জুলাই ১, ২০২৫, ১১:০৩ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ব্যয় পরিকল্পনার আবারও তীব্র সমালোচনা করেছেন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের এবং বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও স্পেসএক্স প্রধান ইলন মাস্ক।
তিনি বলেছেন, এই বিল দেশকে অনিয়ন্ত্রিত ঋণের পথে ঠেলে দিচ্ছে। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এই বিলিয়নিয়ার উদ্যোক্তা এমন একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন— যেটি সত্যিকার অর্থে সাধারণ মানুষের কথা বলে।
তার মতে, আমরা একদলীয় দেশের বাসিন্দা এবং এখন সময় নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের। মঙ্গলবার (১ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
সোমবার নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে মাস্ক লেখেন, এটা স্পষ্ট যে আমরা একদলীয় দেশের বাসিন্দা—নাম ‘পোর্কি পিগ পার্টি’! এখন সময় নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের, যারা সত্যিই জনগণের কথা ভাববে।
মূলত মাস্ক যে বিলটির কথা বলছেন, তা যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ঋণসীমা ৫ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। মাস্ক এই পরিকল্পনাকে ‘পাগলামী পর্যায়ের খরচ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন, দুই দলের রাজনীতিবিদরা বাজেট ও ঋণের বিষয়ে দায়িত্বশীল নয়।
অবশ্য এর আগেও এই বিল নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে প্রকাশ্যে বাকযুদ্ধে জড়িয়েছিলেন মাস্ক। যদিও পরে তার ভাষা কিছুটা নমনীয় হয়, কিন্তু এ বিতর্ক স্পষ্ট করে দেয়— দেশের প্রভাবশালী ব্যবসায়িক নেতাদের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে গভীর মতপার্থক্য রয়েছে।
এদিকে মাস্কের মন্তব্যের পরে টেসলার শেয়ারমূল্য বড় ধরনের পতনের মুখে পড়ে। কার্যত মুহূর্তেই কোম্পানির বাজারমূল্য থেকে হারিয়ে যায় প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলার। যদিও পরে শেয়ার দর কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়, এই ঘটনা বাজারে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক নেতাদের প্রকাশ্য দ্বন্দ্বের প্রভাব কতটা মারাত্মক হতে পারে, তা দেখিয়ে দিয়েছে।
অন্যদিকে মাস্ক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি এই পাগলামিপূর্ণ ব্যয় বিল পাস হয়, তাহলে পরদিনই ‘আমেরিকা পার্টি’ গঠিত হবে।
তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের এখন ডেমোক্র্যাট-রিপাবলিকান ইউনিপার্টির বাইরে একটি বিকল্প দল দরকার, যাতে জনগণের আসল কণ্ঠস্বর উঠে আসতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ রয়েছে, ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান—এই দুই দলের আধিপত্য রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে সংকুচিত করে ফেলেছে। যদিও নতুন দল গঠনে সাংবিধানিক বাধা নেই, তবু বাস্তব পরিস্থিতিতে তৃতীয় দল বা নতুন রাজনৈতিক আন্দোলনের দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য পাওয়া কঠিন।
বিআরইউ