ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad
প্রতিশ্রুতি ভাঙলেন গভর্নর

দুর্বল ব্যাংকগুলো পাচ্ছে ৭০ হাজার কোটি টাকা

আনোয়ার হোসাইন সোহেল

আনোয়ার হোসাইন সোহেল

নভেম্বর ২৭, ২০২৪, ১১:৩৫ পিএম

দুর্বল ব্যাংকগুলো পাচ্ছে ৭০ হাজার কোটি টাকা
  • এক্সিম ব্যাংক ৫০০০ হাজার কোটি 
  • ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক ৭৯০০ কোটি 
  • ন্যাশনাল ব্যাংক ৭৫০০ কোটি
  • সোশ্যাল ইসলামী ৪০০০ হাজার কোটি 
  • ইউনিয়ন ব্যাংকসহ অন্যান্য তিনটি ব্যাংক পেলো প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা

দুর্বল ব্যাংকগুলোকে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা সহযোগিতা দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে প্রায় চার মাস পর নিজের প্রতিশ্রুতি ভাঙতে বাধ্য হলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। সম্প্রতি ব্যাংকগুলোর দুর্বল দশা পর্যবেক্ষণ করে গ্রাহকের আস্থা ফেরানোর নামে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে টাকা ছাপিয়ে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে লাইফ সাপোর্ট হিসেবে এই সহায়তা দেয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। 

ইতোমধ্যে গত সোম ও মঙ্গলবার দুইদিনে সাত ব্যাংককে দেয়া হয়েছে ৩০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সোমবার পাঁচটি দুর্বল ব্যাংক পেয়েছে ২৭ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। আর মঙ্গলবার আরও দুই ব্যাংককে দেয়া হয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গভর্নর প্রাথমিকভাবে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ৭০ হাজার কোটি টাকা সহায়তা দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। 

সূত্র জানিয়েছে, মূলত আওয়ামী লীগ আমলে ব্যাপক অনিয়মের কারণে তারল্য সংকটে ভুগতে থাকা বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক, এক্সিম, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংককে তারল্য সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্প্রতি এসব ব্যাংকের কোনো কোনোটিতে পাঁচ হাজার টাকা তুলতে গ্রাহককে একাধিকবার ব্যাংকে যেতে হয়েছে। তাই এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নরের প্রতিশ্রুতি ভেঙে ব্যাংকের বন্ড ফুরিয়ে যাওয়ায় সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে বেসরকারি ব্যাংগুলোকে এই অর্থ সহায়তা দেয়া হয়েছে। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দুর্বল ব্যাংকগুলোর মধ্যে গতকাল বুধবার পর্যন্ত ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংক ৭৯০০ কোটি টাকা, এক্সিম ব্যাংক ৫০০০ হাজার কোটি টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংক পিএলসি ৭৫০০ কোটি টাকা এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল) পেয়েছে ৪০০০ হাজার কোটি টাকা। ইউনিয়ন ব্যাংকসহ অন্যান্য তিনটি ব্যাংক নিয়েছে প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা।

এর আগে ২০ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, দুর্বল ও সমস্যাযুক্ত ব্যাংকগুলোকে টাকা ছাপিয়ে আর সহায়তা দেয়া হবে না। ব্যাংকের জন্য টাকা ছাপিয়ে কোনো সমাধানের পথে যাওয়া যাবে না। এরপর গত ৪ সেপ্টেম্বর তিনি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। 
আহসান এইচ মনসুর বলেন, “তারল্য সংকটে থাকা ‘দুর্বল’ ব্যাংককে সচল রাখতে বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ বিবেচনায় নিয়ে গ্যারান্টির মাধ্যমে আন্তঃব্যাংক বাজার থেকে নগদ টাকার ঋণ সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।” সেই পদ্ধতিতে দুর্বল ব্যাংকগুলো প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ধার নিয়েছে। কিন্তু তাতে সংকট দূর না হওয়ায় আবারও তারল্য সহায়তা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা জানান, গত মঙ্গলবার সকালে ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে বৈঠক করে ব্যাংকগুলো কত টাকা জোগান পেলে সংকট থেকে বের হতে পারবে, সেই তথ্য নিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। পরে প্রতিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান-এমডিদের সঙ্গে পৃথকভাবে সভা করেছেন গভর্নর। তখন কোন ব্যাংককে কি পরিমাণ অর্থ সহায়তা দেয়া হবে, সে বিষয়ে ধারণা দিয়েছেন গভর্নর। সব মিলিয়ে ৭০ হাজার কোটি টাকার চাহিদা দিয়েছে দুর্বল ব্যাংকগুলো। কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা দেবে। আর মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিল এবং বন্ডের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ এবং কোনো দাতা সংস্থা ঋণ ছাড়ের শর্তের জন্য টাকা ছাপিয়ে সহায়তার বিষয়ে প্রশ্ন তুললে তার ব্যাখ্যা দেয়া হবে। ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ব্যাংকগুলোর তারল্য সহায়তা নিয়ে গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গ্রাহকের আস্থা ফেরাতে তারল্য সহায়তা ফের চালু করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেকটি বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আমার সংবাদকে বলেন, আপাতত এটা আমাদের জন্য সমুদ্রে ভাসমান কোনো মানুষের জন্য একটি কাঠের সন্ধানের মতো। এই সহযোগিতার মাধ্যমে ব্যাংকগুলো ঘুরে দাঁড়াবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। তবে সহযোগিতা বন্ধ না করে সংকটে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি। 

সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্টের পর থেকে ব্যাংকগুলো এস আলম গ্রুপের এলসি খুলতে রাজি হচ্ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে রমজানের আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি নিশ্চিত করতে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ভোজ্যতেল, চিনি ও আটা-ময়দার কোম্পানিগুলোর এলসি খুলতেও ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছেন গভর্নর। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘যেসব ব্যাংক অর্থ সংকটের কারণে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না, তাদের সহায়তার জন্য খুব শিগগিরই আপনারা নতুন উদ্যোগ দেখতে পাবেন।’

বিভিন্ন ঋণ জালিয়াতি ও অনিয়মের কারণে অন্তত ১২টি ব্যাংক পতিত আওয়ামী লীগ আমল থেকে চরম তারল্য সংকটে রয়েছে। এর মধ্যে আটটি ব্যাংকের মালিকানা ছিল বিতর্কিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। এত অনিয়ম সত্ত্বেও শেখ হাসিনার আমলের বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেননি। এমতাবস্থায়, তারল্য সংকট আরও গভীর রূপ নেয়, কিন্তু এসব ব্যাংকের চলতি হিসাবে ঘাটতি থাকার পরও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রক বিধিমালা ভঙ্গ করে সহায়তার অনুমোদন দেয়া হয়।
 

Link copied!