ইলিশ রক্ষা করা আমাদের সবার জাতীয় কর্তব্য

ইলিশ আমাদেরকে সারাবিশ্বে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে—এজন্য একে রক্ষা করা আমাদের সকলের জাতীয় কর্তব্য বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত "জাটকা ও ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৪–২৫: মূল্যায়ন ও ভবিষ্যৎ করণীয়" শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালার আয়োজন করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

ফরিদা আখতার বলেন, “গত বছর যখন ইলিশ নিয়ে বিতর্ক চলছিল, তখন ভারতের একজন সাংবাদিক আমাকে প্রশ্ন করেন—আপনারা কেন আমাদের ইলিশ দেবেন না? আমি বলেছিলাম, আপনাদের তো গঙ্গায় ইলিশ আছে, ওটাই খান। তখন তিনি বলেন, গঙ্গার ইলিশে সেই স্বাদ নেই। পদ্মা-মেঘনার ইলিশের যে স্বাদ, তা অনন্য। এমন স্বাদের পেছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি, যা আমাদের গর্বের বিষয়।”

তিনি আরও বলেন, “ইলিশ কেবল মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নয়, এটি প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়সহ আমাদের সবার দায়িত্ব। ইলিশ রক্ষা আমাদের জাতীয় দায়িত্ব।”

ইলিশের দাম নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “শুধু দামের কারণে ইলিশের ওপর রাগ করা অন্যায়। এটা প্রতিদিনের খাবার নয়, এটি একটি বিশেষ খাবার। বর্ষায় খিচুড়ির সঙ্গে সরষে ইলিশ খাওয়ার সেই আনন্দ যেন মানুষ উপভোগ করতে পারে। তবে দাম যাতে নাগালের বাইরে না যায়, সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি।”

তিনি জানান, “বর্তমানে ইলিশের উৎপাদন গত ২৫ বছরের তুলনায় অনেক বেড়েছে। তবে বাজারে ইলিশের দাম ২ হাজার টাকা কেজি হওয়া ঠিক নয়। সঠিক তথ্য ছাড়া কিছু সংবাদ পরিবেশন সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায়। আমি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং আড়তদারদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করব।”

বিআইডিসি যদি নির্ধারিত মূল্যে ইলিশ বিক্রির উদ্যোগ নেয়, তবে বাজারে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এছাড়া ইলিশের রোগ প্রতিরোধ এবং পরিবেশ দূষণ রোধে করণীয় বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। সেই সঙ্গে ক্ষতিকর কারেন্ট জাল ও চায়না জালের ব্যবহার বন্ধে সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুর রউফ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (চলতি দায়িত্ব) মো. তোফাজ্জল হোসেন।

ইএইচ