Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪,

১২ বছর আগের হত্যা মামলায় বরখাস্ত হলেন বামনার ইউপি চেয়ারম্যান

বামনা (বরগুনা) প্রতিনিধি

বামনা (বরগুনা) প্রতিনিধি

আগস্ট ৪, ২০২৩, ০১:৪০ পিএম


১২ বছর আগের হত্যা মামলায় বরখাস্ত হলেন বামনার ইউপি চেয়ারম্যান

বরগুনার বামনা উপজেলার বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের শিংড়াবুণিয়া গ্রামে ১২ বছর পূর্বে এক মানষিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে  চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় জড়িত থাকায় মামলার প্রধান আসামী ওই ইউনিয়নের তৎকালীন ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সবুজকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের স্থাণীয় সরকার বিভাগের ইউনিয়ন পরিষদ ১ শাখা। 

গত ২ আগস্ট সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমিন প্রধানের স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তার সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়াও একই কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত আর একটি চিঠিতে কেন তাকে চুড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে না জানতে চেয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যানকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে চিঠির জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত বছর ১১ সেপ্টেম্বর বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের বড় তালেশ্বর গ্রামের জনৈক মো. লিটন মোল্লা নামে এক ব্যক্তি স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চেয়ারম্যানের সম্পৃক্ততা রয়েছেন এবং সিআইডির তদন্তে তিনিই প্রধান আসামি উল্লেখ করে তার  অপসারণ দাবী জানিয়ে একটি আবেদন করেন।

ওই আবেদনের প্রেক্ষীতে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউনিয়ন পরিষদ-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমিন প্রধানের ২০২২ সালে ২ নভেম্বর তারিখে স্বাক্ষরিত একটি পত্রে বরগুনা জেলা প্রশাসকে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করে মন্ত্রনালয়কে জানানোর জন্য অনুরোধ করেন।

প্রতিবন্ধীকে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সরাসরি চেয়ারম্যানের সম্পৃক্ততা ও মামলায় প্রধান আসামী তিনি হওয়ায় বরগুনা জেলা প্রশাসক তাকে অপসারণের জন্য সুপারিশ করে মন্ত্রনালয়ে আবেদন করেন। মন্ত্রনালয় জেলা প্রশাসকের সুপারিশ পাওয়ার পরে গত বুধবার ২ আগস্ট তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ২০১২ সালে ২২ মার্চ বামনা উপজেলার বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের শিংড়াবুনিয়া গ্রামে মানসিক প্রতিবন্ধী মো. হাবিবুর রহমান সিকদার নামে এক ব্যক্তিকে চোর সন্দেহে আটক করে গ্রামবাসী। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ওই ব্যক্তিকে মারধর করেন। পরে তাকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসেন।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসার পর চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সবুজ ও তার সহযোগীরা মুমূর্ষ ওই প্রতিবন্ধীকে পুনরায় বেধড়ক মারধর করেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তবে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সবুজ জড়িত ছিলেন না দাবী করে তিনি জানান, যখন শিংড়াবুনিয়া থেকে আমি খবর পাই একজনে চোর সন্দেহে আটক করা হয়েছে তখন আমি বামনা সদরে একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ছিলাম। আমাকে যারা সংবাদটি জানিয়েছিলো তাদেরকে তখনই আমি বলেছি যাতে তার ওপর কেউ আঘাত না করে। আমি বুকাবুনিয়া পরিষদে আসার পরে স্থানীয়রা আমার কাছে তাকে নিয়ে আসে। ততক্ষণে গ্রামবাসীর গণপিটুনিতে তার অবস্থা সংকটাপন্ন হয়েছে। আমি পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানেই সে মারা যান। আমি তার গায়ে হাত দেইনি। অথচ রাজনৈতিক শত্রুদের পরামর্শে আমাকেই প্রধান আসামী করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অন্তরা হালদার বলেন, চেয়ারম্যানের সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপন গতকাল পেয়েছি।

এআরএস

Link copied!