Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪,

অসুস্থ পিতার শেষ ভরসা রাফিয়া

নাচোল (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি:

নাচোল (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি:

জানুয়ারি ১৫, ২০২৩, ০৬:৪৭ পিএম


অসুস্থ পিতার শেষ ভরসা রাফিয়া

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে অসুস্থ্য পিতা রফিকুলের জীবন ধারণের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছে ৮ম শ্রেণী পড়ুয়া রাফিয়া সুলতানা (১৩)। সংসারের হাল ধরতে রাফিয়া নিজেই পানের দোকানে সহযোগিতা করছে তার বাবাকে।

পদ্মার ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে নাচোলের মুরাদপুরে ভাড়া বাসায় বসবাস করেন রফিকুল ইসলাম। সে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়নের মোল্লাটোলা গ্রামের শহিমুদ্দীনের ২য় সন্তান।

পিতার সংসারের দায়িত্ব ভার কাঁধে নিয়ে নাচোল বাসস্ট্যান্ডে ৬ ভাইকে (ইসলামীয়া হোটেল) ব্যবসায় নিয়োজিত করেন রফিকুল। কিন্তু নিজে পানের দোকান দিয়ে ৪ মেয়েকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে স্ট্রোকে আক্রান্ত হন তিনি।

রফিকুলের অসুস্থতায় বাধ্য হয়ে স্কুলের লেখাপড়া শেষে অসুস্থ্য পিতাকে সহযোগিতা করতে নাচোল বাসস্ট্যান্ডে ইসলামী হোটেলের সামনে পান দোকানে দু’বেলা বসতে হচ্ছে স্কুল পড়ুয়া মেয়ে রাফিয়া সুলতানাকে।

রফিকুল ইসলামের চার মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে রাফিজা সুলতানা বিবাহিত। তবুও সে মেধা ও অদম্য মনোবল নিয়ে স্বামী ও পিতার আশা ভরসায় গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়ো টেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ালেখা করছে।

মেজো মেয়ে ফাওজিয়া খাতুন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারী কলেজে বিএসসি পড়ছে। সেজো মেয়ে রিজিয়া সুলতানা এ বছর নাচোল খুরশেদ মোল্লা সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে নাচোল মহিলা কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হয়েছে।

ছোট মেয়ে রাফিয়া সুলতানা এবছর নাচোল খুরশেদমোল্লা সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণীতে পড়ালেখা করছে। মেয়েদের লেখাপড়া ও সংসার খরচ চালাতে হিমশিম খেয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন রফিকুল।

জীবন সংগ্রামী কিশোরী রাফিয়া সুলতানা পিতাকে ছেলের অভাব বুঝতে দিতে চায়না। তাই লেখাপড়ার পাশপাশি পান দোকানে সহযোগিতা ও মনোবল জুগিয়ে সেও ভাল ফলাফল করে মানুষের মত মানুষ হতে চায়। রাফিয়া বলেন সরকারী বা কারো সহযোগিতা পেলে বড় বোনদের মত সেও উচ্চ শিক্ষিত হতে পারবে। অসুস্থ্য পিতাকে সহযোগিতা করতে জীবন সংগ্রামে নেমেছে কিশোরী রাফিয়া সুলতানা।

অসুস্থ রফিকুল ইসলাম জানান, হঠাৎ স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে ছোট মেয়ে রাফিয়া আমাকে ছেলের মত করে পানের দোকানে সহযোগিতা করছে। দোকানের আয় দিয়েই এখন আমার সংসার ও চিকিৎসা শেষ ভরসা।

আরএস
 

Link copied!