Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪,

ফরিদপুরে কৃষান হাটের অফিসে দুর্বৃত্তের হামলা, পরিচালককে মারধর

ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুর প্রতিনিধি

মে ১৫, ২০২৪, ০৫:৪৩ পিএম


ফরিদপুরে কৃষান হাটের অফিসে দুর্বৃত্তের হামলা, পরিচালককে মারধর

ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামটের বেতুয়াবাড়ি এলাকার মিজান চৌধুরী হাউজিং এস্টেটের পাশে কৃষান হাটের অফিসে লুটপাট চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় হাটের পরিচালক মো. বাবু শেখকে মারধর করে।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় তারা। এ ঘটনায় এলাকায় কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

জানা গেছে, ফরিদপুরে প্রায় ৪০ বছর ধরে পরিচালিত হচ্ছে কৃষান হাট। এখানে উত্তর বঙ্গের প্রায় ১০টি জেলাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ আসে তাদের শ্রম বিক্রি করতে। এই কৃষানেরা এ হাট থেকে ফরিদপুর জেলাসহ আশেপাশের বিভিন্ন জেলায় কৃষি কাজের জন্য বিক্রয় হয়ে যায়। আর যারা কাজ পান না তারা এ হাটেই অবস্থান নেন। কৃষি কাজের মৌসুমে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১ হাজার কৃষান এখানে কেনাবেচা হয় কাজের জন্য।

অভিযোগ রয়েছে, এই হাটের কৃষানীদের নানাভাবে হয়রানি, লাঞ্ছিত ও চাঁদাবাজিসহ হয়রানি করে থাকে স্থানীয় কিছু বখাটে ও দুর্বৃত্তরা। এই বখাটেদের অনেকবারই কৃষানীদের হয়রানি করতে নিষেধ করেন কৃষান হাটের দায়িত্বে থাকা মো. বাবু শেখ। এই বখাটেদের প্রতিবাদ করাই কাল হলো বাবু শেখের।

মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ১২ থেকে ১৫ জনের একটি দুর্বৃত্ত বাহিনী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হানা দেয় কৃষান হাটে ও বাবু শেখের অফিসে। এ সময় তাকে বেধরক মারপিট করে দুর্বৃত্তরা। অফিসে তাণ্ডব চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। দুর্বৃত্তরা অফিস ও বাবু শেখের কাছ থেকে নগদ ৬০ হাজার টাকা, মোবাইলসহ প্রায় ১ লাখ টাকার মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়।

মো. বাবু শেখ অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় গোয়ালচামট ১ নম্বর সড়ক নিবাসী রানা চক্রবর্তীর ছেলে রাহুল এবং শোভারামপুর কবিরের মোড় এলাকার আহাদুলসহ কতিপয় দুর্বৃত্ত ও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা কৃষান হাটের কৃষকদের উপর নানাভাবে হয়রানি ও চাঁদা দাবি করে আসতো। আমি ব্যক্তিগতভাবে একাধিকবার তাদের এ অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করি। গত কয়েকদিন আগেও তারা হাটের পিছনে কৃষানরা গোসল করতে গেলে কয়েকজন কৃষককে লাঞ্ছিত করে। আমি তখনই গিয়ে তাদের প্রতিবাদ করি। এই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা সেসময় আমার সাথে খুবই বেপরোয়া আচরণ করে।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে তারা মুখে মাস্ক পরে দেশীয় অস্ত্র চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, রড, পাইপ ইত্যাদি নিয়ে ১০ থেকে ১৫ জনের বাহিনী আমার অফিসে এসে হামলা চালায়। রাত হওয়ায় অফিসে আমি ও আমার স্টাফ মামুন ও তাহের উপস্থিত ছিল। দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে আমাদের জিম্মি করে ফেলে অফিস কক্ষে। এ সময় তারা আমাকে রড ও পাইপ দিয়ে বেধরক মারপিট করে ও অফিসে থাকা নগদ ৬০ হাজার টাকা তারা লুট করে নিয়ে যায়। আর মামুনের মোবাইল ফোনটিও তারা নিয়ে চলে যায়। চলে যাওয়ার সময় রাহুল ও আহাদুলের মুখের মাস্ক খুলে যাওয়ায় আমি তাদের চিনতে পারি।

মো. মামুন মিয়া বলেন, ঘটনার সময় আমি পাশেই ছিলাম। অফিস রুমে চিৎকার শুনে এগিয়ে গেলে তারা আমাকেও মারপিট করে, মোবাইলটি ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা চলে গেলে বাবু শেখকে উদ্ধার করে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করি। বাবু শেখের হাতে, মাথায়, পিঠে লিলাফোলা জখম আছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত রাহুল ও আহাদুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাসানউজ্জামান বলেন, কৃষান হাটের ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। গত রাতেই আসামিদের ধরতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কাজ করছে।

ইএইচ

Link copied!