ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad
কোটা আন্দোলন

বিক্ষোভে উত্তাল ক্যাম্পাস

ইয়ামিনুল হাসান আলিফ

ইয়ামিনুল হাসান আলিফ

জুলাই ১৩, ২০২৪, ১২:৩৮ এএম

বিক্ষোভে উত্তাল ক্যাম্পাস
  • ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে বিক্ষোভ-অবরোধ সড়ক-রেলপথে
  • পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে জানানো হবে আজ সন্ধ্যায়
  • আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা
  • জনদুর্ভোগ হলে ছাড় দেবে না পুলিশ

কোটা সংস্কার দাবিতে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে শুক্রবার উত্তাল ছিল দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন স্থানে কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে ও কোটা সংস্কারের দাবিতে গতকাল শুক্রবার বিকাল ৪টায় সব ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়া হয়। ঘোষণা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।  বিক্ষোভ ক্যাম্পাস ছেড়ে ছড়িয়ে পড়ে সড়ক-মহাসড়কে, অবরোধও হয় সড়কপথ-রেলপথে। 

এদিকে আন্দোলন করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টা করলে পুলিশ বরদাশত করবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। গতকাল শুক্রবার  ক্র্যাবের স্পোর্টস কার্নিভ্যাল উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি। 

নতুন কর্মসূচি : আজ শনিবার কোনো ধরনের অবরোধ কর্মসূচি নেই। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বকর মজুমদার। ঘোষণা অনুযায়ী আজ শনিবার সারা দেশের সব ক্যাম্পাসে প্রতীকী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপর আজ সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে সেখান থেকে আন্দোলনের পরবর্তী কার্যক্রম  ষ এরপর পৃষ্ঠা ১১ কলাম ১

সম্পর্কে জানানো হবে বলে জানানো হয়েছে। ঘোষণার আগে প্রায় এক ঘণ্টা শাহবাগ অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। রেলপথ অবরোধের ঘটনা ঘটে রাজশাহীতে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানেই বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। 

ঢাকা : গতকাল বিকাল ৪টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে থাকেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা। এরপর বিকাল ৫টার পর ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে অগ্রসর হন তারা। বিকাল ৫টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরাও মিছিল নিয়ে শাহবাগে অবস্থান নেন। অবরোধের কথা না থাকলেও শিক্ষার্থীদের অবস্থানের ফলে অবরুদ্ধ থাকে শাহবাগ মোড়। ঘণ্টাখানেক শাহবাগ অবরোধের পর নতুন কর্মসূচি দিয়ে শাহবাগ ছাড়েন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় শাহবাগ মোড়ের আশেপাশে সতর্ক অবস্থানে দেখা যায় পুলিশকে। 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় : গতকাল বিকাল ৪টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঁঠালতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। পরবর্তীতে মিছিলটি ভিক্টোরিয়া পার্ক ঘুরে এসে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে সড়কে অবস্থান নেয়। এ সময় আন্দোলনকারীরা গত বৃহস্পতিবারের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। পরবর্তীতে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।

রাজশাহী : তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা-রাজশাহী রেল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিকাল ৪টার দিকে মিছিল করে স্টেশন বাজারের দিকে অগ্রসর হন তারা। পরে বিকাল ৫টা থেকে স্টেশন বাজার সংলগ্ন রেল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। রাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সমাবেশে একাত্মতা প্রকাশ করে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

রংপুর : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেন।  মিছিল শেষে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তীতেও কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়া হয়।

কুমিল্লা : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদ এবং প্রক্টরিয়াল বডির দায়িত্বহীনতার অভিযোগে প্রক্টরের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছেন শিক্ষার্থীরা।

গতকাল শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে ওই বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন দক্ষিণ মোড় ও আনসার ক্যাম্প প্রদক্ষিণ করে গোল চত্বরে এসে শেষ হয়। পথে শিক্ষার্থীরা ছাত্র আন্দোলন চত্বরে (আনসার ক্যাম্প মোড়) আহতদের স্মরণে এক মিনিটের নীরবতা কর্মসূচি পালন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনা করেন।

ময়মনসিংহ : বিকাল সাড়ে ৫টায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে যোগ দেন প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী।

পরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বাকৃবির কেআর মার্কেটসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে জব্বারের মোড়ে অবস্থিত শহীদ মতিউল-কাদের স্মৃতিস্তম্ভের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। বাকৃবির জব্বারের মোড়ে শিক্ষার্থীদের অবস্থান নেয়ায় প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ থাকে ময়মনসিংহ-গফরগাঁও আঞ্চলিক সড়ক।

গোপালগঞ্জ : কোটা সংস্কার দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশের হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মশাল মিছিল বের করেন তারা।

কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকাল সাড়ে ৪টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ক্যাম্পাসের বটতলা চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় বিভিন্ন ক্যাম্পাসের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পুলিশি বাধা  এবং হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে জুলাইয়ের প্রথম থেকেই টানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল বাংলাদেশে। তার মাঝে ৩০ শতাংশই ছিল মুক্তিযোদ্ধা কোটা। বাকি কোটার মাঝে ১০ শতাংশ নারী, ১০ শতাংশ জেলা, পাঁচ শতাংশ ছিল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এবং এক শতাংশ কোটা ছিল প্রতিবন্ধীদের। ওই বছরই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কোটা সংস্কার দাবিতে কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরু করেন। 

শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল—  কোটা ৫৬ শতাংশ না হয়ে ১০ শতাংশ করা হোক। তাদের দাবির মুখে সে বছর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে পুরো কোটা পদ্ধতিই বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সে সময় কোটা পদ্ধতি বাতিলের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে বলেছিলেন, কোটা পদ্ধতি থাকলেই এ ধরনের আন্দোলন হবে বারবার। প্রতিবন্ধী বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী যারা আছে, তাদের আমরা অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে পারব। কিন্তু ২০২১ সালে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা ফিরে পাবার জন্য উচ্চ আদালতে রিট করেন এবং গত ৫ জুন প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ওই রায়ের পর গত ৬ জুন থেকেই আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। তবে কিছুদিন আন্দোলন চললেও মুসলিমদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা চলে আসায় ২৯ জুন পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত রাখেন শিক্ষার্থীরা। 

এরপর গত ৩০ জুন থেকে ফের আন্দোলন শুরু করেন তারা এবং পয়লা জুলাই থেকে এই আন্দোলন দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। ১০ জুলাই আপিল বিভাগ হাইকোর্টের সেই রায়ে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থার আদেশ দিলেও শিক্ষার্থীরা জানান তারা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি, সরকারকে কোটা ইস্যুর একটি স্থায়ী সমাধান করতে হবে। শিক্ষার্থীদের দাবি, সব ধরনের সরকারি চাকরিতে কোটা পাঁচ শতাংশে নিয়ে আসতে হবে। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে রয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
 

Link copied!