Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪,

১৪ বছরেও হয়নি প্রতিবন্ধীভাতা

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি

আগস্ট ৩, ২০২২, ০৯:৩২ পিএম


১৪ বছরেও হয়নি প্রতিবন্ধীভাতা

মিঠাপুকুর উপজেলার ৭নং-লতিবপুর ইউনিয়নের আল-আমিন মিয়া (২৬) দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে প্রতিবন্ধীভাতার জন্য ঘুরছেন জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে। বিভিন্ন সময়ে প্রতিবন্ধী ভাতার প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রতিবন্ধীভাতা জুটেনি তার ভাগ্যে। আল-আমিনের নিথর আর প্যারালাইজড শরীর নিয়ে বারবার মিঠাপুকুর উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরসহ সাভার-সমাজসেবা কার্যালয়, জনপ্রতিনিদের কাছে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। আল-আমিনের জন্মসনদসহ তার বাবা মায়ের ভোট মিঠাপুকুরে হলেও আল-আমিনের ভোটার আইডি কার্ড সাভারের। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন সে।

আল-আমিন উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের অভিরামপুর গ্রামের আকমল ও রুপালি দম্পতির বড় ছেলে। আল-আমিন বলদিপুকুর শাহ আবুল কাসেম দ্বী-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় ২০০৮ সালে তালগাছ থেকে পড়ে গিয়ে তার মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায়। পূরো শরীর অবস্ হয়ে প্রশাব,পায়খানা করার অনূভুতিসহ সমস্ত অঙ্গ-প্রতঙ্গ বিকল হয়ে যায়। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকগন তাকে বাঁচানো সম্ভব নয় বলে তার পরিবারকে জানান।

২০০৯ সালের মার্চ মাসে সাভার (সিআরপি) হাসপাতালে আল-আমিনের দীর্ঘ সাতাশ মাসের চিকিৎসায় সাতটি অপারেশনসহ তার একটি পা-কেটে বাদ দিতে হয়। অভাব অনাটনে পরিপূর্ণ চিকিৎসা করাতে না পারায় আল-আমিন বেঁচে গেলেও তার গলার নিচ থেকে পুরোপুরি অবস এবং প্যারালাইজড হয়। অদম্য আল-আমিন ২০১৩ সালে এসএসসি এবং ২০১৫ সালে এইচএসসি পাশ করে বর্তমানে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএ (বিএসএস) অধ্যায়নরত।

পরিবারের বোঝা না হয়ে আল-আমিন মুখ দিয়ে ছবি আঁকা শুরু করেন এবং মাউথ পেইন্টার হিসেবে বাংলাদেশে ৩ জনের মধ্যে তিনি একজন।তার ছবি ইতিমধ্যে দেশ-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছে। তার মুখ দিয়ে আঁকা ছবিতে প্রকৃতি,পরিবেশ এবং সমাজের অবহেলিত মানুষের প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠতো। এখান থেকে যা আয় হতো তা দিয়ে তার ছোট ভাইয়ের লেখাপড়া এবং তার বাবামায়ের কষ্ট অনেকটা লাঘব হতো। কিন্তু করোনা মহামারীতে তার ছবি বিক্রি বন্ধ হয়ে যায় এবং হতাশায় ভেঙ্গে পড়েন।

তার চিকিৎসা খরচ যোগাতে তিনি হিমসিম খাওয়ায় সাভার সমাজ সেবা অধিদপ্তরে গেলে তারা জানান,তার জন্মসনদ এবং তার বাবামায়ের আইডি অনুযায়ী মিঠাপুকুরে তার প্রতিবন্ধী ভাতা হবে। এরপর সে পূর্বের মতো আবারো মিঠাপুকুরে সবার দ্বারে দ্বারে বিকল শরীর নিয়ে একটি প্রতিবন্ধীভাতার আবেদন জানান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা চেয়ারম্যান তার প্রতিবন্ধীভাতার জন্য সুপারিশ করলেও তার প্রতিবন্ধীভাতা না হওয়ায় সে নির্বাক হয়ে যায়। এমতবস্থায় তার একটি প্রতিবন্ধী ভাতার জোর দাবি জানান।

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য, খোরশেদ আলম জানান, তার মা, এ-বিষয়ে ভালো বলতে পারবে। সম্ভবত তারা ঢাকার সাভারে থাকেন। ইউপি-চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী মন্ডল আমার সংবাদকে জানান, তার বাবা-মা মিঠাপুকুরের ভোটার কিন্তু আল-আমিন সাভারে ভোটার হয়েছেন, সম্ভবত তাই সম্ভব হয়নি। উপজেলা সমাজসেবা অফিসার, শরিফুল ইসলামকে এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন দিলেও তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।

কেএস 

Link copied!