ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

কৃষি জমি থেকে মাটি লুট, অভিযানের আগাম খবর পায় ‘লোকেশন পার্টি’

আশিকুর রহমান হৃদয়, শরীয়তপুর

আশিকুর রহমান হৃদয়, শরীয়তপুর

মার্চ ২৫, ২০২৫, ০৪:৪১ পিএম

কৃষি জমি থেকে মাটি লুট, অভিযানের আগাম খবর পায় ‘লোকেশন পার্টি’

শুকনো মৌসুমে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার ফসলি জমির মাটি অবৈধভাবে কেটে বিক্রির মহোৎসব চলছে, ফলে দিন দিন কমে যাচ্ছে ফসলি জমির পরিমাণ। এই বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে জাতীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন।

এ কারণে অবৈধভাবে মাটি বিক্রি বন্ধে অভিযান চালাচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। কিন্তু অভিযানের বিষয়টি আগেই টের পেয়ে মাটিখেকোরা পালিয়ে যায়। অবৈধভাবে কৃষি জমির মাটি বিক্রি বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানকালে মাঝে মাঝে এ কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের পাওয়া গেলেও, মূল মাটিখেকোরা থাকে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। এছাড়াও অভিযানের সংবাদ আগে পেয়েই একাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা পালিয়ে যায়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত চলে যাওয়ার পরেই শুরু হয় মাটিখেকোদের মাটি-বালু কাটার কর্মযজ্ঞ বা মহোৎসব।

অভিযানের আগাম খবর কিভাবে পায় মাটি বিক্রির সাথে জড়িতরা, এর উত্তর খুঁজতে অনুসন্ধানে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মচারীদের মাসোহারার মাধ্যমে নিয়মিত অভিযানের খোঁজ খবর নেয় এ-সব কাজে জড়িতরা। এছাড়া অবৈধ মাটি ব্যবসায়ী ও প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মচারী মিলে হোয়াটসঅ্যাপে ‘লোকেশন পার্টি’ নামে একটি গ্রুপ তৈরি করেন। এই গ্রুপের সদস্যদের কাজ মূলত ইউএনও অথবা এসিল্যান্ড কখন কোথায় অভিযানে যাবে, সেগুলো তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। এই পার্টিতে রয়েছেন উপজেলা প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মচারী, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও মাটি বিক্রির সাথে জড়িতরা। এর কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত বারবার অভিযানে গিয়ে জড়িতদের ধরতে পারে না।

সোমবার রাতে সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠে অন্তত ৪টি স্থানে অবাধে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে নিচ্ছে প্রভাবশালীরা। এসব মাটি বিভিন্ন ট্রাকের মাধ্যমে পরিবহন করে নেয়া হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে। তবে সবচেয়ে বেশি মাটি যাচ্ছে উপজেলার ইটভাটাগুলোতে।

উপজেলার রামভদ্রপুর ইউনিয়নের সূর্য মনি ও চর হোগলা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, স্থানীয় বিএনপি নেতা মালেক মোল্লা, আমজাদ মোল্লা ও ইউপি সদস্য ময়নাল খান ফসলি জমিতে ভেকু দিয়ে মাটি কাটাচ্ছেন। এসব মাটি কেটে কয়েকটি ড্রাম ট্রাকের মাধ্যমে তা বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছেন। ইতিমধ্যে মাটি বিক্রি হওয়া জায়গাটি পুকুরে রূপান্তরিত হয়ে গেছে। এখানে প্রায় দুই মাস ধরে তারা মাটি বিক্রি করছেন। দুএকবার অভিযানও হয়েছিল, তবে তা একেবারে বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।

অভিযোগ রয়েছে রামভদ্রপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ময়নাল খান, বিএনপি নেতা আমজাদ মোল্লা, মালেক মোল্লা, ফয়সাল গাজী সহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ক্ষমতার অপব্যবহার করে কৃষি জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কেটে ইটভাটাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছেন।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, মাটিখেকোরা বেপরোয়া। তারা দিন-রাত অবৈধভাবে চরাঞ্চলের ফসলি জমির মাটি কেটে ট্রাকযোগে বিক্রি করে আসছে। এ নিয়ে প্রশাসন অবৈধ মাটি বিক্রি বন্ধে অভিযান করছে, কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালত আসার আগেই ট্রাক-ভেকু ড্রাইভার, হেলপার ও এসব কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা উধাও হয়ে যায়। ফলে ভ্রাম্যমাণ আদালত কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না। ইউএনও স্যারের উচিত অভিযানে আসার আগেই কাউকে না জানানো এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযানে আসা।

নদী ও কৃষি জমি নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো বলছেন, ভেদরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষি জমি থেকে মাটি বিক্রি হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন একাধিকবার অভিযান চালিয়েছে, তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উপজেলা প্রশাসন অভিযানের আগে থানা পুলিশের জন্য প্রায় এক থেকে দুই ঘণ্টা উপজেলায় অপেক্ষা করেন। এই সুযোগে দু‍‍`একজন অসাধু কর্মচারী কিছু লাভের আশায় অভিযানের আগাম খবর তাদের কাছে পৌঁছে দেয়। এতে অবৈধ মাটি বিক্রির সাথে জড়িত সবাই দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে অভিযানে গিয়ে তাদের কাউকে পাওয়া যায় না। এটি চোর-পুলিশ খেলা ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না। আমরা চাই উপজেলা প্রশাসন গোপনীয় এবং সফল অভিযান পরিচালনা করুক, এতে আমাদের এলাকার কৃষি জমি রক্ষা পাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অনিদ্র্য মন্ডল জানান, অভিযোগ পেয়ে ওইসব জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। জনস্বার্থে অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলন এবং বিক্রি বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

ইএইচ

Link copied!