ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫
Amar Sangbad
সংগীতশিল্পী তাসরিফ খান

আমি টাকার কাছে বিক্রি হই নাই, দেশের সঙ্গে বেঈমানি করি নাই

বিনোদন ডেস্ক

বিনোদন ডেস্ক

আগস্ট ১৭, ২০২৪, ০৮:১৫ পিএম

আমি টাকার কাছে বিক্রি হই নাই, দেশের সঙ্গে বেঈমানি করি নাই

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। যদিও তার আগে জুলাইজুড়ে আন্দোলন করতে গিয়ে অনেক ছাত্র ও সাধারণ মানুষ পুলিশের গুলিতে মৃত্যুবরণ করেছেন। সে সময় অনেক তারকা, ইউটিউবার ও ইনফ্লুয়েন্সারও ছিলেন চাপের মুখে। তাদের মধ্যে অন্যতম সংগীতশিল্পী তাসরিফ খান।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে তাসরিফের গাওয়া ‘রাজার রাজ্যে সবাই গোলাম’ শীর্ষক গানটি ভাইরাল হয়। তাছাড়া আন্দোলনের পক্ষেও নানা ধরনের পোস্ট দিয়েছিলেন এ শিল্পী। ছিলেন মাঠের আন্দোলনেও আর তার জন্য তাকে মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট দিয়ে তারই বর্ণনা দিয়েছেন এ গায়ক। ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে ‘কিছু নির্মম ইতিহাস টাইমলাইনে থাকুক’ শিরোনাম দিয়ে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা উল্লেখ করে তাসরিফ লিখেছেন, ২৩ জুলাই রাত ১টার কথা বলছি। একজন সিনিয়র ইনফ্লুয়েন্সার কল দিয়ে বললেন, তাসরিফ, তোর বাসার নিচে নাম, চা খাইতে আসতেছি, গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা আছে।

৫ জুলাই থেকে ছাত্রদের পক্ষে বিভিন্ন পোস্ট করা, কবিতা লিখতে থাকা এবং ‘রাজার রাজ্যে সবাই গোলাম’ গানটা ফেসবুকে চলতে থাকায় সরকারি গুন্ডা বাহিনীর থ্রেটে আমি তখন বাসার বাইরে অবস্থান করছিলাম।

ওই সিনিয়র ইনফ্লুয়েন্সারের কথায় বিশ্বাস করে আমি তখন বাসার সামনে আসি। গাড়ি থেকে ৬-৭ জনের মতো নেমে আসে। ইনফ্লুয়েন্সার সাহেব আমাকে একটু সাইডে নিয়ে আস্তে করে বুঝিয়ে বলে, সঙ্গে যারা আছে তারা একটা এজেন্সির লোক এবং আইন প্রয়োগ সংস্থার বাহিনীর কয়েকজনও আছে এখানে। আমি তখন উনার কাছে জানতে চাই যে উনারা কেন এসেছেন এবং কি চাচ্ছেন মূলত। উনি তখন বলেন, সরকারি একটা কাজ আছে, এই সরকার আরও ৭-৮ বছর ক্ষমতায় থাকবে। আমরা ঠিকমতো বাঁচতে চাইলে সরকারের পক্ষে কাজ করতে হইব, এর বাইরে কোনো রাস্তা নাই। এই কথা বলে উনি আবার আমাকে গাড়ির কাছে নিয়ে যায়। সেই ৬-৭ জনের মধ্য থেকে একজন আমাকে বলেন, তাসরিফ, তোমাকে আমরা চিনি। আমরা তোমাকে একটা স্ক্রিপ্ট দিচ্ছি, ছোট্ট একটা ভিডিও করতে হবে। এই ভিডিওটা আমাদের কালকের মধ্যে লাগবে। পরশু সরাসরি প্রধানমন্ত্রী এই ভিডিওটা দেখবেন এবং তারপর তুমি আপলোড করবা। সেই ইনফ্লুয়েন্সার তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে আমাকে বলেন, দেখ তাসরিফ, পিএম’র চোখে পড়ার এটাই সুবর্ণ সুযোগ, ভিডিওটা ভালো করে কর, সরকার যতদিন আছে সুবিধা পাবি। কথা শেষ করার আগেই উনি পকেট থেকে এক লাখ টাকার তিনটি বান্ডেল, মোট তিন লাখ টাকা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেন এইটা সামান্য ছোট একটা গিফট। টাকা যত চাস, তত দেওয়া হবে, ভিডিওটা সুন্দর কইরা কর।

