Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১০ মে, ২০২৪,

সরকারের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: জামায়াত আমির

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৪, ০৭:৫৯ পিএম


সরকারের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: জামায়াত আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার আজ ভূলুণ্ঠিত। জনগণকে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে।

বলেন, দেশে জানমাল, ইজ্জতের কোনো নিরাপত্তা নেই। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মদদে বর্তমান আওয়ামী সরকার নানা কূটকৌশলে গত ৭ জানুয়ারি এক অদ্ভুত ডামি নির্বাচন করে জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই আবারো ক্ষমতা দখল করেছে। জনগণ সরকারের এই ডামি নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে।

জাতিসংঘ ও গণতান্ত্রিক বিশ্ব সরকারের ডামি নির্বাচনকে এখনো স্বীকৃতি দেয়নি। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক বিশ্ব থেকে একঘরে হওয়ার উপক্রম হয়েছে। সরকারের ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সরকারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শুক্রবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত এক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- সদ্য কারামুক্ত সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ.টি.এম মাসুম, এ.এইচ.এম হামিদুর রহমান আজাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, অধ্যক্ষ মো. ইজ্জত উল্লাহ, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম ভুঁইয়া। 

আরও বক্তব্য দেন- কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির, অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন, কামাল হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নান প্রমুখ। 

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, কুরআনের সবগুলো বিধানই সমাজে কায়েম করা ফরজ। কোনো একটি বিধান অস্বীকার করলে কাফির বলে গণ্য হবেন। অথচ আমাদের দেশে কুরআনের বিধান চালু নেই। এজন্য নাগরিকরা তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কুরআনের বিধান চালু হলে মানুষ প্রাপ্য অধিকার ফিরে পাবে। মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে ইসলামকে বিজয়ী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমাদেরকে শপথ নিতে হবে এ পথে হয়ত আমরা বিজয়ী হবো নতুবা আমাদের জীবন চলে যাবে তবুও এ থেকে আমরা বিচ্যুত হবো না। মানুষের ঘরে ঘরে আল্লাহ দ্বিনের দাওয়াত ও জামায়াতের আহ্বান পৌঁছে দিতে হবে। জামায়াতে ইসলামীর জনশক্তিদের নিজেদের পরিবার, প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনের হক আদায় করতে হবে।

অধ্যাপক মিয়া গেলাম পারওয়ার বলেন, আজ প্রায় তিন বছর পর আপনাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ করে দেয়ায় মহান রবের শুকরিয়া আদায় করছি। তিন বছর পর মুক্ত বাতাসে জুমার নামাজ আদায় করতে পারবো। আমি আপনাদের দোয়া নেয়ার জন্য আজকের প্রোগ্রামে শরিক হয়েছি। কারাবন্দি আমীর আপনাদেরকে সালাম জানিয়েছেন। সকল জুলুমের অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য জামায়াতে ইসলামী কাজ করে যাচ্ছে। হাজার হাজার সহযোগী সদস্য যদি ঠিকমতো দাওয়াতি কাজ করে তবে এদেশের ঘরে ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে যাবে। আল্লাহর দ্বীনকে বিজয় করার জন্য আমরা এ কাফেলায় শরিক হয়েছি। জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও সে পথে আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ।

মাওলানা এটিএম মাসুম বলেন, কুরআনের সঙ্গে আমাদের নিজের জীবনকে মেলাতে হবে। কেয়ামতের কঠিন দিনে এই কুরআনই সুপারিশকারী হবে। ইসলামী আন্দোলনের সহযোগী সদস্য হিসেবে কুরআনের চর্চা কতখানি করতে পারছি তা অনুধাবন করতে হবে। আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াত ও রাসুল সা. আদর্শ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। মক্কায় ১৩ বছর মানুষের মাঝে আল্লাহ রাসুল সা. ইকামাতে দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছিলেন। ফলে অতি অল্প সময়ে মদিনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠালাভ করে। জামায়াত বাংলাদেশে একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই।  

এ.এইচ.এম হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, আগামী দিনের ইসলামী বিপ্লব সাধনে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণই হবে মূল বাতিঘর। জামায়াতের সহযোগী ভাইদের আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করতে মাঠে ময়দানে ছড়িয়ে পড়তে হবে। শুধু ত্রাণ বিতরণ নয় বরং অসহায় মানুষের সুখে দুঃখে পাশে থাকতে হবে। অসহায় মানুষকে আর্থিকভাবে উন্নয়ন করতে জামায়াত কাজ করে যাচ্ছে।

সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ইকামাতে দ্বীনের কাজ করা প্রত্যেক মুসলমানদের ওপর ফরজ। এর মাধ্যমে আমরা দুনিয়া ও আখেরাতে সফল হতে চাই। এজন্য কুরআন ও হাদিস থেকে জ্ঞানার্জন করে আমাদের ব্যক্তি, পারিবারিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ইসলামের বিধানকে অনুসরণ করতে হবে। ইসলামী সমাজ বিপ্লবের জন্য আমাদেরকে সমাজ পরিবর্তনের যতগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে তা মোকাবেলা করার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।

এআর/ইএইচ

Link copied!