ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

দুর্ভোগের ইজারা দিলো দক্ষিণ সিটি

আবু ছালেহ আতিফ

আবু ছালেহ আতিফ

এপ্রিল ১, ২০২৩, ০২:২০ এএম

দুর্ভোগের ইজারা দিলো দক্ষিণ সিটি
  • রাজস্বের নামে ফুটপাতে ট্রাকস্ট্যান্ড, বছরে আদায় প্রায় ২১ লাখ টাকা
  •  মুরগিটোলা মোড় থেকে রায়সাহেব বাজার পর্যন্ত ট্রাকের বড় সারি জনভোগান্তি ছড়িয়ে পড়ছে আশেপাশের এলাকায়ও

 

সিটি কর্পোরেশন এভাবেই চালাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে এবং চলবে

—হায়দর আলী

মহাব্যবস্থাপক (পরিবহন), ডিএসসিসি

 রাজধানী ঢাকাতে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা নতুন কিছু নয়। কিন্তু সেই ব্যবসা যদি হয় খোদ সিটি কর্পোরেশনের অনুমতিতে তাহলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ যেমন অনিবার্য তেমনি সেই দুর্ভোগ কতটা তীব্র হতে পারে তাও সহজেই অনুমেয়। ঢাকার ধোলাইখাল এলাকার ফুটপাতে এমনই দুর্ভোগের ইজারা দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন- ডিএসসিসি। ধোলাইখালের ওই ট্রাকস্ট্যান্ডের জন্য ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান, সদরঘাট ও ওয়ারীগামী যানসহ স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, আদালতের সেবাপ্রার্থী, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালগামী যাত্রী ছাড়াও সাধারণ মানুষকে। ডিএসসিসির ওই স্ট্যান্ডের জন্য সড়কের প্রসস্থতা কমে আসায় সেখানকার ব্যবসায়ীরাও যেমন ভোগান্তি পোহাচ্ছেন তেমনি সৃষ্ট যানজটের ভোগান্তি ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের বেশ কটি এলাকাতেও। এটি সেখানকার নিত্যদিনেরই পরিস্থিতি। দিনের শুরু থেকে রাত অবধি নিত্যকার এই জনভোগান্তি লাঘবের বিষয়ে ডিএসসিসির সংশ্লিষ্ট শাখায় যোগাযোগ করা হলে জানা যায় রাজস্ব আয়ের দোহাই দিয়ে ডিএসসিসি নিজেই ইজারা দিয়ে রেখেছে সেই স্ট্যান্ড। ইজারাও পেয়েছেন ডিএসসিসিরই স্থানীয় (৪২ নং ওয়ার্ড) কাউন্সিলর হাজী মোহাম্মদ সেলিম। যে কারণে ভোগান্তি পোহালেও সাহস করে সেই স্ট্যান্ডের বিরোধিতা করছেন না স্থানীয়রাও।

ধোলাইখাল ট্রাক স্ট্যান্ডের চালকরা আমরা সংবাদকে জানান, ধোলাইখালের রাস্তায় ট্রাকপ্রতি মাসিক এক হাজার ১০০ টাকা করে চাঁদার বিনিময়ে ট্রাক রাখছেন তারা। ছোট কাভার্ডভ্যান প্রতি মাসিক চাঁদার পরিমাণ ৭০০-৯০০ টাকা। প্রতিদিন কমপক্ষে দুইশ ট্রাক—কাভার্ডভ্যান থেকে এই চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। আর ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, এখানে দেড় শতাধিক ট্রাক নেই। মালিক সমিতি জানায়, বছরে ২৪ লাখ টাকা দিয়ে ট্রাক স্ট্যান্ডের ইজারা পেয়েছে স্থানীয় সিন্ডিকেট। জানতে চাইলে ঢাকা ট্রাক মিনি ট্রাক-ট্যাংকলড়ি ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুল রাজ্জাক মিঠু বলেন, এখানকার সব কিছুই সিটি কর্পোরেশন টেন্ডার

