ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করছেন গাছিরা

এম এ মান্নান, চৌগাছা (যশোর)

এম এ মান্নান, চৌগাছা (যশোর)

অক্টোবর ২৬, ২০২৪, ০৩:০৮ পিএম

খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করছেন গাছিরা

যশোরের চৌগাছায় শীতে খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করার কাজে ব্যস্ত গাছিরা।

শীতের আগমনী বার্তা ঋতু বৈচিত্র্যে এখন রাতের শেষে কুয়াশা জানান দিচ্ছে। আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহে চৌগাছা উপজেলার মাঠে মাঠে খেজুর রস সংগ্রহের জন্য গাছিরা খেজুর গাছ প্রস্তুত কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ইতিমধ্যে খেজুর গুড় জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এ ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উঠান বৈঠক, গাছি সমাবেশ, খেজুরের গুড়ের মেলা ও ব্যাপকভাবে খেজুর গাছ রোপণ করা হয়েছে।

অল্পদিনের মধ্যে পূবালি বাতাসে চির সবুজের বুকচিরা অপরূপ সৌন্দর্যে সকলের মন মাতিয়ে তুলবে মিষ্টি খেজুর রস ও গুড়ের ঘ্রাণ। কাক ডাকা ভোরে থেকে চলবে রস সংগ্রহ। সন্ধ্যায় চলবে গাছ পরিচর্যার কাজ। চলতি মৌসুমে কিছুটা আগেই উপজেলার প্রান্তিক গাছিরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ জনপদের গ্রামে গ্রামে সকালের শিশিরের সাথে অনুভূত হচ্ছে মৃদু শীত।

শনিবার সরেজমিনে উপজেলার পাতিবিলা ইউনিয়নের নিয়ামতপুর এলাকায় গেলে চোখে পড়ে গাছিরা রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করছেন।

এ সময় কথা হয় নিয়ামতপুর গ্রামের গাছি আব্দার রহমান, বাবু, নুর হোসেন নুরো, নাজিম উদ্দীন ও গাছি গেসু মিয়ার সাথে।

তারা জানান, আগাম খেজুরের গুড় পেতে শীত মৌসুমের শুরুতেই গাছ প্রস্তুত শুরু করেছি। এ বছর ১টি গাছ প্রস্তুত করতে মজুরি ১২০ টাকা। একজন দিনে ১৫-১৬টি গাছ রোপণ করতে পারে।

আর মাত্র কয়েক দিন পর রস সংগ্রহ করে রস থেকে গুড় ও পাটালি তৈরি শুরু হবে। চলবে প্রায় ফাল্গুন মাস পর্যন্ত। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি উপজলার প্রতিটি গ্রামে চোখে পড়ছে। খেজুররস ও গুড়ের জন্য চৌগছার সুনাম/খ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে। সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ ও গাছি। একদশক আগেও বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ পতিত জমিতে, ক্ষেতের আইলে, ঝোপ-ঝাড়ের পাশে ও রাস্তার দুই ধার দিয়ে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ।

এখনও শীতকালে শহর থেকে মানুষ দলে দলে ছুটে আসে গ্রাম বাংলার খেজুর রস-গুড় খেতে।

এক সময় সন্ধ্যাকালীন সময়ে গ্রামীণ পরিবেশটা খেজুর রসে মধুর হয়ে উঠতো। রস আহরণকারী গাছিদের প্রাণচাঞ্চল্য ছিল চোখে পড়ার মত। গাছির গলাই শুনা যেত ‘ঠিলে ধুয়েদে বৌ গাছ কাটতে যাবো, খেজুর গাছেচোমর বেড়েছে তোরে এনে দেব, সন্ধ্যা রস পেড়ে এনে জাও রেনদে খাবো’।

ভোর থেকে শুর করে সারাবেলা যেন গাছিরা মেতে থাকতো রস জ্বালিয়ে পাতলা ঝোলা, দানা গুড় ও পাটালি তৈরির কাজে। নলেন গুড়ের সাধ ও ঘ্রাণ ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। নতুন প্রজন্মের কাছে এখন অবশ্যই রূপকথা মনে হবে। যত বেশি শীত পড়বে তত বেশি মিষ্টি রস দেবে খেজুর গাছ।

উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের পেটভরা গ্রামের গাছি আব্দার রহমান বলেন, শীতের পুরো মৌসুমে চলে রস, গুড়, পিঠা, পুলি ও পায়েস খাওয়ার মহা উৎসবা। শহরে থেকে সকলে গ্রামের বাড়িতে আসে রস-গুড় খেতে। তবে নতুন করে কেউ আর খেজুর গাছ তোলা-কাটার কাজ করতে চাচ্ছে না। তবে খেজুর গাছ আমাদের অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সাহিত্য তথা জীবনধারায় মিশে আছে। এই ঐতিহ্যকে যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করতে হবে। একটি খেজুর গাছ ১৫ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত রস দেয়। এটাই তার বৈশিষ্ট্য। এছাড়া খেজুর পাতা জ্বালানি কাজেও  ব্যবহার হয়ে থাকে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন, কালের বির্বতনসহ বন বিভাগের নজরদারি না থাকায় বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ এখন উপজেলাজুড়ে প্রায় বিলুপ্তির পথে।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসাব্বির হুসাইন বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলেই খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। গাছিদের খেজুর গাছ কাটার কাজটি শিল্প আর দক্ষতায় ভরা। ডাল কেটে গাছের শুভ্র বুক বের করার মধ্যে রয়েছে কৌশল, রয়েছে ধৈর্য ও অপেক্ষার পালা। এ জন্য মৌসুমে আসার সাথে সাথে দক্ষ গাছিদের কদর বাড়ে। আমরা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের গাছিদের এ পেশায় টিকে থাকার জন্য প্রশিক্ষণ, উঠান বৈঠক, সমাবেশ করেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা বলেন, যশোরের যশ খেজুরের রস এ আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য রক্ষা করতে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ও পতিত জমিতে খেজুর গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। খেজুর গুড় ইতিমধ্যে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এ পেশার সাথে জড়িত গাছিদের নিয়ে সমাবেশ করে তাদেরকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। এ মৌসুমেও গুড় মেলা করা হবে।

ইএইচ

Link copied!