Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪,

আশ্রয়ণের অধিকাংশ ঘর ফাঁকা, ঘর ছেড়েছেন বাসিন্দারা

আরিফুল ইসলাম রিফাত, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম)

আরিফুল ইসলাম রিফাত, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম)

মার্চ ১৬, ২০২৪, ১০:৪৫ এএম


আশ্রয়ণের অধিকাংশ ঘর ফাঁকা, ঘর ছেড়েছেন বাসিন্দারা
ছবি: আমার সংবাদ

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের অধিকাংশ ঘরেই থাকছেন না বরাদ্দপ্রাপ্ত পরিবারের লোকজন। বর্তমানে এসব ঘরে ঝুলছে তালা। অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে থাকার ফলে বর্তমানে দৃষ্টিনন্দিত ওই ঘরগুলোর রং চটে গিয়ে বিবর্ণ হয়ে পড়ছে। তাই বরাদ্দ বাতিল করে সেখানে বসবাসরত পুরনোদের স্থানান্তরের দাবি তুলেছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের দেয়া তথ্যমতে, এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ৩৮৪টি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়। যার প্রতিটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় দুই লাখ টাকা। দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট এ সেমিপাকা প্রতিটি ঘরে দুটি কক্ষ সংযুক্ত রান্নাঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা রয়েছে।

সরেজমিনে উপজেলার আধুনগর কুলপাগলী আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ২৯টি ঘরের মধ্যে দক্ষিণ পাশে নির্মিত ১৩টি ঘরে বসবাস করেন ৭ পরিবার উত্তরপূর্ব পাশে ১৬টির মধ্যে ৮ পরিবার। এছাড়া পুটিবিলা পহরচান্দা আশ্রয়ণ প্রকল্পে ২৫ পরিবারের মধ্যে বসবাস করছেন মাত্র ১ পরিবার। একই চিত্র উপজেলার প্রায় প্রত্যেকটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের।

পুটিবিলা পহরচান্দা আশ্রয়ণ প্রকল্পের সামছুল ইসলাম বলেন, এখানে ২৫টি ঘর আছে একটিতে আমি একা থাকি আর ২৪টিতে তালা ঝুলানো। এখানে রাতেরবেলা নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিরা এসে খুব সমস্যা করে। ঘরগুলোতে লোকজন দিলে ভালো হয়, আমি খুব আতঙ্কে আছি পরিবার নিয়ে।

কুলপাগলী আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসরত ইয়াসমিন আক্তার বলেন, আমাদের দক্ষিণ পাশে ১৩টি ঘরের মধ্যে আমরা ৭ পরিবার থাকি বাকিরা থাকেন না। তাদের নাকি বাড়ি আছে এজন্য ওরা এখানে নিয়মিত আসেন না। মাঝেমধ্যে এসে পরিষ্কার করে চলে যায় কিন্তু রাতে থাকেন না। আমরা চাই আমাদের মতো গরীবলোক দেখে ঘরগুলো বরাদ্দ দেয়া হোক।

আক্ষেপের সুরে একই আশ্রয়ণ প্রকল্পের টিনসিট ঘরে বসবাসরত মমতাজ বেগম বলেন, আমাদের টিনসিট ঘরগুলো দীর্ঘদিন আগের হওয়াতে বৃষ্টি হলেই পানি ঢুকে পড়ে। ঘরগুলো মেরামত করারমতো সামর্থ্যও নেই। সরকার নতুনভাবে সেমিপাকা ঘরগুলো যাদের দিয়েছে তাদের বাড়িঘর আছে বলেই ওখানে থাকতে হচ্ছে না। তারা কিছু বিক্রি করেছে কিছু ভাড়া দিয়েছে আর কিছু তালা লাগানো অবস্থায় ফেলে রেখেছে। সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি ঘরগুলোতে আমাদের স্থানান্তর করার জন্য।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইনামুল হাসান বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা ইতোমধ্যে উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভা করেছি। এখানে কিছু ঘর যারা থাকছেন না তাদের তালিকাটা করেছি; ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে আবারও তালিকাটা করবো এবং দুইটা পুনর্বিবেচনা করে জেলা টাস্কফোর্স কমিটিতে পাঠিয়ে দিব। ওইখান থেকে সিদ্ধান্ত যেভাবে দেয় যদি ওদের পরিবর্তে অন্য কাউকে উপকারভোগী হিসেবে নির্ধারণ করার জন্য বলা হয় আমরা সেভাবে নির্ধারণ করবো।

তিনি আরও বলেন, ঘরগুলো যাদের দেয়া হয়েছে তাদের খতিয়ান এবং দলিলসহ দেয়া হয়েছে এটি বাতিল করে নতুনভাবে বরাদ্দ দেয়াটা জটিল বিষয়।

এআরএস

Link copied!