ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

চিকিৎসা সেবায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন ডা. শোভন

মামুনুর রশিদ, চট্টগ্রাম ব্যুরো

মামুনুর রশিদ, চট্টগ্রাম ব্যুরো

নভেম্বর ২০, ২০২২, ০২:৩৬ পিএম

চিকিৎসা সেবায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন ডা. শোভন
  • শীঘ্রই জনবল সংকট সমাধান হবে: বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক

আজকাল সরকারি হাসপাতালে বিরুদ্ধে অভিযোগ ছাড়া সুনাম পাওয়া মুশকিল। এই অবস্থায় শহরের চেয়ে উপজেলা ভিত্তিক সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান কোন প্রকারে সন্তোষজনক আস্থা তৈরি করতে পারে নাই, যার মূল কারণ গ্রামভিত্তিক সরকারি হাসপাতালে নিয়োগপ্রাপ্ত ডাক্তাররা গ্রামে থাকতে চাই না।

কোনমতে অফিস করে থাকেন। গ্রামের অসহায় মানুষরা প্রাইভেট ডাক্তারের কাছ থেকে চিকিৎসা গ্রহণের সামর্থ্য না থাকায় ছুঁটেন সরকারি হাসপাতালে। সে ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার ন্যূনতম সেবা পান না।  এমন উদ্ভট পরিস্থিতিতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.শোভন দত্ত নামে একজন চিকিৎসক নিজ দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা ছেড়ে সমগ্র চট্টগ্রাম বিভাগে সুনামের সহিত খ্যাতি অর্জনের সাথে অসহায় রোগীদের নির্ভরশীল আস্তার পেরেক গড়েছেন।

৩৫ ভাগ জনবল সংকট , বিদ্যুৎ সংকটের সাথে জেনারেটরের তেলের বাজেট ঘাটতি ও বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম সংকট সহ ইত্যাদি সমস্যার মধ্যে গড়ে ১৩৫-১৫০ জন রোগীর নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন ডা.শোভন দত্ত। তিনি বিশেষ করে সুনামের সহিত আলোচনায় আসার কারণ হচ্ছে ৫০ শয্যার হাসপাতালে গড়ে ১৩৫ থেকে ১৫০ জন রোগীর নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দেওয়ায়।

সরজমিন পরিদর্শনে, সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে, নির্দিষ্ট অফিস ডিউটির দিকে না তাকিয়ে সকাল বিকাল রাত সমানে হাসপাতালের দায়িত্ব পালন করছেন। নিজের অফিস রুমে বসে না থেকে কখনো জরুরী বিভাগে বা শিশু ওয়ার্ড অথবা অন্য কোন ওয়ার্ডে ছুটাছুটি করছেন এবং রোগীদের সাথে পরিবারের সদস্যের মতো কথা বলছেন। রোগীর প্রতি তার ব্যস্ততা দেখে যেকোনো মানুষের সরকারি হাসপাতালে প্রতি নেতিবাচক ধারণা পরিবর্তনের সাথে গলাকাটা বাণিজ্য বেসরকারি হাসপাতালের দৌরাত্ম কমে যাবে।

পরিদর্শন কালে রোগী ও রোগীর স্বজনদের সাথে আলাপে বারবার দুটি বিষয় উঠে আসে। একটি ডেলিভারি কেইস অন্যটি শিশুর চিকিৎসা। সরকারি হাসপাতালে ডেলিভারি রোগী কোনমতে যেতে চাই না সঠিক চিকিৎসার অভাবে। এর সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম  ডা.শোভন দত্তের দায়িত্বরত হাসপাতালটি। কারণ প্রতি ১৫ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ দুইজন ডেলিভারি রোগীর সিজার করাতে হয়। বর্তমান সময়ে সিজারের যে অসহনীয় প্রতিযোগিতার মধ্যে স্বাভাবিক ডেলিভারি করাচ্ছেন ডা.শোভন দত্ত। এরজন্য তিনি বেসরকারি হাসপাতালের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।

