ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

ইত্যাদি এবার ঠাকুরগাঁওয়ের টংকনাথের রাজবাড়িতে

বিনোদন প্রতিবেদক

বিনোদন প্রতিবেদক

জানুয়ারি ২৪, ২০২৫, ১১:১০ পিএম

ইত্যাদি এবার ঠাকুরগাঁওয়ের টংকনাথের রাজবাড়িতে

সেই নব্বই দশক থেকেই শেকড়ের সন্ধানে ইত্যাদি স্টুডিওর চার দেয়াল থেকে বের হয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তুলে ধরছে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, প্রত্ননিদর্শন, আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

তারই ধারাবাহিকতায় এবারের পর্ব ধারণ করা হয়েছে ঐতিহ্য ও আর্থসামাজিক সম্ভাবনার জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে।

মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক সংরক্ষিত ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার রাজা টংকনাথের রাজবাড়ির সামনে। অনুষ্ঠান ধারণ উপলক্ষ্যে বর্ণিল আলোয় রাজবাড়ি যেন নতুন সাজে সেজেছিল। কেউ কেউ মন্তব্য করেন প্রায় ১০০ বছর পর রাজবাড়ি যেন তার হারানো যৌবন ও অতীত ঐতিহ্য ফিরে পেয়েছে।

ইত্যাদির ধারণ উপলক্ষ্যে পুরো ঠাকুরগাঁও জেলায় ছিল উৎসবের আমেজ। অনুষ্ঠানস্থলকে ঘিরে বসে জমজমাট মেলা। বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে দোকানিরা, ছিল নাগরদোলাও। রাণীশংকৈলে ধারণ হলেও দর্শকরা আসেন ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী জেলা পঞ্চগড় এবং দিনাজপুর থেকেও।

বিকাল ৩টা থেকেই আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানস্থলে আসতে শুরু করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় অনুষ্ঠানস্থল। আমন্ত্রিত দর্শক ছাড়াও অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ উপস্থিত হন তাদের ভালোবাসার অনুষ্ঠান দেখার জন্য। ফলে দুই কিলোমিটার ব্যাপী প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়।

এক পর্যায়ে দর্শকরা তাদের প্রিয় ইত্যাদি ও এর প্রাণপুরুষ হানিফ সংকেতকে দেখার জন্য বাঁধভাঙা জোয়ারের মত অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকে পড়ে। ফলে অনুষ্ঠান ধারণের সুবিধার্থে কিছু সময়ের জন্য অনুষ্ঠান ধারণ স্থগিত করা হয়, স্থানীয় প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতায় কিছুক্ষণ পরেই আবার ধারণ শুরু হয়।

স্থানীয়রা জানান, ইতোপূর্বে ঠাকুরগাঁওয়ে কখনও কোনো অনুষ্ঠানে এত দর্শক সমাগম হয়নি। অনুষ্ঠানস্থলে ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ লোক বেশি হওয়ার কারণে স্থানাভাবে অনেক দর্শকই আশেপাশের বিভিন্ন স্থাপনার ছাদ, রাস্তা, দেয়াল ও গাছের উপর উঠে তীব্র শীত উপেক্ষা করে দীর্ঘ সময় ধরে অবাক বিস্ময়ে উপভোগ করেছেন তাদের প্রিয় অনুষ্ঠানের ধারণ। কিছুক্ষণ পরপরই চলছিলো হাজার হাজার দর্শকের উচ্ছ্বাসপূর্ণ চিৎকার আর তালি বৃষ্টি। উল্লেখ্য দর্শকপ্রিয় ইত্যাদি এ বছর পা রেখেছে তার ৩৭তম বছরে।

এবারের ইত্যাদিতে রয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের সন্তান একসময়ের ঠাকুরগাঁওয়ের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রাণপুরুষ, বর্তমানে রাজনীতিবিদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার। সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক এই সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে তার জীবনের অনেক অজানা কথা।

এবারের অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী রবি চৌধুরী ও লিজা।

গানটির কথা লিখেছেন লিটন অধিকারী রিন্টু। সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন কিশোর দাস।

এছাড়াও অনুষ্ঠানের শুরুতেই রয়েছে ঠাকুরগাঁওকে নিয়ে মনিরুজ্জামান পলাশের কথায় একটি পরিচিতিমূলক গানের সঙ্গে নৃত্য। পরিবেশন করেছেন স্থানীয় শতাধিক নৃত্যশিল্পী।

নাচটির কোরিওগ্রাফি করেছে রোহিত খান তুহিন, কণ্ঠ দিয়েছেন তানজিনা রুমা, রাজীব, অয়ন চাকলাদার ও সানজিদা রিমি। গানটির সুর করেছেন হানিফ সংকেত এবং সংগীত আয়োজন করেছেন মেহেদী।

দর্শক পর্বের নিয়ম অনুযায়ী ধারণস্থান ঠাকুরগাঁওকে ঘিরে করা প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে উপস্থিত দর্শকের মাঝখান থেকে ৩ জন দর্শক নির্বাচন করা হয়। ২য় পর্বে নির্বাচিত দর্শকরা সাম্প্রতিক কিছু বিষয় নিয়ে রচিত একটি নাট্যাংশে অভিনয় করেন। যা ছিল বেশ উপভোগ্য।

