Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

শহিদুল ইসলামের পরিবর্তে শফিকুল ইসলাম

প্রধান শিক্ষকের নাম জানে না প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর!

বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি

বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি

মে ১৯, ২০২৩, ০৬:৪৫ পিএম


প্রধান শিক্ষকের নাম জানে না প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর!

কখনো তারিখ ভুল, কখনো নির্দেশনা ভুল! বিভিন্ন পরিপত্রে এমন ভুলের অভিযোগ বেশ পুরাতন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে। শিশুদের বৃত্তির ফলাফলের পর এবার একজন প্রধান শিক্ষককেই পাল্টে দিলেন একটি পত্রে। 

শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে তিনজন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে মো. শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হলেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে শহিদুল ইসলামকে। যদিও বক্তব্য দাতা শহিদুল ইসলাম ছিলেন, তবে এ ভুলের কারণে বেশ সমালোচনা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকদের দাবী তারা কখনোই প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নিতে অস্বীকৃতি জানাননি। বরং তাদের আকাংখার কথাই জানিয়েছিলেন। তাদের স্বপ্নের কথা বলেছিলেন অভ্যন্তরিন নিজেদের আলোচনায়। যা ভিডিও ধারণ করেন একজন শিক্ষক। ভিডিওতে দেখা যায়, একজন শিশু বলছেন আমরা ৪ বছর পর এসেছি। প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে নিবো বলে আশা করেছি। ভিডিওতে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেয়ার আকাংখা প্রকাশ করেন সবাই।

ওই ভিডিও কর্তৃপক্ষের হাতে গেলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) এসএম আনছারুজ্জামান তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পলিসি ও অপারেশন উইংয়ের পরিচালক বরাবর ভিডিও কিপসহ অভিযোগ করেন। 

এতে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৩ এর মূল অনুষ্টানে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জনাব মো. জাকির হোসেন পদক প্রদান করবেন বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর উপস্থিত শিশুদের অভিভাবক ও কতিপয় শিক্ষক প্রতিমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক গ্রহণ না করে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক গ্রহণের দাবী জানান। 

এক পর্যায়ে কতিপয় শিক্ষক ও অভিভাবক প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের নিকট থেকে পদক গ্রহণে অস্বীকৃতি এবং প্রধামন্ত্রীর নিকট থেকে পদক গ্রহণের দাবী জানান। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিভিন্ন মন্তব্যপূর্বক মোবাইলে অভিভাবক এবং কতিপয় শিক্ষক সাক্ষাৎকার প্রদান করেন এবং অন্যান্যদেরকে সাক্ষাৎকার প্রদানে সহায়তা করেন। 

এসংক্রান্ত ভিডিও কিপ পাওয়া গেছে। ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, মোহাম্মদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি, রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম, জয়পুরহাট ক্ষেতলাল উপজেলার হিন্দা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মাহবুবর রহমান এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। 

ফলে সামগ্রিকভাবে বিশৃংখল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। মার্চ ২০২৩ তারিখ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সমন্বয় সভায় মহাপরিচালক মহোদয় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেছেন। এমতাবস্থায় প্রাপ্ত ভিডিও কিপ অনুযায়ী বর্ণিত শিক্ষকগণের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। পরবর্তীতে গত ১৮ মে, ২০২৩ তারিখে তাদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

বালিয়াকান্দি উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, মো. শফিকুল ইসলাম নামে বালিয়াকান্দি উপজেলায় কোন প্রধান শিক্ষক নেই এমনকি স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়েও মো. শফিকুল নামে কেউ নেই। স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নাম মো. শহিদুল ইসলাম।

তবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ভুল করলেও সঠিক তথ্য তুলে ধরে ঢাকা বিভাগীয় অফিস। ঢাকা বিভাগীয় উপপরিচালক মীর্জা মো. হাসান খসরু স্বাক্ষরিত একটি অফিসে আদেশে বলা হয় স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। 

আদেশে আরও বলা হয়, তার বিরুদ্ধে ১১ মার্চ, ২০২৩ তারিখ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৩ এবং শিক্ষা পদক ২০১৯ ও ২০২২ প্রদানের মহড়া অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এর নিকট থেকে পদক গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়ে মিডিয়ায় স্বাক্ষাৎকার প্রদান এবং অন্যদের সাক্ষাৎকার প্রদানে উৎসাহিত করায় সরকারী কর্মচারী (শৃংখলা ও আপীল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ১২(১) ধারা মোতাবেক তাঁকে সরকারী চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

এইচআর

Link copied!