ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
রিজার্ভ চুরি মামলা

বাইরে সমঝোতার চেষ্টা!

রেদওয়ানুল হক

জানুয়ারি ৩০, ২০২৩, ০১:৫৫ এএম

বাইরে সমঝোতার চেষ্টা!
  • বৈঠকের উদ্দেশ্যে ফিলিপাইনে বাংলাদেশি কর্মকর্তারা
  • সমঝোতা না হলে চলবে মামলা, আদেশের বিরুদ্ধে ফিলিপাইনের আপিল

সাধারণত মানিলন্ডারিং আইনে সমঝোতার সুযোগ থাকে না -ড. শাহদীন মালিক
আপিল হলেও আলোচনার সুযোগ রয়েছে -ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় সমঝোতা বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও ফিলিপাই। যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে এ বৈঠক ফিলিপাইনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে যোগ দিতে ইতোমধ্যে দেশটিতে পৌঁছেছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।

তবে আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ফিলিপাইন আপিল করায় দেশটি সমঝোতা বৈঠকে বসবে কি-না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

আইনজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত মানিলন্ডারিং আইনে সমঝোতার সুযোগ থাকে না। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের আদালত সমঝোতার সুযোগ দিয়েছে, তাতে বোঝা যায়- সে দেশের আইনে এ ধরনের বিধান রয়েছে। তবে ফিলিপাইন সমঝোতায় বসতে বাধ্য নয়। তারা আইনি লড়াই অব্যাহত রাখতে পারে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক আমার সংবাদকে বলেন, ‍‍`যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের দেয়া রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের আইনি সংস্থা আলোচনার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আপিলের কারণে আলোচনায় কোনো বাধা সৃষ্টি হবে কি-না এ বিষয়ে বিএফআইইউর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করা হয়নি।‍‍`

বিএফআইইউ সূত্রগুলো বলছে, তারা আলোচনার বিষয়ে আশাবাদী। তাই বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের সেখানে পাঠানো হয়েছে। গত শনিবার বাংলাদেশ থেকে একটি প্রতিনিধি দল ফিলিপাইন গেছে। প্রতিনিধি দলে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসিসহ সিআইডির দুজন করে কর্মকর্তা আছেন। দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকেও বৈঠকে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাসও বৈঠকে যোগ দেবেন।

সংস্থাটির এক অভ্যন্তরীণ আদেশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার রাতে বিএফআইইউ প্রধানের সাথে অতিরিক্ত পরিচালক কামাল হোসেন ও যুগ্ম পরিচালক খন্দকার আসিফ রব্বানি ফিলিপাইনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ার কথা। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেখানে থাকবেন। এ সময়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা ছাড়াও ফিলিপাইনের মুদ্রা বিনিময় প্রতিষ্ঠান ফিলরেমের সম্পত্তি ক্রোকের এক মামলায় সাক্ষ্য দেবেন তারা। মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্সের আওতায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আবেদনের বিষয়ে এ শুনানি হবে। এর আগে রিজার্ভ চুরির মামলার বিষয়ে ফিলিপাইনের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশন (আরসিবিসি) ও অন্যদের সমঝোতার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট কোর্ট। আদালত আগামী ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই সমঝোতা করতে বলেছেন।

এ বিষয়ে বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক আমার সংবাদকে বলেন, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী মানিলন্ডারিং মামলায় সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আদালত কি কারণে সমঝোতার আদেশ দিয়েছে তা আমার বোধগম্য নয়। সে দেশের আইনে এমন বিধান থাকতে পারে।

আপিলের বিষয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আইন বিষয়ে যারা অভিজ্ঞ তারা এ সম্পর্কে ভালো বলতে পারবেন।

কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম আমার সংবাদকে বলেন, ‍‍`ফিলিপাইন মামলা বাতিলের যে আবেদন করেছিল তা আদালত বাতিল করে দিয়েছে। ফলে আইনি প্রক্রিয়ায় আর কোনো বাধা নেই। একই সাথে আদালত সমঝোতার আদেশ দিয়েছে। এখন ফিলিপাইন চাইলে আলোচনায় বসতে পারে। কিন্তু তারা বাধ্য নয়। সমঝোতা না হলে মামলা চলবে। বাংলাদেশের পক্ষে আদেশের বিরুদ্ধে তাদের যে আপিল সেটি আলোচনায় কোনো প্রভাব ফেলবে না।‍‍`

গত ১৬ জানুয়ারি দেশের আর্থিক গেয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউ জানায়, ফিলিপাইনের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের (আরসিবিসি) সহযোগিতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়েছে। তাই রিজার্ভ চুরির ঘটনায় আরসিবিসিসহ অভিযুক্ত ছয়জনের দায়ের করা মামলা খারিজ করে দিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে রায় দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট (স্টেট কোর্ট)। ফলে রিজার্ভের অর্থ ফেরত পেতে বাংলাদেশের করা মামলা পরিচালনায় আর কোনো বাধা রইল না। আরসিবিসিসহ অন্যান্য ১৮ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা রয়েছে।

বিএফআইইউ জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে সংঘটিত হয়েছে বিবেচনায় ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট ফর দ্য সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট অব নিউইয়র্কে (ফেডারেল কোর্ট) আরসিবিসিসহ ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। পরে আরসিবিসিসহ ছয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের মামলা বাতিল করার (মোশান চু ডিসমিস) আবেদন করে। বিভিন্ন আইনি প্রক্রিয়ার পর ২০২০ সালের ২০ মার্চ ফেডারেল আদালত ফিলিপাইনের বিভিন্ন বিবাদী কর্তৃক দায়ের করা আবেদন খারিজ করে দিয়ে মামলাটি ফেডারেল কোর্টের পরিবর্তে স্টেট কোর্টে পরিচালনার নির্দেশ দেয়।

সেই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৭ মে বাংলাদেশ ব্যাংক আবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সুপ্রিম কোর্টে (স্টেট কোর্ট) আরসিবিসিসহ ফিলিপাইনের ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলা দায়েরের পর ছয় বিবাদী ফেডারেল কোর্টের মতো এই কোর্টেও মামলা বাতিলের আবেদন করে। বিবাদীপক্ষের আবেদনের বিষয়ে ২০২১ সালের ১৪ জুলাই ও ১৪ অক্টোবর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। নিউইয়র্ক কাউন্টি সুপ্রিম কোর্ট ২০২২ সালের ৮ এপ্রিল মামলার আংশিক রায়ে দুই প্রতিষ্ঠানকে অব্যাহতি দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক আপিল আবেদন করে, যা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

আদালত তার রায়ে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে, নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির ক্ষেত্রে আরসিবিসির উদ্দেশ্যপ্রণোদিত জোগসাজশ ছিল। আদালতের রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়, আরসিবিসির নিউইয়র্কের হিসাব ব্যবহার না হলে এবং ফিলিপাইনে আরসিবিসি অভিযুক্তদের সহযোগিতা না করলে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে ওই অর্থ অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ ছিল না।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের ইতিহাসে রিজার্ভ চুরির সবচেয়ে বড় এই ঘটনা ঘটেছিল ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে। সেই রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে আট কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। কম্পিউটার হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে পাচার হওয়া এই অর্থ প্রথমে গিয়েছিল ফিলিপাইনের মাকাতি শহরের রিজাল ব্যাংকের চারটি ভুয়া অ্যাকাউন্টে। তারপর সেখান থেকে দ্রুত এই অর্থ উত্তোলন করেন হ্যাকাররা। শেষ পর্যন্ত মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের সহযোগিতায় মাত্র দেড় কোটি ডলার উদ্ধারে সমর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। খোয়া যাওয়া বাকি অর্থের ফেরত প্রক্রিয়া মামলায় ঝুলে আছে।

Link copied!