জুন ১৪, ২০২৫, ১২:১৬ পিএম
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ এখন চরমে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে ইরান একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। হামলায় অন্তত ৮০ জন আহত হন, যাদের মধ্যে দুজন পরবর্তীতে মারা গেছেন।
টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, হামলার সময় তেলআবিবসহ বিভিন্ন শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। মধ্য ইসরায়েলের ওপর দিয়ে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা গেছে। তেলআবিবের একটি বহুতল ভবন ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে আংশিক ধসে পড়ে। ভবনের নিচে চাপা পড়ে গুরুতর আহত এক বেসামরিক নাগরিককে উদ্ধার করা হলেও তিনি পরে মারা যান।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, এক রাতে অন্তত চার দফা হামলা চালানো হয়েছে। প্রতিটি দফায় ছোড়া হয়েছে ডজনখানেক ক্ষেপণাস্ত্র। অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বাধাপ্রাপ্ত হলেও কিছু ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভেদ করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, একটি বাধাপ্রাপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রের বড় একটি টুকরো উত্তর ইসরায়েলের এক শহরে আঘাত হানে, যার ফলে বসতবাড়ির ক্ষতি হয়। এছাড়া একাধিক ব্যক্তি আহত হন আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটতে গিয়ে বা মানসিক আতঙ্কে।
আইডিএফ মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডিফ্রিন বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভূপাতিত করেছে বা দেশে ঢোকার আগেই ভূপাতিত হয়েছে। কিছু ক্ষেপণাস্ত্রের খণ্ড ভবনে আঘাত করেছে।
এই হামলা প্রতিহত করতে ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একজন মার্কিন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, ইসরায়েলের ওপর ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের কিছু অংশ ভূপাতিত করতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ভূমিকা রেখেছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক আক্রমণের পাল্টা জবাব হিসেবেই এই হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলের গণমাধ্যম বলছে, সম্প্রতি ইসরায়েলের বড় হামলায় ইরানের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনা নাতানজসহ একাধিক সামরিক স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে এবং উচ্চপর্যায়ের কমান্ডারদের হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, “ইহুদিবাদী সরকার তার অপরাধের পরিণতি থেকে রেহাই পাবে না। ইরানি জাতিকে নিশ্চিত করতে হবে, আমাদের প্রতিক্রিয়া হবে পূর্ণমাত্রায়, অর্ধেক নয়।”
ইরানের বিপ্লবী গার্ড জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক ও কৌশলগত স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে।
হামলার আগে রাত ৯টার পরপরই ইসরায়েলের জনগণকে সতর্কবার্তা পাঠানো হয় এবং আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। স্বাভাবিক ১০ মিনিটের বদলে এবার নিরাপদ ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সবাইকে আশ্রয়ে থাকার নির্দেশ দেয় হোম ফ্রন্ট কমান্ড।
আইডিএফ জনগণকে হামলার ভিডিও বা ছবি সামাজিক মাধ্যমে না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে। বলা হয়— শত্রুরা এসব ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তাদের হামলা আরও উন্নত করে।
বিআরইউ