শেকড় সন্ধানী ইত্যাদি সবসময়ই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রচার বিমুখ, জনকল্যাণে নিবেদিত মানুষদের তুলে ধরার পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চলের অচেনা-অজানা বিষয় ও তথ্যভিত্তিক শিক্ষামূলক প্রতিবেদন প্রচার করে আসছে। আর সেই ধারাবাহিকতায় এবারের পর্বেও রয়েছে কয়েকটি হৃদয় ছোঁয়া প্রতিবেদন। রয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের উপর একটি তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে অবস্থিত এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় আমগাছ, ঠাকুরগাঁওয়ের পনির বা চিজ উৎপাদন, লোকায়ন জীবন বৈচিত্র্য জাদুঘর এবং ধারণস্থান রাজা টংকনাথের রাজবাড়ির উপর রয়েছে একটি প্রতিবেদন।

দেশের অন্যতম দার্জিলিং জাতের কমলার বাগান ঠাকুরগাঁওয়ের অরেঞ্জ ভ্যালির উপর রয়েছে একটি চমৎকার প্রতিবেদন। যেখানে কমলার পাশাপাশি হলুদ রঙের মিষ্টি মাল্টার চাষও করা হয়। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের ক’জন প্রবীণ মিলে গড়ে তুলেছেন একটি ব্যতিক্রমধর্মী সংগঠন। এই সংগঠনের উপর রয়েছে একটি অনুকরণীয় প্রতিবেদন। ২০১৮ সালে যখন সুনামগঞ্জের টেকেরঘাটে ইত্যাদি ধারণ করা হয় তখন এখানে মোটরসাইকেল ছাড়া তেমন কোন বাহনই ছিল না এবং ইত্যাদির আগে কোন টেলিভিশন ক্যামেরাও সেখানে যায়নি। ইত্যাদি ধারণের পর টেকেরঘাটের বর্তমান অবস্থা নিয়ে এবারের পর্বে রয়েছে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। সাগরের বুকে ভাসমান দোকানের উপর একটি তথ্যভিত্তিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। রয়েছে কক্সবাজার জেলার টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের পল্লী চিকিৎসক ঝন্টু বড়ুয়ার উপর একটি মানবিক প্রতিবেদন। যিনি এ পর্যন্ত ৪১ জন মানসিক রোগীকে সুস্থ করে তাদের দেয়া ঠিকানা অনুযায়ী পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছেন। বিদেশি প্রতিবেদন পর্বে রয়েছে গণচীনের রাজধানী বেইজিং এ অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম পাবলিক স্পট বা জনসমাগম স্থল ঐতিহাসিক তিয়েনআনমেন স্কয়ারের উপর একটি তথ্যসমৃদ্ধ প্রতিবেদন।

ঠাকুরগাঁওয়ের মঞ্চে এবার নাতিকে দেখা গেলেও দেখা যায়নি নানিকে। সাথি হারা নাতি কি করেছে এবারের ইত্যাদিতে, দেখতে হলে অপেক্ষা করতে হবে অনুষ্ঠান প্রচারের দিন পর্যন্ত।

এছাড়াও ইত্যাদির নিয়মিত পর্ব চিঠিপত্র পর্ব ছাড়াও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় ও প্রসঙ্গ নিয়ে সামাজিক অসঙ্গতি ও সমাজ সংস্কারের উপর রয়েছে বেশ কিছু তীক্ষ্ণè ও তীর্যক নাট্যাংশ। জ্যোতিষের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, একালের বিবাহবার্ষিকীতে সেকালের উপহার, সময়ের বিবর্তনে ঘরোয়া ভাষার পরিবর্তন, সবজি বাজারে ঘোরগ্রস্থ ক্রেতা, চিৎকার সর্বস্ব উপস্থাপকের সাক্ষাৎকার, পারিবারিক শিক্ষা বনাম পারিপার্শ্বিক শিক্ষা, ইউটিউবের নেশায় বিপর্যস্ত পারিবারিক পরিবেশ, নিজের বেলায় ষোল আনা, দিন যায় কথা থাকে, চাপা আতঙ্কসহ বেশ কয়েকটি নাট্যাংশ।

এবারের ইত্যাদিতে উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা হলেন-সোলায়মান খোকা, বাবুল আহমেদ, আবদুল্লাহ রানা, মাহফুজুর রহমান বাবু, আল মামুন, সুভাশিষ ভৌমিক, আব্দুল আজিজ, মোমেনা চৌধুরী, জিল্লুর রহমান, মাহমুদুল ইসলাম মিঠু, কাজী আসাদ, আঞ্জুমান আরা শিরিন, মামুনুল হক টুটু, প্রাণ রায়, জয়রাজ, আমিন আজাদ, শাহেদ আলী, মুকিত জাকারিয়া, তারিক স্বপন, কামাল বায়েজিদ, বিলু বড়ুয়া, নিপু, আনোয়ার শাহী, জাহিদ শিকদার, জামিল হোসেন, আনন্দ খালেদ, আনোয়ারুল আলম সজল, বেলাল আহমেদ মুরাদ, সাদিয়া তানজিন, নজরুল ইসলাম, মনজুর আলম, সিয়াম নাসির, সাবরিনা নিসা, রুমা, সুর্বণা মজুমদার, মতিউর রহমানসহ আরো অনেকে। বরাবরের মত এবারও ইত্যাদির শিল্প নির্দেশনা ও মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন ইত্যাদির নিয়মিত শিল্প নির্দেশক মুকিমুল আনোয়ার মুকিম। পরিচালকের সহকারী হিসাবে ছিলেন যথারীতি রানা সরকার ও মোহাম্মদ মামুন।

গণমানুষের প্রিয় অনুষ্ঠান ইত্যাদির এই পর্বটি আগামী ৩১ জানুয়ারি, শুক্রবার-রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর প্রচারিত হবে বাংলাদেশ টেলিভিশনে। ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন। ইত্যাদি স্পন্সর করেছে যথারীতি কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড।

ইএইচ

Link copied!