ঘোষণা করে ডাকে দেয়। যারা টেন্ডার পেয়েছে তারাই এসব জানে। আমরা কিছু জানি না। এখানে ট্রাক মালিক সমিতির কাজটা কী এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এখানে শুধু ছোটখাটো সমস্যার সমাধান করি। যেমন— ট্রাক ড্রাইভারদের মধ্যে যদি কোনো ঝামেলা হয় সেগুলো সমাধান করি। এ ছাড়া আসল যেসব টাকা পয়সার হিসাব সেটা সিটি কর্পোরেশন এবং টেন্ডার মালিক যারা তারা জানে। আমরা এ ব্যাপারে কিছু জানি না। তবে ট্রাক স্ট্যান্ডটি সিটি কর্পোরেশনের ইজারায় হলেও ফুটপাতে এমন স্ট্যান্ডের ইজারা দেয়াটা বৈধ কি-না এমন প্রশ্ন তিনি এড়িয়ে যান।

এদিকে ফুটপাত দখল করে স্ট্যান্ড করার বিষয়ে জানতে চাইলেই মূলত জানা যায়, এই স্ট্যান্ডটি ডিএসসিসির কাছ থেকে ইজারা নিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর সেলিম। কাউন্সিলর সেলিমের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার হয়ে কথা বলেন তারই পিএস রুবেল। পিএস রুবেল বলেন, এটা তো সিটি কর্পোরেশনই আমাদেরকে দিয়েছে; সুতরাং সমস্যা কোথায়? আর আমরা তো তাদের (সিটি কর্পোরেশন) সাথে ব্যবসা করছি চুক্তিভিত্তিক। তবে তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন আমাদেরকে যেই টাকায় ইজারা দিয়েছে তাতে আমরা লোকসানে আছি। প্রতি বছর সিটি কর্পোরেশনকে দিতে হয় ১৫ লাখ টাকা, এর সাথে চার লাখ টাকা ভ্যাট এবং আরও আনুষঙ্গিক খরচ আছে প্রায় দুই লাখ টাকা। সর্বমোট খরচ প্রায় ২১ লাখ টাকা। যেখানে আমরা ইজারা নেয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত লাভের মুখই দেখিনি। পিএস রুবেল আরও বলেন, টেন্ডারের খরচ কমানোর ব্যাপারে যদিও আবেদন করেছিলাম এবং সিটি কর্পোরেশনের পরিবহন মহাব্যবস্থাপক এ ব্যাপারে আশ্বাসও দিয়েছিলেন, কিন্তু তাও এখনো কার্যকর হয়নি।

গতকাল স্ট্যান্ড এলাকায় সরেজমিন ঘুরে কথা হয় স্থানীয়দের সঙ্গে। এর মধ্যে ট্রাকস্ট্যান্ড সংলগ্ন পাঁচভাই ঘাট লেনের বাসিন্দারা বলছেন, এটা তো ট্রাকস্ট্যান্ডের জায়গা না। এটি পাবলিক রাস্তা। সুতরাং এখানে এত বড় ট্রাকস্ট্যান্ড কীভাবে থাকতে পারে আমরা বুঝি না। তারা বলেন, মানুষের ক্ষতি করে বছরকে বছর এসব অবৈধ বাণিজ্য আসলে তারাই করতে পারে যাদের ক্ষমতা আছে। তাদেরকে প্রশাসন ও কিছু বলবে না; কারণ প্রশাসনকেও তারা ‘দুধ কলা দিয়ে পুষেৎ। একই সময় মেয়েকে নিয়ে রোকনপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে কথা হয় মনসুরা বেগম নামের স্থানীয় এক অভিভাবকের সঙ্গেও। এর কিছুক্ষণ আগেই ট্রাক থেকে রড নামানোর কারণে তিনি ও তার স্কুলপড়ুয়া মেয়ে সাবিহাকে নিরাপদ দূরত্বে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ট্রাকস্ট্যান্ডের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ট্রাকগুলো এমনভাবে চলাচল করে, এতে খুব ভয় হয়। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি বলেন, নারিন্দা থেকে মেয়েকে নিয়ে প্রতিদিন রাস্তা পার হয়ে রোকনপুর যেতে হয়। কিন্তু এখানে রাস্তা পার হওয়ার সময় খুব দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এবং এটি সবারই সমস্যা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পরিবহন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক হায়দর আলী এই প্রতিবেদককে বলেন, এটি সিটি কর্পোরেশন এভাবেই চালাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে এবং চলবে। এখন আপনার যদি কোনো সুপারিশ লাগে বলেন; বলে দেই ওদেরকে। এরপর তিনি আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি। পরবর্তীতে ফের একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি আর রিসিভও করেননি।

Link copied!