Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০১ মে, ২০২৪,

নলছিটির সুগন্ধা নদী ভাঙনে বিলীন কয়েকটি গ্রাম

নলছিটি (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি

নলছিটি (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি

আগস্ট ১৩, ২০২৩, ০২:১৮ পিএম


নলছিটির সুগন্ধা নদী ভাঙনে বিলীন কয়েকটি গ্রাম

আমার একটা বাড়ি নদীতে চলে গেছে এছাড়া আমার ৯ কুড়া জমি ছিলো সব সুগন্ধা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এমনকি আমার বাপ দাদার যে কবর ছিলো তাও নদীতে। বর্তমানে আমার চাচতো ভাইর জমিতে কোনরকম একটু ঘর উঠিয়ে থাকি। আমাদের কেউ কোন খোঁজখবর নেননি। আমরা খুবই অসহায় হয়ে পড়েছি।

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ভৈরবপাশা ইউনিয়নের বহরমপুর গ্রামের  সুগন্ধা নদীর তীরের বাসিন্দা সৈয়দ আলী (৬০) এমনটাই মনের কষ্ট বলতে ছিলেন।

একই এলাকার রিয়াজ আহমেদ (৪৫) বলেন, আমাদের বাড়িটা ১ একর ৩০ শতাংশ যা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া আমাদের বাড়ির সামনে মাঝি বাড়ি, সিকদার বাড়ি, বয়াতি বাড়ি সব নদীতে চলে গেছে। আমাদের এখন থাকার মতো কোন স্থান নাই। একটা মানুষ মরলে যে মাটি দিবে এমন কোন স্থান আমাদের নাই।

হেপী বেগম (৩৮) বলেন, নদী ভাঙতে ভাঙতে এখন ঘরের সাথে এসেছে। এখন আমরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি। আমাদের ছেলে মেয়ে নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় আছি। কোথায় যাবো কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না।

অবসরপ্রাপ্ত তহসীলদার হাজী আব্দুল হক তালুকদার বলেন, যে জায়গাটায় আমি অনেক বসতঘর দেখেছি সেখান থেকে এখন লঞ্চ চলাচল করে। নদী এখন আমার বাড়ির নিকটে চলে আসছে। আমি হয়তো ভবিষ্যতে নিজ ভিটায় থাকতে পারবো না।

সরই গ্রামের ইউপি সদস্য বেল্লাল হোসেন মোল্লা বলেন, ভাঙনকুলে থাকা আমার অনেক স্বজনরা তাদের বাপ-দাদার বাড়ির চিহ্নটুকু রাখতে পারেনি। আমরা ইউপির মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে এবং আমাদের এমপিকে অবগত করেছি। কিন্তু হচ্ছে/হবে বলে আজ পর্যন্ত ভাঙনরোধে কোনো সুরাহা পাইনি।

নলছিটি উপজেলার কুলকাঠি ইউপি চেয়ারম্যান এইচ এম  আখতারুজ্জামান বাচ্চু বলেন, স্কুল, মাদ্রাসা, বাজার এবং অনেক বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। তবে গ্যাস বহনকারী জাহাজগুলোকে দায়ী করে তিনি বলেন, জাহাজের গতি নিয়ন্ত্রণ না থাকায় ভাঙনের তিব্রতা বেড়েছে। তবে সুগন্ধা নদীর সরই অঞ্চলটি ভাঙন রোধে ইউপি থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন।

ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ. কে. এম. নিলয় পাশা বলেন, ঝালকাঠি ও নলছিটির ভাঙন এলাকা আমাদের প্রাথমিক জরিপ সম্পাদনা করা হয়েছে। ডিপিপি কার্যক্রম অনুমোদন পেলে আমরা  যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব।

এইচআর

Link copied!