Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪,

রংপুরে অনিবন্ধিত ডেভেলপারের খপ্পরে ভূমিমালিক

মিজানুর রহমান মিজান, রংপুর ব্যুরো

মিজানুর রহমান মিজান, রংপুর ব্যুরো

মার্চ ৪, ২০২৪, ০৭:৩৪ পিএম


রংপুরে অনিবন্ধিত ডেভেলপারের খপ্পরে ভূমিমালিক

উত্তরবঙ্গের বিভাগীয় শহর রংপুরে অনিবন্ধিত ডেভলেপারের খপ্পরে পড়ে প্রতারণার স্বীকার হচ্ছেন ভূমি মালিক। সম্প্রতি ভুক্তভোগি ভূমিমালিক ডেভেলপার মমতা কোম্পানিজ লি. এর প্রতারণা থেকে বাঁচতে আদালতের দারস্থ হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে ডেভেলপারদের নিবন্ধন দাতা প্রতিষ্ঠান রংপুর সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্তদের অদক্ষতার কারণেই এমনটি হচ্ছে। 

মামলা সূত্রে জানা গেছে, রংপুর নগরীর মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা মৃত-এ এ এম সালেকের তিনতলা বিশিষ্ট বাড়িসহ ১৪ শতাংশ জমি ওয়ারিশ সূত্রে দুই মেয়ে এক ছেলে প্রাপ্ত হন। মেয়ে আখতার আফরিদা জাহান ও খালেদা ফার্সিয়া জাহানসহ ভাই জামিলুল ইসফাক ঢাকায় থাকেন। পৈত্তিক স্মৃতিকে ধরে রাখতে মমতা কোম্পানিজ লি. সঙ্গে ২০২২ সালের ১১ আগস্টে রংপুর সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ১ম পক্ষ ভূমি মালিক ৪০ শতাংশ ও ২য় পক্ষ ডেভেলপার ৬০ শতাংশ শর্তে ভবন নির্মাণে চুক্তপত্রে আবদ্ধ হন, যার নং- ১৬৮৮৫। 

চুত্তিপত্রের প্রায় ১৮ মাসেও মমতা কোম্পানিজ লি. কোন  কার্যক্রম শুরু না করে আজকাল বলে কালক্ষেপন করেন। ভূমিমালিক পক্ষের আমমোক্তার মাহমুদ হাসান মমতা কোম্পানিজ লি. বৈধ ব্যবসায়ী কি-না সেই সর্ম্পকে খোঁজ নিয়ে দেখেন, রিয়েল এস্টেট নিবন্ধন আইন ২০১০এর ৫ ধারায় ডেভলপার হিসেবে তাদের নিবন্ধন নেই। পরে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জমিদাতা মোছা. আকতার আফরিদা জাহান গং বাদি হয়ে মমতা কোম্পানিজ লি. চেয়ারম্যান মাহবুবার রহমানকে আসামি করে রংপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। সি আর নং ২০৭/২৪।

আমমোক্তার মাহমুদ হাসান অভিযোগ করে বলেন, মমতা কোম্পানিজ লি. আইনের ধরা-ছোয়ার বাইরে থেকে অবৈধভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। যেহেতু তাদের নিবন্ধন নেই। যাদের দেখভালের দায়িত্ব রয়েছে তারা মোটা দাগে সুবিধা নিয়ে নিরব ভুমিকা পালন করছেন। তাদের তৈরিকৃত ভবনগুলোর নকশার ত্রুটিসহ যেকোন দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তারা কৌশলে ভূমি মালিকের নামেই নকশা অনুমোদন করিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। 
ডেভেলপার হিসেবে নিবন্ধিত কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে মমতা কোম্পানিজ লি. এর চেয়ারম্যান মাহবুবার রহমান বলেন, আমরা রিহ্যাবের সদস্য, সমস্ত কাগজপত্র আছে। আমাদের উপর মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।
২০১০ সালে ৫ অক্টোবরে প্রকাশিত গেজেটে ৪৮নং আইনে আছে ডেভেলপার ব্যবসার জন্য অবশ্যই নিবন্ধিত হতে হবে। ৪এর (ক) ধারায় নিবন্ধন দাতা হিসেবে নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অবর্তমানে সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশনকে নিবন্ধন দেয়ার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

নিবন্ধন ব্যতিত কোন প্রতিষ্ঠান ব্যবসা পরিচালনা করিলে ওই অপরাধে অনুর্ধ্ব ২(দুই) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অনুর্ধ্ব ১০ (দশ) লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে মমতা কোম্পানিজ লি. অনিবন্ধিত হয়েও রংপুরে ডেভেলপার হিসেবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। কোনরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে জানতে চাইলে, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ নজরুল ইসলাম বলেন, ডেভেলপারের নিবন্ধন সিটি কর্পোরেশন দিতে পারে না। কেন পারেনা, পাল্টা প্রশ্নে সদুত্তর মেলেনি তার কাছে। দায় এড়ানোর জন্য বলেন, আমাদের দক্ষ জনবল নেই, তাই নজরদারী করতে পারছি না। 

মমতা কোম্পানিজ লি. কর্তৃক নির্মাণাধীন ভবনগুলো বসবাসযোগ্য এবং ঝুঁকিমুক্ত কি-না, এমন প্রশ্নে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আজম আলী বলেন, যেসব ভবন নির্মাণ হচ্ছে তা একার পক্ষে মনিটারিং করা সম্ভব নয়।

রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা বলেন, রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার ব্যবসয়ীদের নিবন্ধন লাগবে কি-না এ বিষয় আমার চেয়ে ভালো জানবে ইঞ্জিনিয়ার সেকশন, সেখানে যোগাযোগ করেন তারই ভালো বলতে পারবে।

আরএস

 

Link copied!