Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

আল-হাদিস

‘দুনিয়া মুমিনের জন্য জেলখানা, কাফিরের জন্য বেহেশত’

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া

আগস্ট ১২, ২০২২, ০৭:৫৭ পিএম


‘দুনিয়া মুমিনের জন্য জেলখানা, কাফিরের জন্য বেহেশত’

মানুষের দায়িত্ব হলো জগতের সকল কিছুর মালিক আল্লাহর ইবাদত করা। কিছু মানুষ মনে করে জীবনের উদ্দেশ্য হলো কেবল ধন-সম্পদ অর্জন, ক্রীড়া-কৌতুক, যশ-খ্যাতি ও সন্তান-সন্ততির প্রতিযোগিতা করা। তারা জীবনকে উপভোগ করেই আনন্দ পায়। প্রকৃত পক্ষে মানবজীবনের মূল উদ্দেশ্য সেটি নয়। বরং জীবনের মূল উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর পরিচয় লাভ করা। ঐ সমস্ত মানুষ গুলো সেটি ভুলে গিয়ে পার্থিব জীবনে ভোগ বিলাসেই মগ্ন থাকে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, পার্থিব জীবন ধোঁকা ছাড়া অন্য কিছুই নয়। (সূরা আলে ইমরান-১৮৬)।

وَعَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، عَن رَسُولِ اللهِ ﷺ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «الدُّنْيَا سِجْنُ الْمُؤْمِنِ، وَجَنَّةُ الكَافِرِ ». رواه مسلم

বাংলা অনুবাদ: আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দুনিয়া মুমিনের জন্য জেলখানা এবং কাফিরের জন্য বেহেশত। (মুসলিম ২৯৫৬, তিরমিযি ২৩২৪, ইবন মাজাহ ৪১১৩, আহমদ ৮০৯০, ২৭৪৯১, ৯৯১৬)

মুমিন দুনিয়াতে দীর্ঘদিন থাকার ইচ্ছা পোষণ করতে পারে না। কেননা দুনিয়াতে দীর্ঘদিন থাকার ইচ্ছা পোষণ করার মাধ্যমে বিভিন্ন লোভ লালসা তাকে গ্রাস করে ফেলে। যেহেতু আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনই আমাদের জীবনের মূল উদ্দেশ্য তাই আমাদের যাবতীয় কর্মকান্ড তারই নির্দেশ মোতাবেক হওয়া জরুরী। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন রাসূলে পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কাধেঁ হাত রাখলেন এবং বললেন, তুমি দুনিয়ায় এমনভাবে থাকো যেন তুমি একজন মুসাফির অথবা বিদেশি। হযরত ইবনে উমর (রাঃ) বলতেন,“যখন সন্ধ্যায় উপনীত হবে তখন তোমরা সকালের অপেক্ষা করোনা। আর যখন তোমার সকাল হয় তখন সন্ধ্যার জন্য অপেক্ষা করো না। অসুস্থ হওয়ার আগে সুস্থতাকে কাজে লাগাও, আর তোমাদের মৃত্যুর জন্য জীবিতাবস্থায় পাথেয় জোগাড় করে নাও। (সহীহ বুখারী-৬৪১৬)।

পৃথিবীতে আল্লাহ তায়ালা অবিশ্বাসীদের প্রচুর পরিমাণ সম্পদ দান করেছেন। যার কারণে সারা পৃথিবীতে তারা অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে। পক্ষান্তরে মুমিনগণ তাদের তুলনায় নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বের মধ্যে অনেক পিছিয়ে। এ অবস্থা দেখে কোনো ঈমানদার বিভ্রান্ত হতে পারবে না। হযরত উকবা ইবনে আমের (রাঃ) থেকে বর্ণিত নবি করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেছেন, যখন তোমরা দেখতে পাবে যে, কোনো ব্যক্তির পাপকাজ ও নাফরমানি সত্ত্বেও তার বাসনা অনুযায়ী দুনিয়ার অফুরন্ত নেয়ামত ভোগ করছেন, তখন এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে অবকাশ বা ঢিলাদান ছাড়া অন্য কিছু নয়।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে ব্যক্তি পার্থিব জীবন ও তার চাকচিক্যই কামনা করে, হয় আমি তাদের দুনিয়াতেই তাদের আমলের প্রতিফল ভোগ করিয়ে দেব এবং তাদের প্রতি কিছুমাত্র কমতি করা হয়না। এরাই হল সেসব লোক আখিরাতে যাদের জন্য আগুন ছাড়া কিছুই নেই। তারা এখানে যা কিছু করেছিল সবই বরবাদ করেছে, আর যা কিছু উপার্জন করেছিল সবই বিনষ্ট হলো। (সূরা হুদ : ১৫-১৬)

এবি

Link copied!