ঝিকরগাছা (যশোর) প্রতিনিধি
এপ্রিল ২৩, ২০২৪, ০৪:৫২ পিএম
ঝিকরগাছা (যশোর) প্রতিনিধি
এপ্রিল ২৩, ২০২৪, ০৪:৫২ পিএম
৩ লক্ষ মানুষের চিকিৎসার আশ্রয়স্থল ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। হাসপাতালটির চিকিৎসা সেবার মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রোগী এবং তাদের স্বজনরা। ডাক্তারের অভাবে একদিকে যেমন রোগীরা কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না অন্যদিকে মেশিন নষ্ট থাকায় সার্জারি বিভাগ রয়েছে বন্ধ। কবে নাগাদ চালু হবে সেটাও অজানা। এমতাবস্থায় সমালোচনার মুখে পড়েছে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
জানা গেছে, ২০১২ সালে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও এই শয্যার বিপরীতে কখনই ডাক্তার বা কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ১২ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের বিপরীতে আছেন ৫ জন এবং ১৫ জন মেডিকেল অফিসারের বিপরীতে আছেন মাত্র ২ জন। ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির ৪৯টি পদের বিপরীতে কর্মচারী আছেন মাত্র ২২ জন। ডাক্তার আর কর্মচারী সংকটে হাসপাতালে আগত রোগীরা তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না।
দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে তারপর লম্বা সময় অপেক্ষা করেও ডাক্তার দেখাতে পারছে না অনেকে। প্রচণ্ড গরমে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন সন্তান সম্ভব মায়েরা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ডাক্তারের কাছে পৌঁছাতে পারলেও তাদের প্রেসার বা ওজন মাপা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন অনেকে।
অন্যদিকে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে ডায়াথার্মি মেশিন নষ্ট থাকায় প্রায় মাসখানেক ধরে সিজারিয়ানসহ অন্যান্য সব ধরনের সার্জারি বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে গরীব রোগীদের বেসরকারি ক্লিনিকের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে। ফলে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
কতদিনে এই মেশিন ঠিক হবে না নতুন মেশিন আসবে সেটাও সবার অজানা। ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি জেনারেটর থাকলেও জ্বালানি তেল কেনার বরাদ্দ না থাকায় সেটাও চালু করা সম্ভব হয় না। ফলে এই প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যে বিদ্যুৎ চলে গেলে ফ্যান তো দূরের কথা একটা আলোরও ব্যবস্থা থাকছে না। ভ্যাপসা গরম আর অন্ধকারে চরম দুরবস্থা বিরাজ করে রোগীদের ওয়ার্ডগুলোতে।
ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার রশিদুল আলম বলেন, বারবার চাহিদা দেওয়া স্বত্বেও এখানে ডাক্তার এবং কর্মচারী কোনোটাই দেওয়া হচ্ছে না। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হলেও এখানে সবসময় ৮০ থেকে ৯০ জন রোগী ভর্তি থাকে। অল্প সংখ্যক জনবল দিয়ে এতসংখ্যক রোগীকে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া সম্ভব নয়। তবুও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। ডায়াথার্মি মেশিনের জন্য আবেদন পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পেলে আবারও সার্জারি বিভাগ চালু হবে। কিন্তু কতদিন লাগতে পারে সে বিষয়ে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি।
যশোর জেলার সিভিল সার্জন ডাক্তার বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, মেশিনের জন্য আমি কয়েকবার আবেদন পাঠিয়েছি। অন্যান্য বিষয়গুলো দেখে জানাবো।
চৌগাছা ঝিকরগাছা আসনের সংসদ সদস্য ডাক্তার মো. তৌহিদুজ্জামান তুহিন বলেন, আমি নিজে এসকল বিষয়গুলো নিয়ে সিভিল সার্জনের সাথে কথা বলেছি। তবে সরকারি বরাদ্দ পাওয়াটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।
ইএইচ