ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

খুড়িয়ে চলছে ঝিনাইদহ সরকারি শিশু হাসপাতাল

কে এম সালেহ, ঝিনাইদহ

কে এম সালেহ, ঝিনাইদহ

জানুয়ারি ৪, ২০২৫, ০৪:৫৭ পিএম

খুড়িয়ে চলছে ঝিনাইদহ সরকারি শিশু হাসপাতাল

নানামুখী সমস্যা নিয়েও শিশুদের সেবা দিয়ে চলেছে ঝিনাইদহের ২৫ শয্যার সরকারি শিশু হাসপাতালটি।

অর্থের অভাবে হাসপাতাল চত্বরে আবাদ করা কলা বিক্রির টাকা ও অনুদানে চলে চিকিৎসাসেবা। সরকারি উল্লেখযোগ্য কোনো বরাদ্দ না থাকায় চিকিৎসা সেবায় প্রয়োজনীয় যেকোনো জিনিসও কিনতে হয় অনুদানের টাকায়।

সরকারি এ শিশু হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে ৬০ জনের বেশি রোগী চিকিৎসা নিয়ে থাকে। হাসপাতালে চিকিৎসকের পদ আছে ৫টি। আছেন ৩ জন। ফার্মাসিস্ট, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, রেডিওগ্রাফি, প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক, অফিস সহকারী কাম ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ও স্টোরকিপারের পদও খালি।

এছাড়াও ২১ জন নার্স পদের বিপরীতে আছেন ১৭ জন। তবে এমএলএসএস, ওয়ার্ড বয়, আয়া, মালি, নিরাপত্তাপ্রহরী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কোনো পদই নেই। তারপরও এসব পদে যে ক’জন আছেন তাদের বেতন হয় অনুদানের টাকায়।
কিছু ব্যবসায়ী, কয়েকজন চিকিৎসক এবং ডা. আলী হাসান ফরিদের একাধিক বন্ধুর সহায়তায় শয্যা, যন্ত্রপাতি ও জনবল দিয়ে চলছে হাসপাতালটি। ঝিনাইদহের জাহেদি ফাউন্ডেশন নিয়মিত সহায়তা করে।

এছাড়াও ১৫ জন হৃদয়বান ব্যক্তি কিছু সহায়তা দেন। এরপরও হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অক্সিজেন ও ওষুধের যে চাহিদা তার অর্ধেকও বরাদ্দ নেই সরকারের।

২০০৫ সালের ৭ মে ঝিনাইদহ জেলা শহরের টার্মিনাল এলাকায় ২৫ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি এ শিশু হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। রাজনৈতিক বেড়াজালে আটকে বছরের পর বছর বন্ধ থাকে হাসপাতালটি। নানা চড়াই উতরাই পেরিয়ে ২০২১ সালের ৯ জানুয়ারি থেকে হাসপাতালটি তার সেবা কার্যক্রম শুরু করে।

হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উদ্বোধনের পর হাসপাতালে কোনো সরঞ্জাম না থাকায় কনসালট্যান্ট আলী হাসান ফরিদ তার বাসা থেকে ব্যক্তিগত কম্পিউটার নিয়ে আসেন। ওই কম্পিউটার হাসপাতালের কাজে ব্যবহার করেন এবং শিশুদের চিকিৎসা ও মায়েদের পরামর্শ দেন। এভাবে আস্তে আস্তে হাসপাতালটি আশপাশের এলাকার মানুষের কাছে সুনাম অর্জন করেছে। মানুষ এখন এ হাসপাতালের চিকিৎসাসেবায় আস্থাও রাখেন। কিন্তু সিভিল সার্জনের কার্যালয় বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হাসপাতালটির ওপর কোনো নজর নেই। যে কারণে হাসপাতালের কর্মকর্তারা বারবার অনুরোধ করেও জনবল, যন্ত্রপাতি ও অর্থসহায়তা পান না।

সরেজমিন শিশু হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, প্রথমে বড় একটি প্রবেশ গেট। ভেতরে প্রবেশ করলে চারপাশে নানা ধরনের ফুলের বাগান। এর সামনে লাল ইটের দোতলা ভবন। হাসপাতাল চত্বরটি খুবই পরিপাটি করে সাজানো।

ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেলো, পর্যাপ্ত শয্যা আছে। শয্যাগুলোর গায়ে লেখা কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম সেগুলো যারা দান করেছেন।

ঝিনাইদহ সদরের নতুনবাড়ি এলাকা থেকে আসা হীরা খাতুন বলেন, এ হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা পাওয়া যায়। আমার বড় ছেলে এখান থেকে সুস্থ হয়েছে। এখন ছোট ছেলে অসুস্থ, তাই এখানে এসেছি। ডাক্তার কিছু পরীক্ষা দিয়েছিলেন, কিন্তু এখানে কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাইরে থেকে পরীক্ষা করে ডাক্তারকে দেখাতে দুই দিন দেরি হয়ে গেলো।

কালীগঞ্জ উপজেলা থেকে আসা নাসিমা বেগম বলেন, আমার ১৬ মাসের সন্তানের শ্বাসকষ্ট হলে প্রথম উপজেলা হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে এখানে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়। এখানে এসে সন্তান অনেকটা ভালো আছে। হাসপাতালটি খুবই সুন্দর, সেবার মানও ভালো।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন পর চালু হলেও নানা সংকট রয়েছে হাসপাতালটিতে। নেই পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য কোনো ল্যাব। যে কারণে হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরও বাড়তি টাকা খরচ করে বাইরে থেকে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি বাড়তি টাকা খরচ হচ্ছে। তাই দ্রুত হাসপাতালটিতে পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য ল্যাব চালু করার দাবি রোগীর স্বজনদের।

কনসালট্যান্ট আলী হাসান ফরিদ বলেন, হাসপাতালে নানা সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা শিশুদের জন্য বছরজুড়ে কৃত্রিম অক্সিজেনের দরকার হয়। এতে বছরে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার অক্সিজেন লাগে। সরকারের কাছ থেকে সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা পাওয়া যায়। হাসপাতালে পড়ে থাকা তিন বিঘার মতো জমিতে কলা চাষ করা হয়। কলা বিক্রি করে গত বছর আশি হাজার টাকার অক্সিজেন কেনা হয়েছে। এবছরও তাই করতে হবে। এছাড়া হাসপাতালে রাতের নিরাপত্তার জন্য লাইট ও অন্যান্য জিনিসপত্র কলা বিক্রির টাকা দিয়েই কিনতে হয়। এছাড়া ওষুধ, অক্সিজেন এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বেতন ভাতা দিতে হয় মানুষের অনুদানের টাকায়। জনবল ও অন্যান্য সহযোগিতার জন্য সিভিল সার্জন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখায় অনেকবার আবেদন জানিয়েছি, কিন্তু কাজ হয়নি।

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ বলেন, হাসপাতালটিতে সাধারণত রোগী থাকে ৬০ থেকে ৭০ জন। আর ছোট বাচ্চাগুলোর সবারই অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। আমাদের শিশু হাসপাতালে সরকার থেকে যে পরিমাণ অক্সিজেন সরবরাহ করা হয় তা যথার্থ না। ২৫ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে জনবলের যে সংকট সে বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রতি মাসেই আমরা চিঠি পাঠাচ্ছি। বড় কোনো নিয়োগ না হলে হয়ত ডাক্তারের সংকট সমাধান করা যাবে না। হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় ডাক্তার সংকট ও সরঞ্জামাদি সংকটের সমাধান করার দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।

ইএইচ

Link copied!