Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪,

বাগেরহাটে ধান-মাছ বাঁচাতে খননের জন্য দেওয়া বাঁধ কাটল বিক্ষুব্ধ জনতা

বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাট প্রতিনিধি

মার্চ ১৩, ২০২৪, ০৫:৫৯ পিএম


বাগেরহাটে ধান-মাছ বাঁচাতে খননের জন্য দেওয়া বাঁধ কাটল বিক্ষুব্ধ জনতা

বাগেরহাটের কচুয়ার বাধাল, রাড়িপাড়া, গোপালপুর এবং মোরেলগঞ্জের বনগ্রাম ইউনিয়নের প্রায় ৪০টির গ্রাম পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। খননের জন্য মোরেলগঞ্জের বিষখালি নদীতে বাঁধ দেওয়ার কারণে পানি প্রবেশ করতে না পারায় ওইসব এলাকার খাল ও পুকুরের পানি শুকিয়ে গেছে। পানির অভাবে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন মাছ ও ধান চাষিসহ স্থানীয়রা। প্রায় চার-পাঁচ মাস ধরে চলা এই পানি সংকট নিরসনে ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ধরনা দিয়েও কোন লাভ হয়নি।

বাধ্য হয়ে বুধবার বেলা ১১টায় কচুয়ার বাধাল, গোপালপুর, মোরেলগঞ্জের বনগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শতশত নারী পুরুষ এক হয়ে বলেশ্বর এবং বিষখালী নদীর সংযোগস্থল কচুয়া উপজেলা অংশে দেওয়া বাধ কাটতে শুরু করেন। স্থানীয় বাধাল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নকিব ফয়সাল অহিদ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কোতয়াল ইলিয়াস আলী, স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও অংশগ্রহণ করেন। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় বিকেল ৩টার দিকে বাঁধ কেটে পানি প্রবেশ স্বাভাবিক করতে সক্ষম হন তারা।

খোন্তা হাতে বাঁধের মাটি কাটতে থাকা স্থানীয় বাসিন্দা সুজন শেখ বলেন, দেড়-দুই মাস ধরে শুধু বাঁধ কেটে পানি ঢুকানোর আশ্বাস দেয় ঠিকাদারের লোকজন। কিন্তু বাঁধও কাটে না, পানিও ঢুকায় না। আবার কাজ শেষ হওয়ারও লক্ষণ নেই। আমরা এক ধরনের বাধ্য হয়ে সবাই মিলে বাঁধ কাটতে আসছি।

পুরুষদের সাথে বাঁধ কাটতে আসা রুকাইয়া আক্তার বলেন, ধানে কাঁচা থোর আসছে, এখন যদি পানি না দিতে পারি তাহলে তো ধান হবে না। বাড়িতে রান্না ও গোসলের পানিও পর্যাপ্ত নেই। বাধ্য হয়ে সবাই মিলে বাঁধ কাটতে আসছি।

রসুল শেখ নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, প্রায় তিন মাস ধরে পানির কষ্টে ভুগছিলাম। এখন পানি ঢুকছে। আশাকরি আল্লাহ আমাদের উপর রহমত করবেন। ধান ও মাছ ভাল হবে।

বাঁধাল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কোতয়াল ইলিয়াস আলী বলেন, পানির জন্য পুরো এলাকায় হাহাকার লেগে গিয়েছিল।নারী-পুরুশ, যুবক-বৃদ্ধ মিলে দুই হাজার মানুষ এসেছে। যে যেভাবে পেরেছে বাঁধ কেটেছে। কয়েকটা বাঁদ দেওয়া ছিল, কাটা হয়েছে। এখন পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাবে।

এদিকে হঠাৎ করে বাঁধ কেটে দেওয়ায় খনন কাজে কিছুটা সমস্যা হবে দাবি করে বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মাদ আল-বিরুনী বলেন, বাঁধ কাটার বিষয়টি জানতাম না। পরে জেনেছি। হঠাৎ করে বাঁধটি কাটায় খনন কাজে খুব সমস্যা হবে। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা দূরহ হবে বলে জানান তিনি।

জেলার মোরেলগঞ্জ ও কচুয়ার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মৃত প্রায় বিষখালি নদীর ২৩.৩৭ কিলোমিটার খননের উদ্যোগ নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে খনন শুরু হয়। নির্বিঘ্নে খনন কাজ সম্পন্ন করতে তখন থেকেই বিষখালী নদীর বাধাল, পূর্ববিষখালীসহ কয়েকটি জায়গায় একাধিক বাঁধা দেওয়া হয়। যার ফলে ৪০টির গ্রাম পানিশূন্য হয়ে পড়ে।

আরএস

 

Link copied!