Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪,

ছাতকে নিয়ন্ত্রণহীন অটোরিক্সা, তীব্র যানজটে ভোগান্তি

ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

আগস্ট ৭, ২০২৩, ০৩:৪৬ পিএম


ছাতকে নিয়ন্ত্রণহীন অটোরিক্সা, তীব্র যানজটে ভোগান্তি

ছাতকে নিয়ন্ত্রণহীন ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা শহরে বসবাসরত মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। মুহুর্তে-মুহুর্তে সৃষ্টি হচ্ছে অভেদ্য যানজট।শহরের পয়েন্টে-পয়েন্টে অটোরিক্সার যানজট লেগেই আছে। প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশী অটোরিক্সা চলাচল করছে  ছাতক শহরে। ফলে প্রতি মুহুর্তেই যানজটের কবলে পড়তে হচ্ছে শহরবাসীকে।

অটোরিক্সার যানজটের ফাঁক দিয়ে একজন মানুষও চলাচল করার সুযোগ থাকে না। ফলে অনেক ক্ষণ দাড়িয়েই থাকতে হচ্ছে চলাচলকারীদের। অনিয়ন্ত্রিত ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সার বে-পরোয়া চলাচলে শহরবাসীর স্বাভাবিক জীনবযাত্রা ক্ষণে-ক্ষণে থমকে যেতে হচ্ছে। ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, শিল্পনগরী ছাতক একটি এক গলির ছোট শহর। শহরবাসীর প্রয়োজনের তুলনায় এখানে অনেক বেশী ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা চলাচল করছে।

এখানে অধিকাংশ অটো রিক্সার চালকের বয়স ১৫ বছরের নিচে। যারা সড়কে গাড়ি চালানোর নিয়ম-নীতি বা আইন সম্পর্কে কিছুই জানে না। প্রশিক্ষণহীন এসব অটো চালকের কোন ধরনের লাইসেন্স বা অনুমতিও নেই। ফলে ছোট-বড় দূর্ঘটনাও ঘটছে নিয়মিত।

অনেক সময় ওভারটেক করার মন মানষিকতায় প্রতিযোগিতায় মত্ত হয় চালকরা। গতির প্রতিযোগিতায় প্রায়ই অটো চালকরা তারা নিজেদের মধ্যে ঝগড়া ও বাক-বিতন্ডায় লিপ্ত হয়ে থাকে। কোন ধরনের অনুমতি না থাকায় শহরে চলাচলরত এসব অটোরিক্সার জন্য কোন স্ট্যান্ডও নির্ধারিত করা হয়নি। যেখানে-সেখানে অটো দাঁড় করিয়ে যাত্রী উঠা-নামা করছে চালকরা।

শহরের থানা রোড হতে শিববাড়ী সিএনজি ষ্ট্যান্ড পর্যন্ত প্রায় অর্ধ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করতে একাধিক স্থানে যানজটে পড়তে হচ্ছে পথচারিদের। পায়ে হেটে বাজার-খরচ করা দুরহ হয়ে পড়ছে। অতিরিক্ত অটো রিক্সার কারনে শহরের দোকানীরা বিব্রতবোধ করতে দেখা গেছে। ষ্ট্যান্ড না থাকা দোকানের সামনে অটো দাঁড় করিয়ে রেখে যাত্রীর অপেক্ষা করে চালকরা।

এতে অটোক্সিার আড়ালে পড়ে যায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। শহরের কালীবাড়ি, বালিকা বিদ্যালয়, ট্রাফিক পয়েন্ট, পানহাটা, আখড়া সংলগ্ন এলাকা, সিমেন্ট কারখানা খেয়া ঘাট, নোয়ারাই পাবলিক খেয়া ঘাট, তাহির প্লাজার সামন, প্রেসক্লাব সংলগ্ন মোড় সহ একাধিক পয়েন্টে অটো রিক্সার যানজট লেগেই থাকে।

আবার অনেকেই মনে করছেন বিদ্যুত আসা-যাওয়ার এ ভেল্কিবাজির জন্য অনেকাংশেই ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা দায়ী। ছাতক শহরে চলাচলরত দেড় সহশ্রাধিক অটো রিক্সার প্রতিটিতেই রয়েছে ৩-৪টি করে ব্যাটারী। একটি দিয়ে চলাচল করে আর বাকী গুলো রাতভর বিদ্যুতের বৈধ-অবৈধ লাইনে চার্জ দিয়ে থাকে। ফলে আবাসিক ও বানিজ্যক লাইনে ঘাটতি পড়ে বিদ্যুতের।

এদিকে শহরের যানজট নিরসনে সিএনজি চালিত অটো রিক্সা ও ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সা নিয়ন্ত্রনের লক্ষ্যে ৭মে ও ১৪ মে পৌর এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে  পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম চৌধুরীর দুটি পৃথক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসব সভায় যানজট নিরসনে বিশেষ কোন কারন ছাড়া শহরের অভ্যন্তরে অবাধে ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা ও সিএনজি চালিত অটো রিক্সা চলাচল না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

একই সাথে নির্ধারিত স্থান থেকে যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে চলাচল করার জন্য কিছু সংখ্যক ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সাকে পৌরসভা কর্তৃক অনুমোদন দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি যানজট মুক্ত শহর গড়ার ক্ষেত্রে শহরের দোকানের সামনে ভাড়া দেয়া ভ্রাম্যমান দোকান উচ্ছেদের জন্য জরুরী পদক্ষেপ নিতে পৌর মেয়র সহ প্রশাসনের প্রতি দাবী জানান বক্তারা। সড়কের উপর দোকান বসানো যানজট সৃষ্টির একটি অন্যতম কারন বলে মন্তব্য করেন উপস্থিত সুধীজন। কিন্তু এতোদিনে এসবের কিছু বাস্তবায়িত হয় নি।  

ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা নিয়ন্ত্রনে এবং যানজট নিরসনের বিষয়ে মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী জানান, সরকার অটো রিক্সা চলাচলে অনুমতি দিয়েছে। তাই নিয়ন্তিতভাবে অটো চলাচলের ব্যবস্থা নিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই লাইসেন্স প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তবে এলাকা ভিত্তিক বন্টন করে শহরে চলাচল করার জন্য প্রায় ৩ শ’ অটো রিক্সাকে অনুমোদন দেয়া হবে।

এআরএস

Link copied!