Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪,

সুনামগঞ্জে খাবার-বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

জুন ২১, ২০২২, ০৩:২২ পিএম


সুনামগঞ্জে খাবার-বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট

সুুনামগঞ্জে বর্ন্যাতদের মাঝে খাবার, বিশুদ্ধ পানি’র জন্য চলছে হাহাকার। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকেই সুনামগঞ্জ সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে আছে।

সোমবার সন্ধ্যায় শহরের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ পেলেও  স্বাভাবিক হয়ে উঠেনি পুরো জেলা। বন্যার্তদের মাঝে সরকারী ত্রাণ সহায়তা না পৌছায় খাবারের জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে সর্বত্র। 

সুনামগঞ্জে গত রোববার বিকালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি দল হেলিকপ্টার দিয়ে বন্যা পর্যবেক্ষণ করেন এবং কিছুু কিছু স্থানে ত্রাণ সহায়তা দিলেও প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। সুরমা নদীর পানি এখনও বিপৎপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৫৩ মিলি মিটার।

সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে পানি কিছুটা কমলেও নিচু সড়ক ও ঘর বাড়িতে এখনও পানি নাতে পারেনি। আস্তে আস্তে পানি কমায় এখনও বেশীরভাগ মানুষের ঘরে হাটু পানি কোমর পানি রয়েছে। কত দিন পর সুনামগঞ্জ স্বাভাবিক হতে পারে তা জানাতে পারেনি কেউ। মানুষের চোখে মুখে শুধু হাকাকার আর হাহাকার কেউ কাউকে সাহায্য করার মত অবস্থা নেই। ধনী গরীব সবার একই অবস্থা। বানের পানিতে ভাসিয়ে নিয়েছে সর্বস্ব।

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্র্রব্যের সংকট দেখা দেয়ায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা তিনগুণ চারগুণ দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। টাকা থাকলেও মিলছে না খাবার। নৌকা কিংবা রিক্সা করে এক স্থান থেকে অন্যস্থলে যেতে চাইলে ২শ টাকা থেকে ৫শ টাকা  দাবী করছে চালকরা। বেশি টাকা দিয়েও খাবার পাচ্ছেন না বানভাসী সুনামগঞ্জের মানুষ। এক প্যাকেট মোম বাতি বিক্রি হচ্ছে ১০০- ১৫০ টাকা ধরে। তাও মাত্র ৫ পিস। যার স্বাভাবিক মুল্য ছিল ২০টাকা। 

এদিকে রাত হলেও বন্যার্ত এলাকায় ডাকাত আতংক দেখা দেয়। মানুষ ভয়ে থাকে  কখন জানি ডাকাতদল  আক্রমন করে। এ দিকে বিমান বাহিনীর ত্রাণ বিতরনের সময় তাহিরপুরে আহত দিনমজুুর বিপ্লব মিয়া মঙ্গলবার সকালে সিলেট রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করে। এছাড়াও বন্যার পানিতে ভেসে গিয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। তার নাম আবুল কাশেম।  

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কাশেম জানান, আমরা প্রায় ৪ লাখ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করেছি। এছাড়াও আমাদের মোবাইল ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৬০ হাজার লিটার বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করেছি। পানি সরবরাহ চলমান থাকবে। এ ছাড়াও আমাদের কাছে প্রায় ৯ লক্ষ বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট রয়েছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম জানান, সুরমা নদীর পানি এখনও বিপদসীমার ২৪  সে.মি উপরে প্রবাহিত হইছে। কয়েকদিন বৃষ্টিপাত না হলে পানি নেমে স্বাভাবিক অবস্থায় আসতে পারে। গত ২৪ ঘন্টার মধ্যে পানি বৃদ্ধির কোন পূর্বাবাস  পাওয়া  যায়নি।  

পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বিপিএম জানান, বন্যার মধ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পুলিশ সজাগ আছে। যাতে করে ডাকাতি বা চুরি না হয়। এ ছাড়াও আমরা বন্যার্থদের সাহায্য করতে জেলার সকল থানায় কাজ করছি। 
 
জেলা প্রশাসক মো: জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আমরা উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছি এবং বন্যার্তদের মাঝে শুকনা খাবার ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করছি। যৌথবাহিনীও আমাদের সাথে কাজ করছে।

আমারসংবাদ/এআই
 

Link copied!