ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

৫২ লাখ গ্রাহকের ভোগান্তি

মহিউদ্দিন রাব্বানি

ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩, ১২:১০ পিএম

৫২ লাখ গ্রাহকের ভোগান্তি

বিদ্যুতে গ্রাহকসেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১১ সালে প্রি-পেইড মিটার চালু করা হয়। এতে উৎপাদিত বিদ্যুতের সদ্ব্যবহার ও অপচয় রোধ এবং স্বয়ংক্রিয় বিলিং সুবিধা থাকলেও দিন দিন বেড়েই চলেছে গ্রাহকের ভোগান্তি। প্রতিনিয়ত যুক্ত হচ্ছে নানা কারিগরি ত্রুটিও। নানা অসুবিধার মধ্যেই যুক্ত হয় গ্রাহকের ডিমান্ড চার্জ, এনার্জি চার্জ, মিটারের ভাড়া এবং ভ্যাট। এছাড়া প্রি-পেইড মিটারের কারণে ওভারলোডে বিদ্যুৎ প্রবাহ আপনাআপনি  বন্ধ হয়ে যায়। এসবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সংখ্যা বিড়ম্বনাও। সম্প্রতি বিদ্যুতের দাম পরিবর্তনের ফলে বেড়েছে প্রি-পেইড মিটার রিচার্জের টোকেনের ডিজিট বা সংখ্যাও। আবাসিক মিটারের ক্ষেত্রে এই ডিজিটের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২৪০টিতে, যা সাধারণত অন্যান্য সময়ে থাকে ২০টি। অর্থাৎ ১২ গুণ বেশি। বিষয়টিকে রীতিমতো ব্যাপক ভোগান্তির কারণ বলে মনে করছেন বিদ্যুতের সাধারণ গ্রাহকরা।

গ্রাহকরা বলছেন, বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটার রিচার্জ করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা। রিচার্জ করার সময় তাদের স্বাভাবিকের চেয়ে ১২ গুণ দীর্ঘ ডিজিট চাপতে হচ্ছে। আর তা করতে গিয়ে তিনবার ভুল হলে মিটার লক হয়ে যাচ্ছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বলছে, বিদ্যুতের নতুন মূল্য নির্ধারণ হওয়ার পর থেকে এ সমস্যা হচ্ছে। তারা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছে।

রাজধানীর শ্যামপুরের একজন বাসিন্দা বলেন, পল্লী বিদ্যুতে আগে রিচার্জ করতে গেলে ২০টি সংখ্যা আসত। ওই সংখ্যা লিখে রিচার্জ করা যেত। এখন ২৪০টি সংখ্যা আসছে। সবকটি লিখে রিচার্জ করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমার বাসায় সব মিলিয়ে ২৪টি মিটার রয়েছে। সবগুলোতেই এ ধরনের সমস্যা হচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক গ্রাহক। খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা শেখ বোরহান উদ্দিন বলেন, আগে ২০টি ডিজিট চেপে পল্লী বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটার রিচার্জ করতে হতো। এ মাসে ২৪০টি ডিজিট বা নম্বর এসেছে। গতকাল মোবাইলের স্ক্রিনে এতগুলো নম্বর দেখে দেখে প্রেস করতে গিয়ে একবার ভুল হওয়ায় আবার সব নম্বর নতুন করে প্রেস করতে হয়েছে; এতে বিশাল ভোগান্তি বেড়েছে। তিনি এমন ডিজিটাইজেশনের সমালোচনা করে বলেন, দু-একবার ভুল হলে তো মিটারই লক হয়ে যেত, তখন আবার বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে এই লক খুলতে হতো— এটাই কী ডিজিটাইজেশনের নমুনা?

যাত্রাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, প্রথম দুবার ভুল হওয়ায় পল্লী বিদ্যুৎ  অফিসে ফোন করে জেনে নিয়ে আবারও চেষ্টা করে রিচার্জ করেছি, তা না হলে আমার মিটারই লক হয়ে যেত। আমার বাড়ির ভাড়াটেরাও একই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। গ্রাহকদের ভোগান্তির বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩-এর মহাব্যবস্থাপক মোল্লা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, যখনই বিদ্যুতের মূল্য পরিবর্তন হয়, তখনই এ সমস্যাটি তৈরি হয়। তবে কীভাবে গ্রাহকরা এই ২৪০ ডিজিট মিটারে কী-বোর্ডে চেপে মিটার রিচার্জ করবেন— সেই পদ্ধতি ইতোমধ্যে আমরা আমাদের ওয়েবসাইটসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছি। এতে সাময়িকভাবে গ্রাহকের ভোগান্তি হলেও ধীরে ধীরে গ্রাহকরা এর সাথে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন।

এছাড়াও প্রি-পেইড মিটারের ফলে গ্রাহকের নানা ভোগান্তির কথা জানা যায়। রাজধানীর পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের বাসিন্দা মোহাম্মদ উল্লাহ আমার সংবাদকে বলেন, গত রোববার প্রি-পেইড মিটারে রিচার্জ করেছি দুই হাজার টাকা। কিন্তু আমার মিটারে যোগ হয়েছে ১৬০০ টাকা। তিনি বলেন, প্রতি রিচার্জেই ৪০ টাকা করে কেটে নেয়া হচ্ছে। এছাড়া ডিমান্ড চার্জ, সার্ভিস চার্জ, মিটার ভাড়া, ভ্যাট অ্যান্ড ট্যাক্সসহ রয়েছে একাধিক টাকা নেয়ার বাহানা, যা দিতে গিয়ে নিয়মিত হিমশিম খেতে হচ্ছে। অন্যদিকে প্রি-পেইড মিটারের প্রয়োজনীয় ও সর্বশেষ ব্যালেন্স সংকেত না পাওয়ায় হুট করে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হওয়ার ভোগান্তি আরও বেশি পীড়াদায়ক। একাধিকবার প্রি-পেইড কার্ড রিচার্জে যাতায়াত ও সিরিয়াল জটিলতায়ও অতিষ্ঠ তিনি। তিনি বলেন, আমার মনে হচ্ছে প্রি-পেইড মিটার ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’! এ যেন সেবার নামে শাস্তি।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, মিটার ভাড়া দেবেন বাড়িওয়ালা, ভাড়াটেরা কেন দেবেন? এছাড়া সার চার্জ কী— এটা বোধগম্য নয়। কর্তৃপক্ষ কোনোদিন কানো সার্ভিস না দিয়েও সার্ভিস চার্জ নিচ্ছে।

বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশে গত বছরের জুলাই পর্যন্ত মোট বিদ্যুৎ গ্রাহকের সংখ্যা চার কোটি ৩১ লাখ। এর মধ্যে প্রি-পেইড মিটারের আওতায় এসেছেন ৫১ লাখ ৭ হাজার ৪৫২ জন। সে হিসাবে দেশে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের ১১ দশমিক ৮৫ শতাংশ প্রি-পেইড মিটারের আওতায় এসেছে।

প্রসঙ্গত, দেশে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের কাজ করছে ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা। এর মধ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ১৫ লাখ ৬৬ হাজার ২৯১, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) ১৩ লাখ ১০ হাজার ৫৬৪, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) ছয় লাখ ৪২ হাজার ৪৬৯, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) ছয় লাখ ১৪ হাজার ২০৫, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লি. (ওজোপাডিকো) চার লাখ ৭৩ হাজার ৯২৩ ও নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) পাঁচ লাখ প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করেছে।

Link copied!