অপরদিকে শিশুর চিকিৎসার ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক চিকিৎসা পদ্ধতি বাদ দিয়ে খুবই সাধারণ চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তুলছেন। টমটম চালক সিরাজ নামের জনৈকের স্ত্রীর প্রসব বেদনায় রাত বারোটার পর স্থানীয় ক্লিনিকে নিয়ে যান। ভর্তির ১০ মিনিটের মধ্যে তাকে জানানো হয় সিজার করাতে হবে। ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ হবে। তিনি কোন উত্তর না দিয়ে তার  টমটম দিয়েই ডা.শোভন দত্তের অর্থাৎ সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। ওই রাত তিনটায় স্বাভাবিক ডেলিভারির মাধ্যমে পুত্র সন্তানের জনক হন টমটম চালক। অথৈ আশ্চর্য নামের এক গৃহিনী স্বামী ভাসমান দোকানদার তারও একই কেইস।

সিজার ডেলিভারি করার জন্য ধার দেনা করে পাঁচ হাজার টাকা ক্লিনিকে জমা দেওয়ার মুহূর্তে স্ত্রী বলেন, আমরা এত টাকা কোথায় পাবো। ধার দেনা করলে শোধ করব কিভাবে। চলো সরকারি হাসপাতালে যায়। স্বামীর যাওয়ার ইচ্ছে নেই। কারণ ক্লিনিকের ডাক্তার জানিয়েছেন ৩০ মিনিটের মধ্যে সিজার না করালে বাচ্চা সহ মা মারা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এইসংবাদে কোন স্বামীর পক্ষে কখনো সম্ভব না। 

স্ত্রী অনুরোধে অবশেষে ছুটেন সরকারি হাসপাতালে।  ডা.শোভন দত্তের নির্দেশে স্বাভাবিক ডেলিভারি করান। এই ধরনের কেইস একটি দুটি নয়। বিভিন্ন জটিল রোগীর ক্ষেত্রে তার চমকপ্রদ কারিশমা দেখিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন। বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা হয় চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাক্তার মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ এর সাথে।

তিনি বলেন, আগামী দুই তিন মাসের মধ্যে জনবল সংকট সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অলরেডি কুমিল্লা অনুমতি পেয়ে গেছেন । হাসপাতালের তেলের বাজেট পূর্বের তুলনায় ২০ ভাগ খরচ না করতে নিষেধ রয়েছে। এবং জেনারেটরের তেলের চাহিদা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে ।জেনারেটরের কোন ত্রুটি থাকলে তা ঠিক করার নির্দেশ রয়েছে।

এরমধ্যে সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতি অনুশীলন করে সকল কিছুতে সাশ্রয় করার নির্দেশ আছে। হাসপাতালের দায়িত্বরতরা নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে অথবা কোন কোন ক্ষেত্রে আর্থিক সমস্যায় পড়লে তখন উপজেলা পরিষদের যে বাজেট আছে সেটাকে লাগানোর জন্য বলা হয়েছে।

এছাড়া ডাক্তার শোভন দত্তের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি খুবই সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বলেন চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে ডাক্তার শোভন দত্ত খুবই পরিশ্রমী বিনয়ী এবং সর্বোচ্চ ত্যাগ দিয়ে রোগীর চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। আমরা চাই প্রত্যেক হাসপাতালের ডাক্তার শোভন দত্ত হয়ে উঠুক এবং হাসপাতালের সকল দায়িত্বরতরা।

ডাক্তার শোভন দত্ত বলেন, সেবার ব্রত নিয়ে ডাক্তারি পেশায় এসেছি । যাদের সামর্থ্য একেবারে শূন্য কোটায় তারাই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন।

তাই তাদের সেবা দিয়ে সুস্থ করে গড়ে না তোলা পর্যন্ত আমি স্থির থাকতে পারিনা । মানুষের যে বিরূপ ধারণা সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে তা ভুল প্রমাণ করা আমাদের দায়িত্ব।

এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, রোগীর সুস্থ হয়ে হাসিখুশিতে যখন বাড়ি ফিরেন তখনই আমার সন্তুষ্টি সফলতা।

উল্লেখ্য, ডাক্তার শোভন দত্ত চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

Link copied!