ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

এখনও জ্ঞান ফেরেনি সেই শিশুটির, মায়ের আহাজারি

আমার সংবাদ ডেস্ক

আমার সংবাদ ডেস্ক

মার্চ ৮, ২০২৫, ০২:৫১ পিএম

এখনও জ্ঞান ফেরেনি সেই শিশুটির, মায়ের আহাজারি

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির জ্ঞান ফেরেনি এখনও। দুই দিন ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (পিআইসিইউ) রাখা হয়েছে তাকে। শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে শিশুটি অচেতন অবস্থায় রয়েছে।

শনিবার সকালে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে ভুক্তভোগীর একজন স্বজন জানান, শিশুটি এখনও অচেতন। তার জ্ঞান ফেরেনি। চিকিৎসকেরা বলেছেন, তাঁরা আগামী ২৪ ঘণ্টা তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। আট বছরের ছোট্ট এই শিশুটি বুধবার গভীর রাতে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে বাড়িতে ধর্ষণের শিকার হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

হাসপাতালের বিছানায় চিকিৎসা চলছে আট বছরের শিশুর। কথা বলছে না, নড়াচড়াও নেই। অচেতন অবস্থায় শুয়ে আছে সে। মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ করছে ধর্ষণের শিকার এই শিশুটি। আর তার পাশে বসে কাঁদছেন মা। সন্তানের এই অবস্থায় তিনি যেন পৃথিবীর সবচেয়ে অসহায় মানুষ। এক হাত দিয়ে মেয়ের মাথা স্পর্শ করছেন, আরেক হাতে নিজের চোখের পানি মুছছেন। মেয়ের করুণ অবস্থা দেখে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি।

প্রধান অভিযুক্ত বোনের শ্বশুর হিটু শেখ (৪৭) ও স্বামী সজিব শেখকে (১৮) আটক করেছে পুলিশ। এদিকে শিশুকে ধর্ষণের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে মাগুরার সাধারণ মানুষ। অভিযুক্তের শাস্তির দাবিতে শুক্রবার দুপুরে শহরে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল হয়। পরে তারা মাগুরা সদর থানা ঘেরাও করে।

স্বজন জানান, শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এই হাসপাতালেও তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। ফলে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি ইউনিটের একজন চিকিৎসক বলেন, শিশুটির জ্ঞান ফেরেনি। তার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। চিকিৎসা চলছে।

মাগুরা সদর থানার ওসি আইয়ুব আলী বলেন, মাগুরা শহরতলির নিজনান্দুয়ালী গ্রামে আট বছরের শিশু ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহজনকভাবে শিশুটির ভগ্নিপতি সজিব শেখ ও তার বাবা হিটু শেখকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেয়নি। ফলে মামলা হয়নি।

শিশুটির স্বজন জানান, তার বাবা ভ্যানচালক। তাদের বাড়ি মাগুরায়। মাস চারেক আগে শিশুর বড় বোনের বিয়ে হয় মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামের রাজমিস্ত্রি হিটু শেখের ছেলে সজিব শেখের সঙ্গে। সজিবও রাজমিস্ত্রি। কিছুদিন আগে শিশুটির বোনের বাড়িতে বেড়াতে যায়। সে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী।

শুক্রবার দুপুরে ঢামেক হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ২২৩ নম্বর ওয়ার্ডে (পিআইসিইউ) শিশুটির পাশে বসেছিলেন তার মা। কাঁদতে কাঁদতে ওয়ার্ডের গেটের সামনে অবস্থান করা স্বজনদের কাছে আসেন। তখনও কাঁদছিলেন। কাঁদতে কাঁদতে এক স্বজনকে ধরে বলেন, আমার মেয়ে কথা বলছে না। ডাকলেও সাড়া দিচ্ছে না। মেয়ের কী হবে? ওদের ফাঁসি চাই।

তিনি বলেন, তাঁর বড় মেয়ে তাঁকে জানান, শ্বশুরবাড়িতে রাতে তার ভয় লাগে। এ জন্য ছোট বোনকে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যেতে চায়। তার আবদারের মুখে শনিবার ছোট মেয়েকে বড় মেয়ের সঙ্গে পাঠিয়ে দেন। কিছুদিন থাকার পর বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। বুধবার রাতে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়। পরে গলায় কিছু পেঁচিয়ে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।

শিশুটির মামাতো ভাই বলেন, বুধবার গভীর রাতে তাকে ধর্ষণ করে তারই দুলাভাইয়ের বাবা হিটু শেখ। এ ঘটনা তার বড় বোন দেখে ফেলায় তাঁকে ঘরে আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করে তাঁর শ্বশুর ও স্বামী। এ ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্যও হুমকি দেওয়া হয়। তাঁর কাছে মোবাইল ফোন না থাকায় তিনি বিষয়টি মা-বাবাকে জানাতে পারেননি। শিশুটির প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়। এ অবস্থায় তাকে রাতে বাড়িতেই রাখা হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরদিন সকালে সজিবের মা তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে শিশুটি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে রেখে পালিয়ে যান তাঁর শাশুড়ি। পরে হাসপাতাল থেকে সংশ্লিষ্ট থানায় খবর দেওয়া হয়। এর পর সংবাদ পেয়ে শিশুটির মাসহ স্বজন ছুটে যান হাসপাতালে।

মাগুরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডা. সুবাস রঞ্জন হালদার বলেন, শিশুটিকে প্রথমে শ্বাসকষ্ট রোগী হিসেবে নিয়ে আসা হয়। পরে মেডিসিন বিভাগে নিয়ে গেলে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার আলামত পাওয়া গেছে। মেয়েটির অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়। যে কারণে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

শিশুটির মামাতো ভাই বলেন, তাঁর ফুফাতো বোনের গলায় ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। কিছু জায়গায় আঁচড়ের দাগ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে গলাটিপে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।

স্বজনরা জানান, বিয়ের মাসখানেক পরে শিশুটির বড় বোনকেও পাশবিক নির্যাতনের চেষ্টা করেছিলেন তাঁর শ্বশুর হিটু শেখ। কিন্তু মেয়ের বাবা দরিদ্র হওয়ায় বিষয়টি জানার পরও চুপ ছিলেন। বড় বোনও শুক্রবার ঢামেক হাসপাতালে এসেছিলেন। তবে বিকেলে তাঁকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

আরএস

Link copied!