙিন চাল। এই চালের উচ্চ পুষ্টিগুণ, ওষুধি গুণাবলি ও অর্থনৈতিক মূল্য খাদ্যনিরাপত্তা ও অর্থনীতিকে করতে পারে আরও সমৃদ্ধ।

রঙিন চালের অন্যতম বিশেষত্ব এর পুষ্টিগুণ। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, আঁশ, আয়রন এবং ভিটামিন বি পাওয়া যায়। বিশেষ করে এতে থাকা অ্যান্থোসায়ানিন নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান, যা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এমনকি এটি ক্যান্সার প্রতিরোধেও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে দাবি গবেষক দলের।

রঙিন চালের চাষ পদ্ধতি, ফলন ও পুষ্টিগুণ নিয়ে গবেষণা করে এমন সাফল্য পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির ও তার গবেষক দল।

তিন বছরের গবেষণায় তিনি এই সাফল্য পেয়েছেন।

গবেষক দলে আরও যুক্ত ছিলেন একই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর হোসেন-২, স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস ও সাগরিকা খাতুন।

শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গবেষণার বিষয়ে এসব তথ্য জানান প্রধান গবেষক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন একই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নেছার উদ্দিন, ড. মো. আলমগীর হোসেন-১ ও ড. মো. আলমগীর হোসেন-২।  

গবেষণার বিষয়ে প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির বলেন, রঙিন চাল (Oryza sativa L.) মূলত পাহাড়ি অঞ্চল এবং উদ্ভাবনী কৃষকদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তবে এটি এখন সাধারণ মানুষের মাঝেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চালের রঙ লাল, কালো, বাদামি কিংবা বেগুনি হতে পারে। আমরা মূলত লাল ও কালো রঙের চালটি নিয়ে গবেষণা করে এর মধ্যে থাকা পুষ্টিগুণের মাত্রা বের করেছি।

গবেষণায় দেখা গেছে, সাদা চালের চেয়ে কালো চালের ব্রাণে ২-৩গুণ খনিজ পদার্থ বিশেষত আয়রন ও জিংক বিদ্যমান। এগুলোর বাইরের আবরণে থাকা অ্যান্থোসায়ানিন এবং অন্যান্য ফাইটো-কেমিক্যাল উপাদান এ চালকে অনন্য করেছে। অ্যান্থোসায়ানিনের উপস্থিতির কারণে ব্রাণের রঙ লাল হয়ে থাকে।

রঙিন চালের পুষ্টিগুণের বিষয়ে প্রধান গবেষক বলেন, এই চাল শুধু দেখতে সুন্দরই নয়, এর রয়েছে অপরিসীম পুষ্টিগুণ এবং ঔষধি গুণাবলি। কালো, লাল, বেগুনি, এমনকি বাদামি রঙের এই চাল শুধু তার বাহারি চেহারার জন্য নয়, বরং স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্যও দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। রঙিন চাল থেকে ভাত, খিচুড়ি, বিরিয়ানি থেকে শুরু করে মুড়ি, চিড়া এবং বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরিও সম্ভব। সাধারণ সাদা চালের তুলনায় এতে বেশি পরিমাণে প্রোটিন, আঁশ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে।

চাষাবাদ ও ফলন সম্পর্কে প্রধান গবেষক জানান, রঙিন চাল চাষ সাধারণ ধানের মতোই সহজ। এটি মূলত আমন মৌসুমে চাষ হয়, তবে বোরো মৌসুমেও ফলন সম্ভব। দোআঁশ মাটি থেকে শুরু করে কাদামাটিতেও এই ধান ভালো জন্মায়। উপযুক্ত সার প্রয়োগে (ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি) ফলন প্রায় সাড়ে তিন টন পর্যন্ত হতে পারে। যদিও এর ফলন সাধারণ সাদা ধানের তুলনায় কিছুটা কম, তবে বাজারমূল্য অধিক হওয়ায় কৃষকেরা ক্ষতিপূরণ পুষিয়ে নিতে পারবে। এই ধানের একটি চ্যালেঞ্জ হলো কম রাসায়নিক সার সহনশীলতা এবং পাখি বা রোগবালাইয়ের প্রতি সংবেদনশীল। তাই উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন এবং আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন রয়েছে।

গবেষণার বিষয়ে সহযোগী গবেষক অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর হোসেন-২ বলেন, রঙিন চালের পুষ্টি উপাদান মূল বাইরের আবরণে থাকে। সাধারণ মিলে ছাঁটাইয়ের ফলে এর পুষ্টিগুণ কিছুটা কমে যেতে পারে। তবে বেশি পরিমাণে কমবে না। সবচেয়ে ভালো হয় ঢেঁকিতে ছাঁটাই করে খাবারের জন্য ব্যবহার করা।

ইএইচ

Link copied!