ঠিক এই সময় আমার ফোনে আমার ব্যান্ডের ড্রামার শান্তর নম্বর থেকে একটা ফোন আসে। ফোন রিসিভ করতেই শান্ত আমাকে কাঁদতে কাঁদতে বলে, তাসরিফ, পাঁচ-ছয় জন পুলিশ এবং সিভিল ড্রেসের কয়েকজন মিলে আমাকে রোল দিয়া সারা শরীরে মারছে। শান্তর কথা শুনে আমার হাত-পা একরকম কাঁপতে থাকে। আমি বোঝার চেষ্টা করি, এই মাইর খাওয়াটা কি আমাকে এদিকে রাজি করানোর জন্য, ভয় দেখানো? নাকি কেবলমাত্র একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা? শান্তর লাইন কেটে যায়। আমি আমার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয় দেয়া তাদেরকে বলি, ভাই, এইমাত্র কয়েকজন মিলে আমার ভাই, আমার ব্যান্ডের ড্রামার শান্তকে প্রচুর মারছে। ওরা জাস্ট আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে, আরেহ, দেশের যে অবস্থা, এটা এখন কিছু করা যাবে না। ওরে বলো বাসায় চলে যাইতে। আমার তখন মাথায় আসে, এখন যদি আমি ওদেরকে টাকা ফেরাই দেই অথবা কাজ করতে অস্বীকৃতি জানাই, তবে তারা আমাকে চাইলেই গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে ভিডিও করে জোরপূর্বক আপলোড করাতে পারে। আমি তাই মাথা ঠান্ডা করে ওদেরকে বলি ঠিক আছে, আমি দেখতেছি কি করতে পারি, কালকের মধ্যে জানাচ্ছি। ওরা আমাকে তখনও একরকম থ্রেট দিয়ে বলে, ভাই জানাচ্ছির সুযোগ নাই। সিচুয়েশন তো বুঝেনই। ভিডিও কালকেই লাগবে। ওদের সঙ্গে কথা শেষ করে আমি বাসায় ফেরত যাই।

তাসরিফ বলেন, বাসায় সবাইকে সব সিচুয়েশন জানিয়ে আমি আমার ম্যানেজার আয়মান সাবিতকে ফোন দিয়ে বলি, আয়মান, আমি বাসা ছেড়ে দিচ্ছি, এ এই ঘটনা ঘটছে। আমি তোকে নম্বর দিচ্ছি, তুই ওই এজেন্সিকে আমার বাসা থেকে তিন লাখ টাকা নিয়ে ওদেরকে দিয়ে দিবি কালকেই। আমি আপাতত বাসা ছেড়ে চলে যাচ্ছি, কারণ আমি বাসায় থাকলে ওরা আমাকে তুলে নিয়ে যাবে। সবশেষ তাসরিফ খান লিখেছেন, ওই রাতে আমি বাসা থেকে পালিয়ে যাই। আমি জানি কয়েকটা পোস্ট, কবিতা লেখা আর ‘রাজার রাজ্যে সবাই গোলাম’-এর মতো কিছু গান করা ছাড়া দেশের জন্য তেমন কিছুই করতে পারি নাই। তবে, আল্লাহ জানেন আর আমি জানি, আমি টাকার কাছে বিক্রি হই নাই, আর দেশের সঙ্গে বেঈমানি করি নাই।

আরএস

Link copied!